ভারতের গুজরাট দাঙ্গায় বিলকিস বানো গণধর্ষণ ও গণহত্যা মামলায় ১১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। ১৫ আগস্ট গুজরাট সরকারের বিশেষ ক্ষমা নীতির অধীনে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত ওই ১১ জনকেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন রাধেশ্যাম শাহ আগাম মুক্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
শাহের আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাট সরকারকে একটি প্যানেল গঠনের নির্দেশ দেয়।
গোধরা জেলা কালেক্টর সুজল জয়ন্তীভাই মায়াত্রের নেতৃত্বে গঠিত প্যানেল ১১ জনের সকলকে মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করে। গুজরাট সরকার বিশেষ ক্ষমা নীতির অধীনে এ সুপারিশ মঞ্জুর করে।
সূত্র জানায়, জেলের সময় (যা ছিল ১৪ বছর), বয়স, অপরাধের ধরন ইত্যাদি বিবেচনা করে এ মওকুফ মঞ্জুর করা হয়েছে। কিন্তু প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম টুইটারে প্যানেল সদস্যদের সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, প্যানেলে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দুইজন এমএলএ রয়েছেন। তাই প্রবীণ এ রাজনীতিবিদের শঙ্কা দোষীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পক্ষপাতের জায়গা থেকে এসেছে কিনা।
প্রধানমন্ত্রী মোদির স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় নারীদের সম্মানের কথা উল্লেখ করে তিনি টুইট করেন, ‘নারী শক্তি বনাম বিনাশ শক্তি গুজরাটে খেলেছে। গণধর্ষণের জন্য দোষী ১১ জনকে ক্ষমা করে গুজরাটে ‘বিনাশ শক্তি’ জিতেছে’।
প্রসঙ্গত, মোদি সরকার ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উদযাপনের অংশ হিসাবে বিশেষ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার তিনটি ভিন্ন ধাপে বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে - ১৫ আগস্ট ২০২২ (স্বাধীনতার ৭৫ বছর), ২৬ জানুয়ারী ২০২৩ (প্রজাতন্ত্র দিবস) এবং ১৫ আগস্ট ২০২৩।
১০ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগের বিষয়ে সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী, গভর্নর এবং প্রশাসকদের কাছে বিশদ নির্দেশিকার একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে।
নির্দেশিকা অনুসারে, মওকুফের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সের মহিলা এবং ট্রান্সজেন্ডার যারা মোট সাজার মেয়াদের অর্ধেক পূর্ণ করেছেন, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের পুরুষ, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী/অক্ষম আসামিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রত্যায়িত ৭০ শতাংশ অক্ষমতা যারা তাদের মোট সাজার মেয়াদের অর্ধেক সম্পন্ন করেছে ইত্যাদি।
তবে, নির্দেশিকাটিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল, যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা মৃত্যুদন্ডের দন্ডিত ব্যক্তিদের বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ধর্ষণ, মানব পাচার এমন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের মওকুফ দেওয়া হবে না। তবে আইনে রাজ্য সরকারের একক কর্তৃত্ব দেয়া থাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকার বিশেষ গুরুত্ব পায়নি। সূত্র : সিয়াসাত ডেইলি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন