প্রায় ৩২ বছর ধরে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন এফসিপিএস (মেডিসিন) ডাক্তার আব্দুল করিম লোহানি। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় আটকের পর গতকাল তাকে ভুয়া পরিচয়ে ডাক্তারি করার অপরাধে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইলে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন মৃত বাহাজউদ্দিনের ছেলে, এসএসসি পাস লোহানি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খুরশিদ আলম বলেন, ভুয়া চিকিৎসক গত সোমবার সকালে জোনাইল ইউনিয়নের কুশমাইল গ্রামের লিয়াকত আলীর স্ত্রী মুক্তি খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় তিনি নিজেই রোগীর এনেসথেসিয়াও করেছেন। অপারেশনের ঘণ্টা দুয়েক পরই শিশুটি মারা যায়।
এরপর সিজারের দায়িত্বরত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন রোগীর স্বজনরা। বিষয়টি জানতে পেরে সন্ধ্যার পর হাসপাতালে গিয়ে তাকে আরেকটি সিজারিয়ান অপারেশনরত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে এফসিপিএস (মেডিসিন) এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ১৭তম ব্যাচের এমবিবিএস বলে পরিচয় দেন। তবে হাসপাতালের প্যাড ও লিফলেটে তার নামের সঙ্গে এমবিবিএস (রাজ), বিসিএস (স্বাস্থ্য), পিজিটি (সার্জারী, গাইনী এন্ড অবস) এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন জেনারেল সার্জন পদবী লেখা রয়েছে। পরে তদন্তে তার দেয়া সব তথ্যই ভুয়া প্রমাণিত হয়। প্রকৃতপক্ষে তিনি অন্যের সনদপত্রের ফটোকপি ব্যবহার করে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ওই ভুয়া ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পাশাপাশি হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর আগেও একাধিক অভিযোগে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়া হয় এবং বন্ধও করা হয়। তবে লাইসেন্সভুক্ত হাসপাতাল হওয়ায় কিছু শর্তসাপেক্ষে আবার চালুর অনুমতি দেয়া হয়। এবার ওই হাসপাতালের লাইসেন্সই বাতিল করা হবে।
হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি ভুয়া চিকিৎসক আমার জানা ছিলো না। তিনি চিকিৎসক হিসাবে সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন বলেই তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছিলাম।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, চিকিৎসক না হয়েও ভুয়া পরিচয়ে রোগীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগে তার নামে মামলা হয়েছে এবং তাকে হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন