নওগাঁর মান্দায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সালিশ বসিয়ে জরিমানা আদায়ের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী গৃহবধূর মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তৎসহ উদ্ধার করা হয়েছে জরিমানার নামে আদায় করা ৪০ হাজার টাকা। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লা (৬৭) ও নলতৈড় গ্রামের অভিযুক্ত বখাটে যুবক হোসেন আলী ওরফে আলতাফ হোসেন (৩০)। ভুক্তভোগী গৃহবধূর মামলায় অজ্ঞাতনামা সহ আরও কয়েকজন মাতবরকে আসামি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেশী যুবক হোসেন আলী কৌশলে আমার ঘরে প্রবেশ করেন। ওই সময় আমার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে বখাটে হোসেন আলী আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় আমার চিৎকারে হোসেন আলীকে স্থানীয়রা আটক করে। গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত বুধবার স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লার বাড়ির খলিয়ানে সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশে বখাটে হোসেন আলীর ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন মাতবরেরা। অভিযুক্ত হোসেন আলীর পরিবার তাৎক্ষনিক ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। পুরো টাকাই পকেটস্থ করেন মেম্বার নাজিম উদ্দিন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিচারের রায়ের টাকা আদায় করতে ওই গৃহবধূ ও অভিযুক্ত হোসেন আলীকে দিনভর মেম্বার নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে আটক করে রাখা হয়। পরে যুবক হোসেন আলীর পরিবার ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করলে তাদের ছেড়ে দেন মাতবরেরা। সালিসের সভাপতি ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত হোসেন আলী ও গৃহবধূর বিচার করা হয়েছে। সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জরিমানার ৬০ হাজার টাকার মধ্যে তাৎক্ষনিক ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন অভিযুক্তের পরিবার। আদায়কৃত পুরো টাকাই সালিসের খরচ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়ে সালিশ ও জরিমানা আদায়ের ঘটনার ভুক্তভোগী গৃহবধূ মামলা করেন। মামলায় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন ও অভিযুক্ত হোসেন আলীকে গ্রেপ্তারসহ জরিমানার ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই গ্রেপ্তারকৃত দুই জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন