শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইউক্রেনে লক্ষ্য অর্জনের পথে রাশিয়া

পুতিনের মাস্টারস্ট্রোক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

নিষেধাজ্ঞার ফলে পশ্চিমারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে : ল্যাভরভ :: রাশিয়ার সাথে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ জেলেনস্কির :; তিনটি এ৭৭৭ এবং একটি হিমারস প্লাটুন ধ্বংস করেছে রুশ সেনা :: জাপোরোজিয়ায় বিদেশী ভাড়াটেসহ ১৫০ সেনা হারিয়েছে কিয়েভ :: ডনবাসে গণভোট আয়োজনের বিরুদ্ধে অবস্থান ইইউ’র :: রাশিয়া, ইউক্রেন বন্দি বিনিময় :: সংলাপের মাধ্যমে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আহবান চীনের
ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্য সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়া প্রথমবারের মতো এ ধরনের পদক্ষেপ নিল। এতে ইউক্রেনের পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে রাশিয়ার অনুক‚লে চলে আসতে পারে। পুতিন বলেছেন, তিনি কোন ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছেন না, ভৌগোলিক অখÐতা রক্ষার জন্য তার দেশ ‘সম্ভাব্য সব উপায়’ ব্যবহার করবে।

পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে ৫,০০০ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কিছু অস্ত্র ইউক্রেনের কাছে এসেছে এবং আরো অস্ত্র আসবে। এজন্য রিজার্ভ সৈন্য সমাবেশ করে আগে থেকেই রাশিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউক্রেনের রাশিয়া যেসব অঞ্চল দখল করেছে তার বেশিরভাগ এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে। এর মধ্যে চারটি অঞ্চলে গণভোটের আয়োজন করেছে রাশিয়া। এসব গণভোটের ফলাফল কি হবে সেটা সহজেই অনুমান করা যায়। ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক সমর বিশেষজ্ঞ মুরাত আসলান বলেন, গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের সেসব অঞ্চলকে রাশিয়া তাদের অংশ করে নেবে। যেমনটা ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার ক্ষেত্রে হয়েছিল। গণভোটের পর রাশিয়া সেসব অঞ্চলকে তারা রাশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করবে। রাশিয়া সেসব অঞ্চল ধরে রাখতে চাইবে এবং সেখানে শক্তি বাড়াবে। এজন্য পুতিন ‘মাতৃভ‚মি’ রক্ষার কথা বলছেন। এর মাধ্যমে রাশিয়া সেসব এলাকায় যে কোন হামলাকে নিজের উপরে হামলা হিসাবে বিবেচনা করবে এবং সর্বশক্তি দিয়ে তার জবাব দিতে পারবে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার লক্ষ্য ছিল তিনটি। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের রুশ ভাষাভাষী অধ্যুষিত ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকায় রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে সেখানে রুশ-ভাষী জনগণকে সুরক্ষা দেয়া। ইউক্রেনে ডি-নাজিফিকেশন বা উগ্র-জাতীয়তাবাদ নির্ম‚ল করা। যেটি মারিউপোল এলাকায় সক্ষম হয়েছে রাশিয়া। এবং ইউক্রেনকে বেসামরিকীকরণ করা।

পুতিনের নতুন পদক্ষেপের ফলে প্রথম দুইটি লক্ষ্য অর্জন করা রাশিয়ার জন্য সহজ হয়ে যাবে। তবে ইউক্রেনকে বেসামরিকীকরণ করার লক্ষ্যে অর্জনে আরও সময় লাগবে। রাশিয়ার সৈন্য সংখ্যা ইউক্রেনের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের কৌশল এবং পশ্চিমাদের সরবরাহ করা অত্যাধুনিক অস্ত্র দু’পক্ষের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে এনেছে। ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক সমরবিদ মুরাত আসলান বলেন, চারটি অঞ্চলে গণভোট করে সেগুলো রাশিয়া নিয়ন্ত্রণে নেবার পর পুতিন হয়তো যুদ্ধবিরতি করতে পারেন। কিন্তু ইউক্রেন সেটি কিছুতেই মানবে না। তারা সেসব অঞ্চল থেকে রাশিয়ার সৈন্যদের বিতাড়িত করার লড়াই করবে। সেক্ষেত্রে লড়াই আরো তীব্র হতে পারে।
সমরবিদদের অনেকে বলছেন, ইউক্রেনে রাশিয়া তাদের সমরশক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেনি। রাশিয়া তাদের বিমান ও নৌবাহিনীর অতি ক্ষুদ্র অংশ ব্যবহার করেছে। কারণ তারা ইউক্রেনকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়নি। যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া দেখেছে যে কিছু পশ্চিমা রাষ্ট্র ইউক্রেনকে ব্যবহার করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অনেকটা সরাসরি যুদ্ধে নেমে গেছে। ফলে দেশকে রক্ষা করতে হলে রাশিয়াকেও আরো প্রস্তুতি নিতে হবে। এজন্য পুতিন রিজার্ভ সৈন্য সমাবেশের ঘোষণা দিতে পারেন। আসন্ন শীতকালে ইউরোপে জ্বালানি এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে। ফলে ইউরোপ এবং আমেরিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে সেটি নিয়েও রাশিয়া চিন্তা করছে। রিজার্ভ সৈন্য সমাবেশ করার পেছনে এটিও অন্যতম কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিষেধাজ্ঞার ফলে পশ্চিমারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে : পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং প্রবর্তিত রুশ-বিরোধী নিষেধাজ্ঞাগুলো পশ্চিমা দেশগুলোর জনসংখ্যার ক্ষতি করেছে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ নিউজউইক ম্যাগাজিনের সাথে একটি সাক্ষাতকারে বলেছেন। ‘পশ্চিমারা রাশিয়াকে পঙ্গু করার ছদ্মবেশে একতরফা বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা আরোপ করছে। তবে, তারা রাশিয়ার অর্থনীতিকে ছিন্নভিন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাছাড়া, নিষেধাজ্ঞাগুলো একটি দ্বি-ধারী অস্ত্র হিসাবে দেখা দিয়েছে: দাম বৃদ্ধি এবং আয় হ্রাস ইউরোপীয় দেশগুলোর অনেকের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। সেইসাথে শক্তির ঘাটতি এবং সামাজিক উত্থানের হুমকি সৃষ্টি হয়েছে,’ ল্যাভরভ বলেছেন।

রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, এখন ‘সভ্যতার নিয়মিত সুবিধা ধনীদের বিশেষাধিকার হয়ে উঠেছে।’ তিনি বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠীর রুশ-বিরোধী নীতির জন্য সাধারণ নাগরিকদেরকে এই মূল্য দিতে হয়।’ তিনি স্মরণ করেন যে, ইউরোপীয় অর্থনীতির পুরো সেক্টর (ধাতুবিদ্যা এবং রাসায়নিক সহ) রাশিয়ান সস্তা জ্বালানি পণ্যগুলোর স্থিতিশীল সরবরাহের কারণে কয়েক দশক ধরে সমৃদ্ধ হয়েছে। ‘এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোকে আমেরিকান কোম্পানিসহ সফল প্রতিযোগিতায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। মনে হচ্ছে এটি আর হবে না, এবং এটি আমাদের পছন্দ নয়। যদি তারা তাদের নিজেদের স্বার্থের ক্ষতির জন্য কাজ করতে চায়, তবে, আমরা তাদের এটি করা থেকে বিরত রাখতে পারি না,’ রাশিয়ান শীর্ষ ক‚টনীতিক বলেছিলেন।

রাশিয়ার সাথে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ জেলেনস্কির : ইউক্রেনে হামলা চালানোয় রাশিয়ার শাস্তি দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভিডিও ভাষণে তিনি এ দাবি জানান। পাশাপাশি, রাশিয়ার সাথে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার বিষয়ে, আপনারা সম্ভবত রাশিয়ার কাছ থেকে আলোচনা সম্পর্কে বিভিন্ন শব্দ শুনেছেন, যেন তারা এর জন্য প্রস্তুত। তারা আলোচনার কথা বলে কিন্তু সামরিক সংহতির ঘোষণা দেয়। তারা আলোচনার কথা বলে কিন্তু ছদ্ম গণভোটের ঘোষণা দেয়।’ এভাবেই কিয়েভ ডনবাস প্রজাতন্ত্র এবং ইউক্রেনের মুক্ত অঞ্চল দ্বারা সংগঠিত গণভোটের নিন্দা করেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে তিনি এমন একটি সমাধানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন যা ইউক্রেনের উপস্থাপিত ‘শান্তি সূত্রের’ বিরোধিতা করবে। ‘যারা নিরপেক্ষতার কথা বলে তাদের মানে অন্য কিছু। তারা কাউকে রক্ষা করার ভান করে, কিন্তু বাস্তবে তারা শুধুমাত্র তাদের স্বার্থ রক্ষা করে,’ তিনি বলেন। রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ বারবার বলেছে যে, মস্কো কিয়েভের সাথে আলোচনা করতে অস্বীকার করে না। যেমন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেনের সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উপযুক্ত নয়, তাই কিয়েভকে আলোচনা ব্যাহত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

তিনটি এ৭৭৭ এবং একটি হিমারস প্লাটুন ধ্বংস করেছে রুশ সেনা : রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ গতকাল বলেছেন যে, ইউক্রেনে একটি বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনাকারী রুশ বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম৭৭৭ হাউইটজার কামানের তিনটি প্লাটুন এবং হিমারস মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেমের একটি প্লাটুন নিশ্চিহ্ন করেছে।

মুখপাত্রের মতে, খারকভ অঞ্চলের গুসিঙ্কা বসতি এলাকায় ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ১৪ তম যান্ত্রিক ব্রিগেডের ইউনিটের জনবল এবং সামরিক সরঞ্জাম, বেলোগোরকায় ইউক্রেনের সশস্ত্র রোসেসের ৪৬ তম এয়ারমোবাইল ব্রিগেড এবং খেরসন অঞ্চলে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ৭২টি আর্টিলারি ইউনিট, জনবল ও সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। খারকভ অঞ্চলের মোনাচিনোভকা এবং জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের পোলতাভকা এবং ওলগোভস্কয়ের বসতি এলাকায় ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর গোলাবারুদ এবং অস্ত্রের চারটি ডিপো ধ্বংস করা হয়েছে।

জাপোরোজিয়ায় বিদেশী ভাড়াটেসহ ১৫০ সেনা হারিয়েছে কিয়েভ : রাশিয়ান অ্যারোস্পেস ফোর্সের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ফলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে জাপোরোজিয়োঅঞ্চলে ১৫০ জনেরও বেশি সামরিক কর্মীকে হারিয়েছে ইউক্রেন। তাদের মধ্যে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর দুটি ইউনিট ও একটি বিদেশী সৈন্যদলে সদস্য রয়েছে। রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাশিয়ান মহাকাশ বাহিনীর উচ্চ-নির্ভুল অস্ত্রগুলো জাপোরোজিয়ে শহরের কাছে ৬৫ তম মোটরচালিত পদাতিক ব্রিগেড, ১৯তম এসকর্ট ব্যাটালিয়ন এবং বিদেশী সৈন্যবাহিনীর ভাড়াটেদের অস্থায়ী মোতায়েন পয়েন্টগুলোকে আঘাত করেছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং ১৫০ সেনা ও ১৯টি সামরিক সরঞ্জাম হারিয়েছে,’ তিনি রিপোর্ট করেছেন।

ডনবাসে গণভোট আয়োজনের বিরুদ্ধে অবস্থান ইইউ’র : ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নিউ ইয়র্কে একটি বৈঠকের পর ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি ঘোষণায় সম্মত হয়েছেন। ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের পর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইইউ পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল এ তথ্য জানিয়েছেন। ‘কাউন্সিল একটি ঘোষণায় সম্মত হয়েছে,’ তিনি বলেন, ইইউ মুক্ত অঞ্চলগুলোতে গণভোটকে ‘ইউক্রেনের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতার আরেকটি স্পষ্ট লঙ্ঘন’ হিসাবে বিবেচনা করে। বোরেলের মতে, রাশিয়ার কর্মকান্ড ইউরোপের পাশাপাশি সাধারণভাবে বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর, লুহানস্ক এবং ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকসের সিভিক চেম্বার (এলপিআর এবং ডিপিআর) রাশিয়ার অংশ হওয়ার বিষয়ে অবিলম্বে গণভোট আয়োজনের উদ্যোগ নিয়ে প্রজাতন্ত্রের প্রধান লিওনিড পাসেচনিক এবং ডেনিস পুশিলিনের কাছে আবেদন করেছিল। পরের দিন, এলপিআর এবং ডিপিআর কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে, ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও ২০ সেপ্টেম্বর, খেরসন এবং জাপোরোজিয়া অঞ্চলের প্রশাসন একই তারিখে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

রাশিয়া, ইউক্রেন বন্দি বিনিময় : রাশিয়া এবং ইউক্রেন বুধবার প্রায় ৩০০জন বন্দী অদলবদল করেছে। তাদের মধ্যে ব্রিটিশ ও মার্কিন নাগরিক ১০ জন বিদেশীও রয়েছেন। তাদের সউদী আরবে নেয়া হয়েছে। সউদী আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক টুইটবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, রাশিয়ার হাতে বন্দী থাকা এই ১০ জনের মুক্তির মধ্যস্থতায় কাজ করেছেন দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

এমন সময়ে এই বন্দীদের মুক্তি দেয়া হলো যখন ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আংশিকভাবে সেনা সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম রাশিয়া এ ধরনের সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে। রয়টার্স জানায়, যে ১০ জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে দুজন যুক্তরাষ্ট্র, ৫জন যুক্তরাজ্য এবং ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো ও সুইডেনের একজন করে নাগরিক রয়েছেন। সউদী আরবের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে তাদের সউদী আরবে আনার পর নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ছাড়া পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের দুজন হলেন অ্যালেক্স ড্রুক ও অ্যান্ডি তাই এনগোক হুইন। দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্য। ইউক্রেন যুদ্ধে দেশটির বাহিনীর সেনাদের সাহায্য করতে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। ব্রিটিশ ওই ৫ নাগরিকও ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে সেখানে গিয়েছিলেন। ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা রবার্ট জেনেরিক জানিয়েছেন, মুক্তি পাওয়া ৫ জনের মধ্যে একজনের নাম এইডেন অ্যাসলি। ডোনেৎস্ক থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর বিচারে তার মৃত্যুদন্ড হয়েছিল। বন্দীদের মুক্তির পর স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। মাসের পর মাস অনিশ্চয়তা ও দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর বন্দী ও তাদের পরিবারের জন্য এটা দারুণ খবর মন্তব্য করেছেন তিনি।

সংলাপের মাধ্যমে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আহবান চীনের : ইউক্রেনে সংলাপের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির আহবান জানিয়েছে চীন। দেশটি বলেছে সব দেশর আঞ্চলিক অখন্ডতাকে সম্মান করতে হবে। স্থানীয় সময় আজ বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে আরও সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার পরপরই চীন এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন নিয়মিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধির আহবান জানাচ্ছি এবং যত শিগগির সম্ভব এমন একটি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে যা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের নিরাপত্তা উদ্বেগকে প্রশমিত করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সর্বদা মনে করি যেসব দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতাকে সম্মান করা উচিত। জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য এবং নীতিগুলো মেনে চলা উচিত। সমস্ত দেশের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগগুলোকে গুরুত্ব সহকারে নেয়া উচিত এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সহায়ক সমস্ত প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা উচিত।’ সূত্র : আল-জাজিরা, তাস, বিবিসি নিউজ, দ্য ইকোনমিস্ট, নিউইয়র্ক টাইমস।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Ikbal Kabir ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩৫ এএম says : 0
বিশ্বে রাশিয়ার পুতিন ইউক্রেনে যে অভিযান চলছে সেই অভিযান সঠিক পথে এগোছে বলে আমি মনে করি
Total Reply(0)
সীমান্ত পেরিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩৫ এএম says : 0
পুতিন তুমি মুসলিম দের পাশে থাকো আল্লাহ তোমাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন