সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে আবারও বেড়েছে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। আর কেজিতে প্রায় ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায়। সোনালি মুরগির দামও কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। বাড়তি দামের জন্য কম সরবরাহ ও মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দিচ্ছেন তারা। এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম কিছুটা কমেলেও নতুন সবজির দাম অনেক বেশি। পাশাপাশি বেড়েছে শাকের দাম।
সূত্র মতে, গত আগস্টের শুরু থেকেই অস্থির হয়ে ওঠে ডিম ও মুরগির বাজার। ওই সময় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ২১০ টাকা এবং ডিমের ডজনের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১৬০ টাকায়। পরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানে দাম কিছুটা কমে আসে। তবে আবারও অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে ডিম ও মুরগির মোকামে।
বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৭৫ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগির দাম ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগির জন্য গুনতে হচ্ছে ৫৫০ টাকা। অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি ডজন ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
প্রতিদিনই সকালে রমনা পার্কে হেঁটে টাটকা সবজি কিনে বাসায় ফেরেন অবসরে যাওয়া ব্যাংক কর্মকর্তা হেলালুদ্দিন। গতকাল সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারে সবজি কেনেন তিনি। তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম কমেছে। তবে নতুন সবজির দাম অনেক বেশি। আলুর কেজি আগের মতোই বাড়তি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। আঁটি প্রতি শাকের দাম বেড়েছে ৪/৫ টাকা।
সেগুনবাগিচা মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স কাঁচা বাজারসহ একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, লম্বা ও গোল বেগুনের কেজি ৫০ টাকা। কমেছে শশার দাম। গত সপ্তাহেও শশা ছিল ৭০, তা আজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। জালি কুমড়ার পিস ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ২০ টাকা, কচুর ডাঁটা ৫০ টাকা। আর ক্যাপসিকামের দাম যেন আকাশ চুম্বি। দাম হাঁকানো হচ্ছে কেজি সাড়ে ৫শ’ টাকা। চিচিঙ্গা আগের মতোই ৩৫/৪০ টাকায় বিক্রি হলেও ১০ টাকা বেড়ে ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আগাম বাজারে আসা শীতের সবজি ফুলকপির দাম ৪০ টাকা (৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের)।
পেঁপের দাম কমেছে, কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়, তবে করলা ৫০ টাকা। ঢেড়স, পটল ৩০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা, লাউ ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বরবটি অপরিবর্তিত দাম ৬০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। কমেনি টমেটো, গাজর ও শিমের দাম। এ তিন সবজিই বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। ধনেপাতা ১০০ কেজি দর বলা হলেও ১০০ গ্রাম ১৫ টাকা। মুলা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন পুষ্টি উপকরণে ভরপুর সবুজ ক্যাপসিকামের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কেজি প্রতি দাম হাঁকানো হচ্ছে ৫৫০ টাকা। ১০০ গ্রাম ৭০ টাকা। ২৫০ গ্রাম ১৫০ টাকা। এ ছাড়া বাজারে নতুন সিমের দাম বাড়তি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
জামাল নামে একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, ক্রেতা কম। সকাল ১০টার পর জমে ওঠে শুক্রবারের সবজির বাজার। সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমেছে। কমেছে আলুর দামও। ক্যাপসিকামের আকাশচুম্বি দাম সম্পর্কে বিক্রেতা নূরে আলম বলেন, এই সবজিটা দেশে খুবই কম চাষাবাদ হয়। বেশিরভাগই আমদানিনির্ভর। দামটা তাই ওঠানামা করে। আজ কিনেই এনেছি ৫০০ টাকা কেজি। এর ক্রেতাও কম। বিক্রিও তাই কম।
মহিউদ্দিন নামে আরেক বিক্রেতা জানান, পাট শাকের জোড়া আঁটি ২৫, কলমি শাক ১৫ টাকা, কচু চার আঁটি ৪০ টাকা, মুলা দুই আঁটি ৩০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা আঁটি, লাল শাকের আঁটি ১৫, ডাটা শাকের আঁটি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সকালে টাটকা শাকের ক্রেতা বেশি। সবজি ক্রেতা জুয়েল বলেন, সবজির দাম আর কমলো কই। নতুন সবজিতে দাম বাড়তি। পিছিয়ে নেই লবণ ও চিনির দামও।
তবে কিছু শবিজেতে দাম কমলেও ক্রেতাদের দাবি, এখনও সহনীয় পর্যায়ে আসেনি সবজির দর। তাই ডিম ও ব্রয়লার মুরগির বাজার স্থিতিশীল রাখতে আবারও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন