১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভারত ভাগ পরবর্তী ১৯৫২ সালে বাঙালির ভাষা আন্দোলন ছিল স্বাধীনতার সূতিকাগার। সেখান থেকে ১৯৫৪ সালের যুক্ত ফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মতো প্রতিটি পদক্ষেপ যার লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা এবং এসবের সবগুলোতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ছিল লক্ষনীয় এবং প্রশ্নাতীত। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মূর্ত প্রতীক ছিলেন বঙ্গবন্ধু, তাঁর পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন মানুষের কল্যাণে। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে ছাত্র থাকাকালীন অবস্থায় বাংলাভাষাকে মায়ের ভাষা হিসেবে রক্ষার জন্য কারাবরণ করেন তিনি। তিনি কখনো সত্যের লড়াইয়ে পিছপা হননি বরং স্বচ্ছতা, সাম্য এবং আর্থ-রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম এবং নেতৃত্ব তরুণ বয়স থেকেই সর্বজনবিদিত ও প্রশংসিত।
শেখ মুজিবুর রহমানের চিন্তা-চেতনা এবং কর্মকাণ্ডে ছিল শোষিত আর নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তি। জাতির সমস্ত ক্রান্তিলগ্নে তিনি এসে দাঁড়িয়েছেন জনতার কাতারে, কখনো বন্ধু কিংবা কখনো অভিভাবকের মতো। ১৯৭১ এর আগে বাঙালি জাতি অনেকবার স্বপ্ন দেখেছে স্বায়ত্ত্বশাসনের কিংবা স্বাধীনতার। স্বাধিকার কিংবা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের অনেক মহান নেতা অবদান রেখেছেন, জাতি তাঁদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে। কিন্তু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, স্বাধীন বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান নিশ্চিত করা। একটি শিক্ষিত জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা ছিল, দর্শন ছিল। যার নেতৃত্বে একটা স্বাধীন দেশের জন্ম হল, বাঙালি জাতি একটি নিজস্ব মানচিত্র পেল, তিনি জাতির উন্নয়নের অনন্য নিয়ামক শিক্ষা-গবেষণা নিয়ে কী ভাবতেন? আমাদের জানা দরকার, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে দেখতে চেয়েছিলেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য তিনি কোন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চিন্তা করেছিলেন? লব্ধ শিক্ষাকে উদ্ভাবনী কাজে ব্যবহারে তাঁর কী উদ্যোগ ছিল? বিষয়গুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে যেমনটা ইতিহাস পর্যালোচনা করতে হবে, তেমনি তাঁর লেখনি এবং বক্তব্যসমূহকে আমলে নিতে হবে।
সামগ্রিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর দর্শনে ছিল সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আদর্শ মানবসম্পদ সৃষ্টি। একারণে তিনি সবার জন্য সমান শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে বিশ্বাস করতেন এবং শিক্ষাকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নে বিশেষ জোর দিতে দেখা গেছে বঙ্গবন্ধুকে। শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সরকার সে সময়ে ৩৬,১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। ১৯৭৩ সালের জানুয়ারিতে নেয়া পদক্ষেপে তিনি নারী শিক্ষার উন্নয়নে মেয়েদের জন্য অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু করেন।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ের নথি ও প্রকাশনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৭২ এবং ১৯৭৩ সালের মার্চ মাসে প্রদত্ত ভাষণে তিনি শিক্ষা নিয়ে তাঁর ভাবনা প্রকাশ করেছেন। ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে চট্টগ্রামে শিক্ষক ও লেখকদের একটি সমাবেশে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি অনুশোচনা করেন পাকিস্তান আমলের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে, যার মধ্যে মানুষ তৈরির কোনো নির্দেশনা ছিল না। পাকিস্তান আমলের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল মূলত আমলা তৈরির শিক্ষা ব্যবস্থা, যা মানবসম্পদ উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন যে, পাকিস্তানি শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূর করা যাবে না। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন গ্রামীণ মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে প্রত্যেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে গ্রামীণ এলাকায় কিছু দিন কাটাতে, যাতে গণমানুষের প্রয়োজন এবং আকাক্সক্ষাকে উপজীব্য করে গবেষণা ও উদ্ভাবনের উদ্যোগ নেয়া যায়। তিনি সদ্য স্বাধীন দেশের শাসনভার গ্রহণের পর ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করেন। সংবিধানে প্রণীত অধিকারকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে একটি যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করার কথা বলেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যেটি দেশের জন্য টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সমাজতন্ত্র বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের ২০ মার্চ বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রথম সমাবর্তনে শিক্ষার প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির বিশদ ব্যাখ্যা করেন। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের শত বছর এবং পাকিস্তানি শাসনের ২৫ বছরের মধ্যে চলতে থাকা শিক্ষা ব্যবস্থা শুধু কেরানি তৈরি করতে সহায়ক বলে তিনি মনে করেন। তাই, তিনি এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছিলেন, যা আদর্শ নাগরিক সৃষ্টির মাধ্যমে সোনার বাংলা তৈরিতে সহায়ক হবে। তিনি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এবং সমাজতন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু সবসময়ই বৈদেশিক নির্ভরতাকে কমিয়ে স্বনির্ভর অর্থনীতি গঠনে সকলকে উৎসাহ যোগাতেন। তিনি বৈদেশিক নির্ভরতার বিরুদ্ধে সতর্ক ছিলেন এবং এটিকে টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেন। এ জন্য তিনি অন্য দেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন ও উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। বঙ্গবন্ধু সবসময়ই একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন এবং গবেষণামনস্ক দক্ষ জনগোষ্ঠী গঠনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। লব্ধ জ্ঞানকে উদ্ভাবনে ব্যবহারের জন্য বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন এবং এর ফল হিসেবে ১৯৭৩ সালে আইন পাশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা পায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাপী মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে। ১৯৭৪ সালে বিজ্ঞানীরা এদেশে উচ্চফলনশীল গম উৎপাদনে সফল হন। পাটকে সম্ভাবনাময় কৃষি উৎপাদ হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে দেশে এর উৎপাদনে বিপ্লব এনেছিলেন তিনি এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতিতে পাট রফতানিলব্ধ আয় বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। পাট পরিচিত হয়ে উঠলো ‘সোনালী আঁশ’ হিসেবে। দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে নতুন নতুন উদ্ভাবনে বঙ্গবন্ধু সব সময় গুরুত্বারোপ করতেন। পাট ব্যবহার করে নানামুখী শিল্প সৃষ্টিতে তিনি প্রেরণা জুগিয়েছেন সবসময়। জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে যার ফল আমরা পেয়েছি।
শিক্ষা ও গবেষণায় বৈশ্বিক জ্ঞান লাভের জন্য বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন নানান পদক্ষেপ। পরমাণু গবেষণায় আমাদের দেশের বিজ্ঞানীদের সক্ষমতা বাড়াতে বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী-প্রকৌশলীকে ভারতে পাঠানো হয়েছিল স্বাধীনতা অব্যবহিত সময়ে, যাতে তাঁরা দেশে ফিরে এসে পরমাণু গবেষণায় অবদান রাখতে পারেন। পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের অর্থ, মেধা কাজে লাগিয়ে সেখানে পরমাণু শক্তির ব্যবহারে প্রসার ঘটিয়েছে অথচ আমরা পশ্চাদপদ রয়ে গেছি এ বিষয়টি বঙ্গবন্ধুকে সব সময় পীড়া দিত। একারণে, সদ্য স্বাধীন একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে তিনি ১৯৭৩ সালে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন গঠন করেন। এছাড়া, উন্নত বিশ্বের সাথে শিক্ষা ও গবেষণায় সংযোগ সৃষ্টির জন্য তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে শিক্ষা ও গবেষণা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। এই চুক্তির ফলে এদেশের অনেকেই সেখানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন এবং এখনো রাখছেন।
বঙ্গবন্ধু তাঁর শিক্ষা দর্শনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন প্রতিনিধিত্বমূলক সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী মানুষ তৈরি, উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং সুষম ও টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাতে। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা নিয়ে তাঁর চিন্তাধারাকে শুধু বক্তব্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি তাঁর চিন্তাকে বাস্তবায়নের জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য কুদরত-ই-খুদা কমিশন গঠন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। পুরাতন শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদশে যুগোপযোগী সমাজ গঠনমূলক একটি সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার রূপরেখা প্রণয়নের উদ্দেশ্যে সরকার ১৯৭২ সালে ‘জাতীয় শিক্ষা কমিশন’ গঠন করেন। বিজ্ঞানী কুদরত-ই-খুদা এর প্রধান ছিলেন বলে এটি কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন নামেই অধিক পরিচিত। কমিশনের প্রতিবেদনের সূচনায়, বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে পুনর্বিবেচনা করে বলা হয় যে এই কমিশনের উদ্দেশ্য হলো ‘বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন ত্রুটি এবং ঘাটতি দূর করা’ এবং ‘যুক্তিসঙ্গত জীবনযাত্রার মান’ অর্জনের জন্য মানবসম্পদকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্ষমতা অর্জন করা। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থার চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে সমাজতান্ত্রিক কাঠামোয় সমাজ গঠনের জন্য মানবসম্পদের উন্নয়ন। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত না করে কোনো অর্থপূর্ণ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করা যাবে না।
কমিশনের মূল পর্যবেক্ষণের মধ্যে রয়েছে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়া; মেধাবীদের শিক্ষাদানে আকৃষ্ট করার জন্য শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন নিশ্চিত করা; ইংরেজি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ভাষা শেখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার সকল স্তরে বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম করা; কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপর জোর দেওয়া; শিক্ষাদান ও গবেষণার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নের দিকনির্দেশনা দিতে উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থাকে সক্ষম করা; বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গবেষণার জন্য জাতীয় উন্নয়ন এবং বিল্ডিং সিস্টেম এবং পরিবেশের জন্য প্রয়োগকৃত গবেষণার উপর জোর দেওয়া; সবার জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং শিক্ষাকে একটি বিনিয়োগ হিসাবে স্বীকৃতি দান। কমিশন জাতীয় আয়ের ৫% শিক্ষায় ব্যয় করার পরামর্শ দেয় এবং ধীরে ধীরে তা বাড়িয়ে বছরে ৭% করার পরামর্শ দেয়। বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস ছিল, কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের সুপারিশসমূহ নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতিকে অগ্রগতি ও মুক্তির দিকে নিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু কুদরত-ই- খুদা কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশগুলিকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষাকে মুক্তবুদ্ধির চর্চার কেন্দ্র হিসেবে দেখতে চেয়েছেন এবং সেই চিন্তা থেকেই সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আদেশের মাধ্যমে স্বায়ত্ত্বশাসন দান করেন, যা এখনো বলবত আছে। তিনি বিশ্বাস করতেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ শিক্ষার বাইরে গবেষণা এবং উদ্ভাবনসহ নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে অবদান রাখবেন।
বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বাঙালি জাতি তাদের অভিভাবক বঙ্গবন্ধুকে হারায়, সাথে অন্ধকারে হারিয়ে যায় তাঁর স্বপ্ন, সেই সাথে কুদরত-ই-খুদা কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পথ থেকে ছিটকে পড়ে দেশ। বঙ্গবন্ধু নেই, কিন্তু তাঁর চিন্তা, দর্শন, আদর্শ তো রয়ে গেছে। সেগুলোকে রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে নাগরিক হিসেবে দায়িত্ববোধ হিসেবে ধারণ করে আমরা কি পারি না তাঁর স্বপ্নকে আমাদের শিক্ষা, গবেষণায় দিক নির্দেশিকা হিসেবে গ্রহণ করে বাস্তবতায় রূপ দিতে?
লেখক: অধ্যাপক, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
saifullahasm@yahoo.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন