বগুড়ার একটি প্রাইভেট গোডাউনে গত মাসে আনুমানিক ১৪ হাজার বস্তা ডিএপি (ড্যাপ) এবং বিসিআইসির বাফার গোডাউনে ১৮ ট্রাক ভর্তি ভেজাল টিএসপি সার জব্দ করায় সার ব্যবস্থাপনায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বগুড়া সদর, কাহালু, নন্দিগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি সার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে সিলগালা ও জরিমানা আদায় করায় ভয়ে আতঙ্কে ইউরিয়া বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। সার বিপনন ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। ফলে প্রয়োজনে সময় সার পাচ্ছেনা চাষিরা। এদিকে বগুড়া জেলা প্রশাসনের একাধিক সভায় কৃষি বিভাগ ও বিএডিসি এবং বিসিআইসির তরফে বলা হচ্ছে চাহিদা মাফিক সারের মজুদ ও সরবরাহ আছে। সঙ্কট বলতে যা বুঝায় সেটার অস্তিত্ব নেই।
এদিকে গত কয়েকদিনের সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বহুসংখক খুচরা দোকানে ইউরিয়া, ড্যাপ, টিএসপি সারের তীব্র সঙ্কট আছে। কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানালেন, বগুড়ায় প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগকৃত সারের ডিলারদের মধ্যে ৪ জনের একটি সিন্ডিকেট অব্যবসায়ীদের জন্য বরাদ্দ সারের ডিও কিনে নিজেরা সিন্ডিকেট করে মূলত খোলা বাজারে সারের সঙ্কট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে খাদ্যশস্য উৎপাদনে চরম বিঘ্ন ঘটায়।
গত মাসের শুরুতে বগুড়া সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর পাল বগুড়া সদরের একটি সার গোডাউনে অভিযান চালিয়ে সেটা সিলগালা করেন। তবে তিনি সার গোডাউনে অবৈধভাবে মজুদ করা আনুমানিক ১৪ হাজার বস্তা সারের মালিকের নাম জানার পরও তিনি গোডাউনের ম্যানেজার আজিজুল হক সাজুকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরফলে বেঁচে যান অবৈধ সার ব্যবসায়ী ও ডিও চক্রের মূলহোতাকে কৌশলে বাঁচিয়ে দেন বলে
ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করেন। সমরপাল একই সাথে গোডাউনটি সিলগালা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কৃষি অফিসারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের কমিটি করে দেন। এই কমিটি জব্দকৃত সারগুলো নিলামের উদ্যোগ নিলে সারের মালিক হাইকোর্টে রিট করে ২ মাসের জন্য নিলাম স্থগিত করে দেন।
সুত্রে জানা যায়, এই সারের মালিক কনক পারভেজ ছাড়াও আলমগীর, ইমরান হোসেন রিবন, মতি পাইকার প্রমুখ ডিও ব্যবসার মুল হোতা। এই চক্রটি বগুড়া জেলার ১৬৩ জন সার ডিলারের মধ্যে শতাধিক ডিলারের ডিও
কিনে নিয়ে সিন্ডিকেট করে সারের বাজারের দর ওঠা নামার কাজ করে থাকেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাইলে বগুড়া জেলা ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ নিরুত্তর থাকেন। সেক্রেটারি আলমগীর হোসেন ফোনই ধরেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন