রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারত না চীন? কূটনৈতিক চাপে শ্রীলংকা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২২, ৬:৪০ পিএম

ভারতের প্রচণ্ড আপত্তির পরও শ্রীলংকার সরকার চীনের একটি গবেষণা জাহাজকে হাম্বানটোটা বন্দরে নোঙর করতে দিয়েছে। বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউয়ান ওয়াং ফাইভ নামের জাহাজটিকে বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে এই শর্তে যে এটি শ্রীলঙ্কার জলসীমায় কোন গবেষণা চালাবে না।

খবরে বলা হয়েছে, ভারত এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিল যে চীনা জাহাজ থেকে ভারতীয় কার্যকলাপের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানো হবে। শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজটিকে ২২ অগাস্ট পর্যন্ত চীন-পরিচালিত ঐ বন্দরে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। বিদেশি নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইউয়ান ওয়াং ফাইভকে চীনের সর্বাধুনিক স্পেস-ট্র্যাকিং জাহাজগুলির একটি হিসাবে বর্ণনা করা হয়।

এই জাহাজ থেকে স্যাটেলাইট, রকেট এবং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। ভারতের বেশ ক'টি সংবাদমাধ্যমের খবরে জাহাজটিকে "দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য গুপ্তচর জাহাজ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। শিপিং অ্যানালিটিক্স ওয়েবসাইটগুলিতে বলা হচ্ছে, এটি একটি গবেষণা এবং জরিপ কাজ চালানোর জাহাজ। ভারতের এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার পথে চীনা জাহাজের ট্র্যাকিং সিস্টেমগুলি "ভারতীয় স্থাপনাগুলির ওপর নজরদারি চালাতে পারে সেই আশঙ্কা নিয়ে" দিল্লির সরকার উদ্বিগ্ন।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চীনা জাহাজের সফরের বিরুদ্ধে দিল্লির সরকার শ্রীলঙ্কার কাছে মৌখিক প্রতিবাদ জানিয়েছিল। চলতি মাসের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চীনকে জাহাজের বন্দরে হাজির হওয়ার সময় পিছিয়ে দিতে বলেছিল এই বলে যে এবিষয়ে "আরো আলোচনা" হওয়া দরকার। ভারতের এই পদক্ষেপের পর চীন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, "তথাকথিত 'নিরাপত্তা উদ্বেগ'কে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে শ্রীলঙ্কার ওপর কোন কোন দেশের চাপ দেয়ার চেষ্টা পুরোপুরিভাবে অযৌক্তিক।"

তবে চীনা বিবৃতিতে কোনও নির্দিষ্ট দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি। পরে কলম্বো সরকার ঘোষণা করে যে জাহাজটিকে হাম্বানটোটার বন্দরে নোঙর করার অনুমতি দেয়া হবে। এ ঘটনায় শ্রীলঙ্কার ওপর চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মধ্যে ভারতের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। 'বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ'-এর অংশ হিসেবে চীন শ্রীলংকাকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। তবে, এসব অর্থ যে শ্রীলঙ্কার জন্য সুফল বয়ে এনেছে তা বলা যাবে না।

যেমন, হাম্বানটোটা বন্দরের নির্মাণ ব্যয়ের ঋণ মেটাতে শ্রীলংকা অসমর্থ হওয়ার পর চায়না মার্চেন্টস পোর্ট হোল্ডিংস ২০১৭ সালে হাম্বানটোটা বন্দরের বেশিরভাগ শেয়ার কিনে বন্দরটির ৯৯-বছরের ইজারা লাভ করে। বিবিসির একজন সংবাদদাতা বলছেন, ভারত এবং চীন - এই দুটি দেশের মধ্য থেকে কোন একটিকে বেছে নেয়ার প্রশ্নে শ্রীলংকাকে প্রতিবার কূটনৈতিক চাপের মধ্যে পড়তে হয়। এই জাহাজ নিয়েও এবার তার প্রতিফলন দেখা গেল। সূত্র: বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন