শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ওপেনিংয়ে সাকিব-মুশফিক!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ ক্রিকেটে উদ্বোধনী জুটি নিয়ে ভোগান্তি অনেক দিনের। টি-টোয়েন্টিতে সেটি আরো প্রকাশিত মোটা দাগে। ক্ষুদ্র ফরম্যাটের ক্রিকেট থেকে তামিম ইকবালের হঠাৎ অবসরে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড়। সামনেই এশিয়া কাপ আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় আসর। উদ্বোধনী জুটি নিয়ে ক্রমাগত এই ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ এশিয়া কাপের জন্য আপতকালীন ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছে। মিডল অর্ডার থেকে অভিজ্ঞ কোনো ব্যাটসম্যানকে কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে টুকটাক ওপেনিংয়ের অভিজ্ঞতা আছে, এমন কাউকে ইনিংসের শুরুতে তুলে আনা হবে বলে জানালেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ।
সদ্য সমাপ্ত জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশের স্কোয়াডে ওপেন করার মতো ব্যাটসম্যান রাখা হয়েছিল ৫ জন। তাতে একাদশের ভারসাম্য রক্ষায় হিমশিম খায় দল। নুরুল হাসান সোহান চোট পাওয়ার পর শেষ টি-টোয়েন্টির জন্য স্কোয়াডের বাইরে থেকে আনা হয় মাহমুদউল্লাহকে। সামনে এশিয়া কাপের স্কোয়াডে আবার ভিন্ন চিত্র। ১৭ জনের দলে স্বীকৃত ওপেনার স্রেফ দুই জন। তাদের কারও জায়গা পাকা নয় দলে। তাদের একজন, এনামুল হক মাত্র কদিন আগে দলে ফিরেছেন দীর্ঘদিন পর। আরেকজন পারভেজন হোসেন ইমন, জিম্বাবুয়েতে শেষ টি-টোয়েন্টিতে দিয়ে যে তরুণের কেবল অভিষেক হলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
এই বছর ৮টি টি-টোয়েন্টি খেলে ৫টি ভিন্ন উদ্বোধনী জুটি ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ। লাভ হয়নি খুব একটা। ওপেনারদের মধ্যে কেবল লিটন দাসও একটু রান করছিলেন। চোটের কারণে তিনি ছিটকে গেছেন এশিয়া কাপ থেকে। দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মিডল অর্ডার থকে কাউকে ওপেনিংয়ে তুলে আনার চিন্তা আছে তাদের। গতকাল বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে খালেদ মাহমুদ শোনালেন পরিকল্পনার আরেকটু বিস্তারিত, ‘আমাদের ওপেনাররা কেউ ভালো করছে না। এটা মাথায় নিতে হবে। জিম্বাবুয়েতে আমরা কয়েকজনকে দেখেছি, ভালো করেনি। তামিম ইকবালের না থাকাটা একটা ধাক্কা আমাদের জন্য। আমাদের মেক-শিফট করতে হবে। বিভিন্ন উইকেটের পরিকল্পনা করে হয়তো আমরা মেক-শিফট করব। কে হবে বা কে করবে না, এটা এখনই বলছি না। তবে আমরা অনেক চিন্তা করেছি। অভিজ্ঞদের মধ্যে থেকে খুঁজে বের করতে চাই, যারা টি-টোয়েন্টি অনেক খেলেছে। কিংবা যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওপেন করেছে। তাদেরকে আমরা চিন্তা করতে পারি, কারও ব্যাটিং পজিশন বদলে দিয়ে। এশিয়া কাপে আমরা করতে পারি এসব।’
সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য বিকল্প ওপেনার কারা হতে পারেন, সেটির একটি ধারণাও দিলেন টিম ডিরেক্টর। তাদের ভাবনায় আছেন বেশ কজনই, ‘স্বীকৃত ওপেনার এখানে আছে বিজয় (এনামুল) ও পারভেজ ইমন। তবে বাকি অনেকেই কিন্তু লোকাল ক্রিকেটে ওপেন করেছে। আমরা ওভাবেই ভাবছি। মুশফিক হতে পারে, সাকিবও হতে পারে। মিরাজ হতে পারে, শেখ মেহেদিও ওপেন করেছে। সুতরাং অনেকগুলো অপশন আছে আমাদের হাতে।’ ৩০ আগস্ট আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে চমক। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ করতে চায় এই পরীক্ষা নিরীক্ষা, ‘অভিজ্ঞদের মধ্যে থেকে খুঁজে বের করতে চাই, যারা টি-টোয়েন্টি অনেক খেলেছে। কিংবা যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওপেন করেছে। তাদেরকে আমরা চিন্তা করতে পারি, কারও ব্যাটিং পজিশন বদলে দিয়ে। এশিয়া কাপে আমরা করতে পারি এসব।’
ওপেনিংয়ে যেমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল, তেমনি মিডল অর্ডারে অনেক বেশি ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। সেখানে সবচেয়ে আলোচিত নাম সম্ভবত মাহমুদউল্লাহ। নেতৃত্ব হারিয়েছেন তিনি, প্রশ্ন উঠছে দলে তার জায়গা নিয়েও। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্ব থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে তার গড় ১৭.৪১, স্ট্রাইক রেট কবল ১০০.৪৮।
মাহমুদউল্লাহকে দলে রাখার ক্ষেত্রে নির্বাচকরা বলেছিলেন তার অভিজ্ঞতার কথা। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি খেলা (১১৯ ম্যাচ) ক্রিকেটারকে নিয়ে একই কথা বললেন টিম ডিরেক্টরও। পাশাপাশি তিনি জানিয়ে রাখলেন, যে কোনো পজিশনের জন্য প্রস্তুত রাখা হবে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে, ‘আমাদের হাতে কিন্তু এত ক্রিকেটার নেই। চাইলেও হুট করে একটা দল বদলানো যাবে না। অনেক কঠিন। এরপর চোটের একটা শঙ্কা আমাদের আছেই। বেশ কজন ইনজুরিতে আছে। সেটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গা তো থাকবেই। এই সংস্করণে অনেক অভিজ্ঞ সে, ১২০টির মতো ম্যাচ খেলেছে। পজিশন আমি নির্দিষ্ট করে দিচ্ছি না। রিয়াদকে হয়তো ওপরে ব্যাট করতে হতে পারে, সাত-আটেও করতে হতে পারে।’
টি-টোয়েন্টিতে আফিফ হোসেনের ব্যাটিং পজিশন আরও উপরে হওয়া উচিত কিনা, এই নিয়ে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে অনেকবারই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। মুশফিক দলে না থাকলে আফিফ খেলেন চার-পাঁচে। মুশফিক থাকলে আবার তাকে নিচে নামতে হয়। মুশফিক থাকলেও এশিয়া কাপে তেমনটা আর হচ্ছে না। মিডল অর্ডারে চার-পাঁচ নম্বর পজিশনেই থিতু করা হবে আফিফকে। খালেদ মাহমুদ সুজন পরিষ্কার জানিয়ে দেন, আফিফকে নির্দিষ্ট জায়গায় রেখেই এগুবেন তারা, ‘আমরা সেখানেই (চার) ওকে (আফিফ) করব। আমরা যেটা চাই নির্দিষ্ট ভূমিকাতেই আফিফকে আমরা চিন্তা করছি। হি ইজ আওয়ার ডায়নামো। আত্মবিশ্বাসী একটা ছেলে, গত দুটো ওয়ানডেতেও ভাল খেলেছে। সবচেয়ে বড় কথা সে আগ্রাসী। যেটা আমরা চাই। আফিফকে আমরা ওই পজিশনেই (চার-পাঁচ) খেলাব। সে আমাদের আগামী। খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার তৈরি হচ্ছে। অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব তাকে সেই সুযোগটা করে দেওয়া।’
আগামী ২৭ আগস্ট শুরু এশিয়া কাপ। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ৩০ আগস্ট, আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন