রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী সামিউল আলমকে ইট-ভাটার মধ্যে নিয়ে ধারালো অস্ত্রে¿র আঘাত ও শরীরের বিভিন্ন অংশে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে কিশোর গ্যাং। ঘটনায় মামলা দায়ের করা প্রধান আসামী মেহেদী পলাশ (২২) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে সামিউল আলমকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে দু-দফায় নির্জন ইট-ভাটায় মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হলে সেদিন রাতেই গোদাগাড়ী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার মা হালিমা বেগম। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার লস্করহাটি এলাকার একটি ক্লাব থেকে পলাশকে গ্রেফতার করা হয়।
সামিউলের পুরো শরীরে মারধরের কারণে রক্ত জমাট বাঁধা, কালশিরা পড়া, পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের আলামত দেখা গেছে। এছাড়াও সামিউলের মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের কারণে অতিরিক্ত ব্যথা হওয়ায় আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে সামিউল ও তার পরিবার।
গত ৮ সেপ্টেম্বর গোদাগাড়ী মডেল থানায় রাত সোয়া ৯টার দিকে ৬ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে মামলা রেকর্ড করেন গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম। আসামীরা হলো উপজেলার লস্করহাটি গ্রামের আনসার আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মেহেদী পলাশ (২২), মহিশালবাড়ী আলীপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে ও গোদাগাড়ী আ.ফ.জি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার শিক্ষক বণিক সমিতির সভাপতি শামসুজ্জোহা বাবুর ছোট ভাই কিশোর গ্যাং লিডার ও মাদক ব্যবসায়ী রবিউল আওয়াল, মাদক ব্যবসায়ী মুক্তি খাতুনের ছেলে শাহরিয়ার জয় (২৪), প্রশাসনের তালিকাভুক্ত মাদক সম্রাট, পৌরসভার গড়ের মাঠের মাদক সম্রাট আব্দুল মালেকের দুই ছেলে জাহিদ হোসেন (১৮) ও তারেক হাসান (২০) এবং লস্করহাটি এলাকার সাগর (২২)।
স্থানীয়রা জানান, গোদাগাড়ী পৌর এলাকাতেই রয়েছে ৫-৬টি কিশোর গ্যাং। এদের মধ্যে আব্দুল আওয়াল ও মেহেদী পলাশের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের রয়েছে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী। আওয়াল, পলাশ, মেহেদী দাপটের সাথে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে। স্থানীয়রা বলছে, কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িত তার ভাই আব্দুল আওয়াল মূলত বাবুর দাপটে এলাকায় এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার সাহস পায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গোদাগাড়ীতে কিশোর গ্যাং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পুলিশ নিরব ভূমিকা থাকায় এরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জামালের বলেন, সামান্য কিছু মারধর হয়েছে তেমন জটিল কিছু নয়।
সামিউলরের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ছেলেকে মধ্যযুগীয় কায়দায় যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে এমন ঘটনা যেন গোদাগাড়ীতে আর না ঘটে।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যহত আছে। ১ নং আসামীকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। বাকিদের ধরেতে তাদের পেছনে সোর্স লাগানো রয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকেই আসামীরা কেউ বাড়ীতে না থাকায় গ্রেফতার করতে কিছুটা সময় লাগছে বলে জানান তিনি ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন