শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রেকর্ড উচ্চতায় জাপানি প্রতিষ্ঠানের মুনাফা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। এ সময়ে আর্থিকের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর করপূর্ব মুনাফা ২৮ লাখ ৩২ হাজার কোটি ইয়েনে (২০ হাজার ৩০০ কোটি ডলার) উন্নীত হয়েছে। এ মুনাফার পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ডলারের বিপরীতে ইয়েনের বিনিময় হারে পতন এবং কভিডজনিত প্রতিবন্ধকতায় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংস্থাগুলোর মুনাফায় উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে এবং চাহিদা পুনরুদ্ধারের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। এতে সংস্থাগুলোর মূলধন ব্যয় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ১০ লাখ ৬১ হাজার কোটি ইয়েনে পৌঁছেছে। এ নিয়ে টানা পঞ্চম প্রান্তিকে মূলধন ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। কভিডজনিত বিপর্যয় কাটিয়ে পুনরুদ্ধার হচ্ছে জাপানের অর্থনীতি। ডলারের বিপরীতে ইয়েনের বিনিময় হার ২৪ বছরের সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। ফলে রফতানির মাধ্যমে আয় বেড়ে যাওয়ায় বড় নির্মাতারা লাভবান হচ্ছে। যদিও প্রতিষ্ঠানগুলোর জ্বালানি, কাঁচামাল ও খাদ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে গিয়েছে। ফলে প্রাকৃতিক সম্পদে পিছিয়ে থাকা দেশটিতে আমদানির পেছনে অনেক বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে। এ সময়ে উৎপাদন ও পরিষেবা উভয় খাতের মুনাফাতেই উল্লম্ফন হয়েছে। দুই খাতের করপূর্ব মুনাফা ১৯৫৪ সালে সর্বশেষ তথ্য পাওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ। উৎপাদন খাতের করপূর্ব মুনাফা বার্ষিক ১১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ১১ লাখ ২৩ হাজার কোটি ইয়েনে উন্নীত হয়েছে। যেখানে উৎপাদন খাতের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা ১৭ লাখ ৯ হাজার কোটি ইয়েনে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। এপ্রিল-জুন সময়ে উৎপাদন খাতের মূলধন ব্যয় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৮৬ হাজার কোটি ইয়েনে পৌঁছেছে। যখন উৎপাদন খাতের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর মূলধন ব্যয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি ইয়েনে অপরিবর্তিত রয়েছে। ৩০ জুন শেষ হওয়া তিন মাসে বিক্রি ৭ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৩৩৬ দশমিক ৯৬ ট্রিলিয়ন ইয়েনে উন্নীত হয়েছে। এসএমবিসি নিক্কো সিকিউরিটিজ ইনকরপোরেটেডের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়োশিমাসা শারুয়ামা বলেন, কাঁচামাল ও জ্বালানি খরচ বাড়লেও প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা কমেনি। বরং আরো বেড়েছে। কারণ সংস্থাগুলো উচ্চ ব্যয় ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া কভিডজনিত বিধিনিষেধের পর অর্থনীতি স্বাভাবিকের দিকে যাওয়ায় অনিশ্চয়তাও দূর হয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো আরো বেশি মূলধন ব্যয় করতে উৎসাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, এপ্রিল-জুন সময়ে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) সম্ভবত বার্ষিক ২ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে। যদিও এর আগে ২ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন বলেন, সা¤প্রতিক ফলাফলে অর্থনীতি মাঝারি পুনরুদ্ধার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। করপোরেট কার্যক্রমে ক্রমবর্ধমান ব্যয় এবং সরবরাহের সীমাবদ্ধতার প্রভাব আমাদের ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ অফিস সর্বশেষ মূলধন ব্যয়ের পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিয়ে আজ সংশোধিত জিডিপির তথ্য প্রকাশ করবে। জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো নগদ অর্থ মজুদের জন্য পরিচিত। মূলধন ব্যয়ের ক্ষেত্রে সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থান অবলম্বন করে। এ বিনিয়োগের পরিমাণ পাঁচ প্রান্তিক ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও এখনো মহামারীর আগে ২০১৯ সালের পর্যায়ে পৌঁছতে পারেনি। মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ রিজার্ভ রেকর্ড ৫১৬ লাখ ৪৮ হাজার কোটি ইয়েনে উন্নীত হয়েছিল। এ নিয়ে প্রথমবারের মতো রিজার্ভের পরিমাণ ৫০০ লাখ কোটি ইয়েন ছাড়িয়েছে। জমানো অর্থের পরিমাণ বাড়ার অর্থ হতে পারে প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আশাবাদী নয়। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো আক্রমণাত্মকভাবে সুদের হার বাড়ানোর কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হওয়া নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষায় ১ কোটি ইয়েন বা তার বেশি মূলধন থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কিয়োডো নিউজ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন