বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অনেক নেতা সরকার বা গোয়েন্দা সংস্থার সাথে গোপনে বৈঠক করছে

আলোচনা সভায় গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

বিএনপির অনেক নেতা সরকার বা গোয়েন্দা সংস্থার সাথে গোপনে বৈঠক করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তবে তা প্রমাণের সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া বিএনপি অংশ নেবে না বলে জানিয়েছিল। পরে ভোটে যাওয়ায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে যে সংশয় তা কাটানোর দায়িত্ব শীর্ষ নেতাদের। এখন আমাদের কে কার সাথে রাতের অন্ধকারে যোগাযোগ করছে, কাকে কি আসনের নিশ্চয়তা দিতেছে, কাকে টাকা দিতেছে এগুলো আমাদের জানা নেই। এই কথা যাচাই করা বা প্রমাণ করারও সুযোগ নেই। আকাশে বাতাশে এই কথাগুলো ভাসতেছে। কিন্তু জনগণের সন্দেহ যেটা রয়েছে এই জায়গাটা পরিস্কার করতে হবে রাজপথের আন্দোলনে।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন: ইভিএম মেশিন ও আজকের গণতন্ত্র শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সমাবেশ বলেছেন, নির্বাচন সামনে রেখে সরকারকে বিদেশিরা চাপে রেখেছে। তাই বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে সরকার কোনো ঝামেলা করছে না। তিনি বলেছেন, ‘এখন তারা (সরকার) দেখাচ্ছে যে বিরোধী দলকে সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছি।...তারা দেখাচ্ছে, আমরা তো গণতান্ত্রিক দল, আমরা কোনো ঝামেলা করি না।’

বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গয়েশ্বর বলেন, প্রধানন্ত্রীর বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা না দেয়ার নির্দেশকে আমাদের দলের অনেক নেতা বিশ্বাস করেছে। তাহলে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রতিবাদে সেখানে তাদের জীবন কেন দিল। তারপরও আমাদের কোন কোন নেতা বললে সরকার বিদেশীদের চাপে আমাদের কর্মসূচিতে ঝামেলা করছে না। দুইটা প্রান কেড়ে নিলো তারপরও বলছে ঝামেলা করছে না।

তিনি বলেন, আমাদের কেউ কেউ বিশ্বাস করবে আগামী নির্বাচনে আমাদেরকে আশ্বস্ত এবং বিশ্বাস তৈরি করার জন্য সরকার আর কোন ঝুট ঝামেলা করবে না। যারা এই কথা বিশ্বাস করে। তারা আওয়ামী লীগকে চিনে না। আওয়ামী লীগ যা করে তার উল্টোটা করে। আওয়ামী লীগ এর কথা শোনা তাদের কথার উত্তর দেয়া আর তাদের স্বীকার করে নেয়া সমান। তাই আমরা কি করবো আমাদের কি করা উচিত সেইটা নিয়ে ভাবতে হবে।

আলোচনা সভার আলোচ্যসূচি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গয়েশ্বর বলেন ,আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। তাই গণতন্ত্রের আলোচনা হয় না। আর আমরা প্রতিশ্রুতি বদ্ধ এই সরকারের অধীনে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবো না। এইটা বারবার আমাদের নেতৃবৃন্দ মুখ থেকে এটা উচ্চারিত হচ্ছে। সকল নেতাকর্মীরা এতে বিশ্বাস করে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। সুতরাং যেখানে এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন নয় সেখানে ইভিএম নিয়ে কোন কথা নয়।

তিনি বলেন, আজকেই পেক্ষাপটে সরকারের পতন এবং এর কৌশল নির্ধারণ তার প্রস্তুতি এবং কি কি কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো যায় সেই আলোচনা হওয়াই উচিৎ। এবং এটি আমাদের জন্য বেশি জরুরি।
গয়েশ্বর আরো বলেন, আমরা ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা বলেছিলাম এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়, খালেদা জিয়া মুক্তি না হলে নির্বাচন নয়। আমরা শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে থাকি নাই। খালেদা জিয়া এখনও মুক্তি হন নাই। এখনও ওই যে পুরানো কথাটা, নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষ তাদের মাঝে কোন সংশয় থাকে বিএনপি এখন বলছে নির্বাচনে যাবে না পরে যদি আবার যায়। এই সংশয়টা কাটিয়ে উঠার দ্বায়িত্ব আমাদের। আমাদের কর্ম, কর্ম পদ্ধতি আন্দোলনের কর্মসূচিতে আমাদের আন্তরিকতা এর মধ্যেই নির্ভর করে জনগণের মাঝে আস্থাটা ফিরিয়ে আনা।

আওয়ামী লীগ আর ভারতের গোপন ডাইরি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাঁস করে দিয়েছেন মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই আমি। তাকে বেকুব বললে আওয়ামী লীগ বলতে পারে। কিন্তু আমি তাকে ধন্যবাদ জানাবো কারণ ভারত - বাংলাদেশের মধ্যে সিক্রেট ডায়েরিটা সে প্রকাশ করে দিয়েছে। ভারত বাংলাদেশের৷ মাঝে একটা লেনদেনের সম্পর্ক আছে এখানে সে রাজসাক্ষী।

গরেশ্বর বলেন, একটা পজিটিভ দিক হলো বিএনপি এখন শুধু মার খায় না তারা মার দেয়। এটা বিএনপির জন্য গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার যুদ্ধে অনেক রক্ত যাবে, অনেক ক্ষয়ক্ষতি হবে। জনগণের জন্য বিএনপিকে এই যুদ্ধে নামতেই হবে।

পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্য তিনি বলেন, পুলিশকে আক্রমণ করা ঠিক নয়। তারা কর্তব্য পালন করছে। যদি তারা বাড়াবাড়ি করে আর জনগণ মনে করে ইউনিফর্মকে সম্মান করবে না তাহলে কিছুই করার নেই।

জাতীয়তাবাদী প্রজম্ম ৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মাঝে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম,সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির কার্য নির্বাহী সদস্য মীর শরাফত আলী সপু প্রমুখ বক্তৃতা করেন।###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন