আয়রণ ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ কন্দ ফসল কচু অযতœ ও অবহেলায় এমনিতেই বেড়ে উঠে। আর কচুসহ এর লতি চাষ বর্তমানে বেশ লাভজনক। বিগত কয়েক বছর ধরে কচু চাষের আওতা বেড়েছে। বগুড়া ও জয়পুরহাট অঞ্চলে উৎপাদিত কচুর লতি এখন রাজধানীসহ বড় বড় শহরে যাচ্ছে। এর বাইরে সীমিত পরিমাণে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
কৃষি গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট বক্তব্য এবং কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে আদিকাল থেকেই দেশে কচুর চাষাবাদ চলে আসছে। দেশে বিভিন্ন নামে কচু পাওয়া যায়। এগুলো হলো মুখি বা বই কচু, কাঠকচু বা লতি কচু, মান কচু, ওল কচু। এর মধ্যে লতি কচু বা লতিরাজ কচুর চাষ বগুড়া ও জয়পুরহাট অঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভোক্তা পর্যায়ে দিন দিন খাদ্য হিসাবে লতিরাজ কচুর ব্যবহার বাড়ছে।
কৃষি বিভাগের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জয়পুরহাট অঞ্চলের পাঁচবিবি এলাকায় গত এক দশক ধরে লতিকচুর চাষ হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় মুখে মুখে লতিকচুর নাম ছড়িয়ে গেছে লতিরাজ হিসেবে। এ বিষয়ে বগুড়ার কন্দ ফসল গবেষণা কেন্দ্রের ইনচার্জ এবং সিনিয়র কীটতত্ত¡বিদ জুলফিকার হায়দার প্রধান বলেছেন, কচুর মতোই বা তার চেয়েও বেশি পুষ্টিমান রয়েছে কচুর লতিতে। প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল, আয়রণ, ক্যালসিয়াম ও আঁশে পরিপূর্ণ লতিরাজ কচু। মুখরোচক সবজিও বটে।
তিনি জানান, কচুর লতির চাষ তাই দিন দিন বাড়ছে। প্রচুর ফলন পাওয়ায় চাষিরাও খুশি। এর বাজার মূল্যও কম নয়। লতিরাজ কচুর ফসল প্রতি সপ্তাহে দু’বার করে মাসে আটবার তুলতে হয়। প্রতি সপ্তাহে দু’বার করে কচু গাছ থেকে লতি কাটতেই হবে। যদি কাটা না হয় তাহলে এটি লম্বা হয়ে খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যাবে।
অর্থাৎ রান্না করা হলে সিদ্ধ হওয়ার পরিবর্তে শক্ত থেকে যাবে। একটি কচু গাছ থেকে মাসে আটবার ফলন পাওয়া যায়। সে হিসাবে একটি কচু গাছ থেকে বছরে ৯৬ বার লতির ফলন লাভজনক যে তাতে সন্দেহ নেই। তাছাড়া কচু চাষ এবং ফলন লতি পেতে অন্যান্য সবজির চেয়ে তুলনামূলকভাবে খরচও কম।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এর চাহিদা রয়েছে। লতিরাজ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোজনরসিক বাঙালিদের মধ্যে যারা মধ্যপ্রাচ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ডে বসবাস করেন তাদের জন্য সীমিত আকারে রফতানি হচ্ছে। বিশেষ করে বছরের চাকা ঘুরছে এবং লতিরাজের রফতানিও বাড়ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন