শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

লুহানস্কের অবস্থান ছেড়ে পালাচ্ছে কিয়েভের সেনা

প্রতিরক্ষার বদলে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েছে মিত্র বাহিনী হিমারস সিস্টেমের সার্ভিস সেন্টারগুলো ধ্বংস করেছে রুশ সেনা রাশিয়ার সাথে চিরতরে যোগ দিতে প্রস্তুত খেরসনের জনগণ দোনেৎস্কে ইউক্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী বিশাল ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে দোনেৎস্কের আর্টিওমভস্ক শহরের দক্ষিণের অবস্থান ছেড়ে পালাচ্ছে। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটি ইউক্রেনের বাখমুত নামে পরিচিত। এদিকে, রুশ সেনার নেতৃত্বাধীন মিত্র বাহিনী আর্টিওমভস্কের দিকে আবাসিক ব্লকে এবং স্থানীয় শ্যাম্পেন প্ল্যান্টের আশেপাশে অগ্রসর হচ্ছে বলে গতকাল ডিপিআর প্রধান ডেনিস পুশিলিন বলেছেন।

লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) মিলিশিয়া অফিসার আন্দ্রে মারোচকো গতকাল জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনীয় সৈন্যরা আর্টিওমভস্ক শহরের দক্ষিণে প্রথম সারির অবস্থান ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কারণ হল তারা তাদের যুদ্ধের ক্ষমতা হারিয়েছে এবং বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, আমাদের সৈন্য এবং মিত্র বাহিনী সাফল্য অর্জন করেছে,’ এলপিআর গোয়েন্দা তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি টেলিগ্রামে লিখেছেন।

প্রতিরক্ষার বদলে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েছে মিত্র বাহিনী : ডেনিস পুশিলিন সলোভিয়েভ লাইভ টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, ‘আর্টিওমভস্কের দিকনির্দেশের জন্য, সেখানে মিত্র বাহিনী আর্টিওমভস্কের উপকণ্ঠে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান থেকে একটি নতুন পর্যায়ে চলে গেছে, অর্থাৎ তারা ইতিমধ্যে আবাসিক এলাকায় অগ্রসর হচ্ছে এবং আর্টিওমভস্ক শ্যাম্পেন প্ল্যান্টের আশেপাশেও নির্দিষ্ট অগ্রগতি রয়েছে, এটি একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণা,’ তিনি ।

পুশিলিন আরও বলেন যে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী বেশ কয়েকটি স্থানে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তাদের আক্রমণ প্রতিহত করা হয়েছিল। ‘প্রতিপক্ষের ৯৫ তম ব্রিগেডের দুটি অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়ন দ্বারা কিছু হামলার করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবুও আক্রমণটি প্রতিহত করা হয়েছিল এবং প্রতিপক্ষ যথেষ্ট ক্ষতি স্বীকার করে পিছু হঠেছে,’ তিনি উল্লেখ করেছেন। তার মতে, মিত্র বাহিনীও গোরলোভকায় অবস্থান নিচ্ছে। পুশিলিন যোগ করেছেন যে, উগলেদার দিকে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।

হিমারস সিস্টেমের সার্ভিসসেন্টারগুলো ধ্বংস করেছে রুশ সেনা : রাশিয়ান মহাকাশ বাহিনী জাপোরোজিয়ার ইসকরা প্ল্যান্টের সার্ভিসসেন্টারগুলো ধ্বংস করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত হিমারস মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (এমএলআরএস) রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো। রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল প্রতিনিধি, লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

‘রাশিয়ান এরোস্পেস ফোর্সের একটি উচ্চ-নির্ভুল স্ট্রাইক জাপোরোজিয়া শহরের ইসক্রা প্ল্যান্টের ওয়ার্কশপগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যেটি আমেরিকান হিমারস এমএলআরএস এর জন্য পরিষেবা প্রদান করেছিল,’ তিনি বলেছিলেন। তিনি জানান, দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের ভার্খনেকামেনস্কো, ভায়েমকা, জাইতসেভো, পোলাভকা, চারিভনয়ে অপারেশনাল-কৌশলগত এবং আর্মি এভিয়েশন, ক্ষেপণাস্ত্র সৈন্য এবং আর্টিলারি দ্বারা স্ট্রাইক ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর সাতটি কমান্ড পোস্টে আঘাত করেছে। পাশাপাশি ১৩৪ জেলায় ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ৫২টি আর্টিলারি ইউনিট, বাহিনী এবং সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে।

রাশিয়ার সাথে চিরতরে যোগদিতে প্রস্তুত খেরসনের জনগণ : খেরসন অঞ্চলের জনগণ ওই অঞ্চলে রাশিয়ান সরকারকে চিরতরে রাখার জন্য গণভোটে ভোট দিতে প্রস্তুত, খেরসন অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের উপপ্রধান কিরিল স্ট্রেমাসভ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন। ‘খেরসন অঞ্চলের বাসিন্দারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য বলেছে। তারা একটি গণভোটে ভোট দিতে প্রস্তুত, যদি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকে এবং রাশিয়া চিরকাল এখানে থাকবে বলে নিশ্চয়তা দেয়,’ তিনি বলেন।

এর আগে, ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির জেনারেল কাউন্সিলের সেক্রেটারি আন্দ্রে তুরচাক বলেছিলেন, ৪ নভেম্বর রাশিয়ায় যোগদানের জন্য গণভোট আয়োজন করা উপযুক্ত হবে। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে যেয়ে স্ট্রেমাসভ বলেন যে, কর্তৃপক্ষ খেরসন অঞ্চল এটির জন্য প্রস্তুত হবে। খেরসন অঞ্চলটি ইউক্রেনের দক্ষিণে এবং ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রের সীমান্তে অবস্থিত। মার্চের মাঝামাঝি, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল যে, অঞ্চলটি রাশিয়ান সেনাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এপ্রিলের শেষে এই অঞ্চলে সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন গঠিত হয়। অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ বারবার ঘোষণা করেছে যে, অঞ্চলটি রাশিয়ায় যোগ দিতে চায়।

দোনেৎস্কে ইউক্রেনের হামলায় ১৩ বেসামরিক নাগরিক নিহত : ইউক্রেন থেকে স্বাধীন হওয়া দোনেৎস্কে কিয়েভের সেনাদের হামলায় ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়েছে। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন শহরটির মেয়র আলেক্সি কুলেমজিন। যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের সেনারা শহরের বেসামরিক স্থাপণায় এসব হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুলেমজিন। তবে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি।

দুই হাজার চৌদ্দ সাল থেকে রাশিয়া সমর্থিত কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক। সে কারণে শহরটি বারবার ইউক্রেনীয় বাহিনীর টার্গেট পরিণত হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, শহরের পশ্চিমের একটি গ্রাম থেকে দোনেৎস্কের কুইবিশেভস্কি অংশে নয়টি গোলা ছোঁড়া হয়েছিল। সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে একটি বাসস্টপ, দোকান এবং একটি ব্যাংকে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে স্থানীয় নেতা ডেনিস পুশিলিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। সূত্র : বিবিসি নিউজ, আল-জাজিরা, তাস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
এভাবে যত চলতে পারে চলোক কোন সমস্যা নাই ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৯:০০ এএম says : 0
কোন সমস্যা নাই এভাবে আরো কয়েক বছর চলে ইউন্রেনকে ভাশ দেক
Total Reply(0)
আবুল ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:৫৫ এএম says : 0
এ যুদ্ধে রাশিয়াই জয়ী হবে
Total Reply(0)
আবির ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:৫৭ এএম says : 0
বিশ্ব নেতাদের উচিত তাদের সংঘাত থামানোর ব্যবস্থা করা। নয়তো বিশ্বের মধ্যে আরো সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
Total Reply(0)
আবুল ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:৫৬ এএম says : 0
সংঘাত থামানো দুই দেশেরই উচিত। নয়তো তাদের যুদ্ধের কারণে বিশ্বে অর্থনীতি আরো ভেঙে যাবে। এছাড়া ইউক্রেনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন