বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য রাষ্ট্রকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে

হাইকোর্টের মন্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য রাষ্ট্রকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ডের বক্তব্য প্রত্যাহার করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
গতকাল রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এর আগে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)র প্রতিবেদন উপস্থান করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক।

হাইকোর্ট বলেন, রাষ্ট্রদূত কিভাবে বললেন বাংলাদেশীদের অর্থ জমার বিষয়ে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি তা আমাদের বোধগম্য নয়। সরকার এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তাতে প্রমাণিত যে, রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সাংঘর্ষিক।

প্রতিবেদন উপস্থাপন করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সুইস রাষ্ট্রদূত যে বলেছেন, তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশীদের অর্থ জমা রাখার বিষয়ে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি। তার এ বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। তার আরও ভেবে চিন্তে কথা বলা উচিৎ ছিল। এসময় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি কেন এ ধরণের বক্তব্য দিলেন তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া উচিৎ।
আদালত তখন বলেন, আপনারা যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তা দেখে সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যর সত্যাতা পাইনি। আপনাদের (দুদক ও সরকারপক্ষ) বক্তব্য জাতিকে বিব্রতকর অবস্থা থেকে মুক্ত করবে। পরে আদালত সরকার ও দুদককে হলফনামা আকারে তাদের বক্তব্য দাখিল করতে বলেন। এ বিষয়ে আদেশের তারিখ ধার্য করেন আগামী রোববার।

এর আগে গতকাল সকালে বিএফআইউ’র প্রতিবেদন হাইকোর্টে আসে। সেখানে জানানো হয়, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থ জমা সংক্রান্ত তথ্য বিভিন্ন সময়ে দেশটির আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এফআইইউয়ের কাছে চাওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ গত ১৭ জুন এফআইউয়ের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছিল বিএফআইইউ। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসীকাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ বিদেশী এফআইইউদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে। তবে বিশ্বব্যাপি এসব তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হলো এগমন্ড সিকিউর ওয়েব (ইএসডব্লিউ)। ২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউ’র সদস্য হওয়ার পর চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বাংলাদেশ। ইএসডব্লিউ’র মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানায় সুইজারল্যান্ড। তবে একজনের তথ্য দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইস ব্যাংক চলতি বছরের ১৬ জুন বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরদিন এগমন্ড সিকিউর ওয়েবের (ইএসডব্লিউ) মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশী ব্যাংক ও ব্যক্তির জমানো অর্থের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের জন্য সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে অনুরোধ করা হয়। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পায়নি বাংলাদেশ। এতে আরও বলা হয়, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশী ব্যক্তিদের অর্থ রাখার বিষয়ে তথ্য জানাতে সর্বশেষ গত ১৭ জুনও চিঠি দিয়েছিল বিএফআইইউ।

এর আগে গত ১১ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা নিয়ে নির্দিষ্ট করে দেশটির সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার কোনো তথ্য কেন চাওয়া হয়নি-এর ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। আগের দিন ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশীদের টাকার বিষয়ে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি বলে জানান ঢাকায় নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন