শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

নিউ জার্সিতে মেসি, প্যারিসে নেইমার

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:৫৪ এএম

একটা সময় ছিল যখন লিওনেল মেসি আন্তর্জাতিক গোলের সংখ্যা চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চেয়ে ঢের পিছিয়ে ছিলেন। এরপর লিওনেল স্কালোনি কোচ হয়ে যোগ দিলেন আলবিসেলেস্তেদের ডেরায়। তাতেই যেনো নিমিষেই সবকিছু বদলে গেলো। মেসি এখন গোল পাচ্ছেন প্রায় প্রতি ম্যাচে। গতকাল বাংলাদেশ সময় সকালে নিউজার্সির রেড বুল অ্যারেনায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে জ্যামাইকার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতে আর্জেনটিনা। ফ্লুর কারণে শুরুর একাদশে ছিলেন না মেসি। বিরতির পরে নেমে ৮৬ থেকে ৮৯ মিনিটের মধ্যে করলেন জোড়া গোল। আর তাতে এক সঙ্গে দুটি মাইলফক স্পর্ষ করলেন মেসি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেরা গোলদাতার ৩ নম্বর স্থানটি এখন ক্ষুদে জাদুকরের। একই সঙ্গে দেশের জার্সিতে এটি ছিল তার শততম জয়।
স্ট্রাইকার হুলিয়ান আলভারেজ ম্যাচের ১৩ মিনিটের সময় এগিয়ে নেন আর্জেনটিনাকে। আর ম্যাচের অন্তিম মুহ‚র্তে জোড়া গোল করেন কাপ্তান। তাতে নিশ্চিত হয় আলবিসেলেস্তেদের টানা ৩৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকা। ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক হয়েছিল মেসির। হাঙ্গেরির বিপক্ষে ওই প্রীতি ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যে অবশ্য সরাসরি লাল কার্ড দেখেছিলেন তিনি। আর জ্যামাইকার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল দেশের জার্সিতে মেসির ১৬৪ তম। ম্যাচ শেষে ৩৫ বছর বয়সী তারকা পেলেন শততম জয়ের গৌরব। একই সাথে ম্যাচের প্রথম গোলটি করে ছুঁয়ে ফেললেন মালয়েশিয়ার মোখতার দাহারিকে (৮৯ গোল)। আর শেষ গোলটি ছিল মেসির ৯০ তম। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখন তার চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল ইরানের আলি দাইয়ি (১০৯) ও রোনালদোর (১১৭)।
এই ম্যাচের মাধ্যমে আরেকটি অদ্ভ‚ত রেকর্ড হলো মেসির। এস্তোনিয়া, হুন্ডুরাস ও জ্যামাইকার সঙ্গে শেষ তিন ম্যাচ খেলেছে আর্জেনটিনা। আর এই তিন খেলার মাঝেই গ্যালারি থেকে দর্শক ছুটে এসেছে মেসির কাছে। এদিকে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেনটিনা ম্যাচের পর দিলো আরেক সুসংবাদ। আলবিসেলেস্তেদের বর্তমান রূপকথার প্রধান নায়ক তাদের কোচ স্কালনি। ৪৪ বছর বয়সী এই কোচের সঙ্গে আর্জেনটিনা ফুটবল ফেডারেশন এএফএ ২০২৬ পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেছে। ব্যাপারটি নিশ্চিত করে এএফএ প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিও তাপিয়া বলেন, ‘গর্বের সঙ্গে আমি আপনাদের বলতে চাই আমরা ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে লিওনেল স্কালোনির সঙ্গে চালিয়ে যেতে যাচ্ছি। তার টিম প্রকল্পের উপর আমরা বাজী ধরা অব্যাহত রাখতে চাই।’ সমর্থকদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান স্কালানি বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের প্রতি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ, যারা শেষ দিন পর্যন্ত আমাদের সমর্থন করেছেন। বিশ্বকাপে যাই হোক, আমি শেষ পর্যন্ত আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।’
এদিকে, বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে দারুণ ফুটবল খেললো ব্রাজিল। কাতারে যাওয়ার আগে অন্তত প্রস্তুতিতে কোন ঘাটতি থাকল না নেইমার-ফিরমিনহোদের। গোটা ম্যাচেই দাপট ধরে রেখে সেলেসাওরা তিউনিশিয়ার বিপক্ষে জিতলো ৫-১ ব্যবধানে। তবে গোলবণ্যার এই ম্যাচ ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে বর্ণবাদ ও নেইমারকে করা প্রতিপক্ষের মারাত্মক ট্যাকেল। যাতে হুমকিতে পড়তে পারতো তার বিশ্বকাপ খেলাই!
পরশু রাতে পিএসজির মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল পান রাফিনহা। একবার করে জালের ঠিকানা পান রিচার্লিসন, নেইমার ও পেদ্রো। ফ্লুমেনেসের হয়ে খেলা পেদ্রো ছাড়া বভাকি সেলেসাওরা বিরতির আগেই গোলের দেখা পান। তিউনিসিয়ার হয়ে ব্যবধান কমান মনতাসার তালবি। একপেশে লড়াইয়ে বল দখলে প্রত্যাশিতভাবে প্রাধান্য দেখায় তিতের শিষ্যরা। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১৮টি শটের ১০টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, তিউনিসিয়া কেবল সাতটি শট নিতে পেরেছিল যার দুটি ছিল লক্ষ্যে।
এদিন টটেনহ্যামের রিচার্লিসন ব্রাজিলের দ্বিতীয় গোলটি করার পর মাঠের কোণে যান উদযাপন করতে। এই সময় তাকে লক্ষ্য করে কলা ছুঁড়ে মারা হর গ্যালারি থেকে। তবে উদযাপন করতে থাকায় এ ঘটনা লক্ষ্য করেননি রিচার্লিসন। তার সতীর্থ ফ্রেড কলাটি লাথি মেরে মাঠ থেকে বাইরে ফেলে দেন। রাফিনহার করা তৃতীয় গোল ও নেইমারের পেনাল্টি থেকে করা চতুর্থ গলের সময়ও একই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক বিবৃতিতে দিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ), ‘দ্বিতীয় গোলের পরে রিচার্লিসনের দিকে একটি কলা ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল। সিবিএফ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছে এবং যে কোনো পক্ষপাতমূলক কাÐকে প্রত্যাখ্যান করে।’
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। তিউনিশিয়ার দিলান ব্রন ৪২ মিনিটের সময় নেইমারকে করেন বাজে এক ট্যাকেল। শাস্তিস্বরূপ সরাসরি লাল কার্ড পান তিনি। একটু এদিক সেদিক হলেই নেইমার পরতে পারতেন বড় ইনজুরিতে। কিন্তু ঠিক বিশ্বকাপের আগে একটা প্রীতি ম্যাচে, এতটা আক্রমণাত্বক থাকার যুক্তি অনুসন্ধান করছেন ব্রাজিলের কোচ তিতে, ‘আমরা জানতাম এটা প্রতিযোগিতামূলক হতে যাচ্ছে। সত্যি বলতে কি নেইমারের সঙ্গে যে পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে সেটা আমি কল্পনাও করিনি। একজন খেলোয়াড়কে বিশ্বকাপ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা।’
বিশ্বকাপে গ্রæপ ‘জি’-তে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড ও ক্যামেরুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন