মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনোই বাংলাদেশের কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না বলে মন্তব করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের বিশেষ কোনো দলকে যুক্তরাষ্ট্র আগেও সমর্থন করেনি, এখনও করে না। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থতি তথা রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের চেয়ে ভালো কোনও সমাধান নেই। গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে রাজনৈতিক ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। মানবাধিকার প্রতিবেদন দু’দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না জানিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের সমন্বয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে। যদি কেউ বাধা সৃষ্টি করে তাহলে স্বচ্ছ নির্বাচন হবে না।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আলাদাভাবে বিভিন্ন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে আমার ভালো লাগে ঠিকই; তবে আমি বেশি উপভোগ করি এই ধরনের সমাবেশ যেখানে নীতি ও মতের পার্থক্য থাকা সত্বেও একাধিক দলের নেতারা একত্রিত হন। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের জন্য গর্বিত। আমরা বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য এই দেশের প্রচেষ্টাকে সবসময় জোরালোভাবে সমর্থন করে আসছি, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের একটি মৌলিক উপায় হলো তাদেরকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। জনগণকে তাদের মত ও ইচ্ছা অন্যদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য অবাধে নিজেদের ভোট নিজেরা দেয়ার ক্ষমতার চেয়ে ভালো উপায় আর কী হতে পারে? আমি যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা একটি জটিল কাজ। কিন্তু সমাজের প্রতিটি অংশের (কল্যাণের) জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সরকার, গণমাধ্যম থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নাগরিকসমাজ থেকে রাজনৈতিক দল, সবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার প্রয়োজন। যদি তাদের কেউ একজন নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় কিংবা তাদের কেউ যদি অন্যকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়, তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
উপস্থিত সবার উদ্দেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আপনারা বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের নেতা এবং তৃণমূল কর্মীদের উৎসাহিত করবেন; যাতে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র গড়ে তুলতে ও শক্তিশালী করতে এই প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগায়।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন বর্জনের সংস্কৃতি থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বেরিয়ে আসতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না করলে বর্তমান সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন ও সুশাসন প্রশ্নে সব দল একমত না হতে পারলে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সব রাজনৈতিক দল সুষ্ঠু নিবাচনের প্রক্রিয়া তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে। সব দলকেই এর দায়ভার নিতে হবে।
রাজনৈতিক ই-লার্নিং প্লাটফর্ম প্রকল্প পরিচালনা করবে ইউএস এইড ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন