বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রোগীরা কেন বিদেশ যান

পরিকল্পনামন্ত্রীর প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশে চিকিৎসার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও মানসম্মত চিকিৎসকও রয়েছেন। এরপরও রোগীরা বিদেশে ছুটছেন। প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা। এক সময়ে ছিল সরকার ও রাষ্ট্রের ‘গুরুত্বপ‚র্ণ’ ব্যক্তি, মন্ত্রী, এমপি ও রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই নিয়মিত চিকিৎসা নিতে বা শারীরিক পরীক্ষার জন্য বিদেশে যেতেন। অবশ্য এখন দিন বদলেছে। এটাকে একটি গ্রæপ ফ্যাশন বানিয়ে ফেলছে। শুধু মন্ত্রী, এমপি’রাই নয়; এখন সরকারের ছোট ছোট কর্মচারীরা, গ্রামাঞ্চল থেকেও অসংখ্য মানুষ বিদেশে ছুটছেন। সাধারণ অসুখের চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য তাদের পছন্দের তালিকায় থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের মতো দেশ। সম্প্রতি ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে তার এক বন্ধু খোঁজ খবর নেয়ার জন্য ফোন দিলে তিনি ওই বন্ধুকে জানান, বন্ধু ব্যস্ত আছি, সিঙ্গাপুর যাচ্ছি চিকিৎসার জন্য। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এনবিআর’র এই কর্মকর্তার বড় কোন শারীরিক সমস্যাও নেই। তারপরও সাধারণ চিকিৎসার কোন বিষয় থাকলে সে চিকিৎসা দেশেই সম্ভব। কিন্তু শুধুমাত্র ফ্যাশনের জন্যই ওই কর্মকর্তার বিদেশ গমন। অবশ্য ব্যতিক্রমও রয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, দেশের সব রোগের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও অনেকে শখ করে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যান। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩০ জুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় বলেছেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। কথায় কথায় চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছুটে যাওয়া উচিত না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে প্রতিদিনই চিকিৎসার জন্য মানুষের বিদেশমুখী হওয়ার প্রবণতা।
এই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে মেডিকেল অনকোলোজি সোসাইটি ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ঢাকা ক্যান্সার সামিট-২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, দেশে চিকিৎসার সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ও মানসম্মত চিকিৎসক রয়েছেন। এরপরও রোগীরা কেন বিদেশে যান? তিনি বলেন, খুবই কষ্ট লাগে। যখন দেখি হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসার জন্য অন্য দেশে যাচ্ছেন।
এম এ মান্নান বলেন, প্রতিনিয়ত আমাদের রোগীরা চেন্নাই, ব্যাংকক ছুটে যাচ্ছেন। বড়লোকদের অনেক টাকা, তাদের খরচের সামর্থ্য আছে। তারা যেখানে ইচ্ছে যাক। কিন্তু গ্রামাঞ্চল থেকেও অসংখ্য মানুষ বিদেশে ছুটছেন। এক্ষেত্রে যারা একটু নিম্ন শ্রেণির, তারা যাচ্ছেন কলকাতায়।
তিনি বলেন, দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ বিদেশ সফর করেন। তবে, এদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি চিকিৎসার জন্য যান। আমাদের বড় বড় চিকিৎসক আছেন, হাসপাতাল-ইনস্টিটিউট আছে। তারপরও কেন অন্য দেশে যান? এর কোনো একটা কারণ আছে।
বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, অনেককে দেখেছি জমি বিক্রি করে বিদেশ যাচ্ছেন, কেন? এ বিষয়ে আমাদের ভাবতে হয়। আমরা কী করতে পারিনি? আমাদের প্রধানমন্ত্রী কী করতে পারেননি? আমাদের কী নেই? এখানে নিশ্চয়ই কিছু বিষয় আছে। এটা আমাদের দেখা দরকার।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির বলেন, বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সারাবিশ্বের জন্যই চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের জন্যও একই।
তিনি বলেন, ক্যান্সার দ্রæত শনাক্ত খুবই গুরুত্বপ‚র্ণ। যখন ক্যান্সার ছড়িয়ে যায়, তখন চিকিৎসাও কঠিন হয়ে যায়, খরচও বাড়ে। শেষ পর্যায়ে আসায় মৃত্যুর শঙ্কাও বেড়ে যায়। এজন্য আমরা বলি পরীক্ষা-নিরীক্ষাটা খুবই গুরুত্বপ‚র্ণ। দ্রæত রোগ ডায়াগনোসিস না হলে রোগী চিকিৎসার আওতায় আসবে না।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোহাম্মদ আবু সালেহ ১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:১৫ এএম says : 0
ভাবনার বিষয়। তবে আমাদের দেশে চিকিৎসকগণ পরীক্ষা নীরিক্ষার নামে অনেক টেস্ট দেন, আবার টেস্টের কমিশনও নেন, এতে চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। পাশাপাশি রোগীর তুলনায় ডাক্তার কমে থাকায় চিকিৎসকগণ তড়িঘড়ি করে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। এতে করে অনেকাংশে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া লটারিতে টাকা পাওয়ার মতো। আবার কিছু চিকিৎসকবাদে অনেকেই অধিক কমার্শিয়াল, রোগীর পরিবারের উপর বাড়তি খরচ চাপিয়ে দেন। ঔষধ কোম্পানীর লোকদের টিপসটুপস নিয়ে রোগীর মতোই হাসপাতালে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ওদের মন রক্ষা করতেও রোগীর উপর খড়গ। চিকিৎসার সকল দামী যন্ত্রপাতি থাকার পরও রোগীরা বিদেশমুখী। এতে দেশের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এ থেকে উত্তোরনের পথে হচ্ছে চিকিৎসাখাতের সকল অব্যবস্থাপনা দুর করাসহ কর্তাব্যক্তিদের দেশে চিকিৎসা নেয়া। তবেই সাধারণ জনগন দেশীয় চিকিৎসায় আস্থা অর্জন করবে। দেশ বৈদেশিক মুদ্রা হারাবে না।।
Total Reply(0)
m kabir ১ অক্টোবর, ২০২২, ৯:১৫ এএম says : 0
bd doctor does not treat patient human medical manner, they do not follow human treatment procedure, they want to make extra income on extra bill, they give lots of necessary or unnecessary test. after patient died still, they want to make extra money on showing they keep patient ICU nicely, no one can see patient because they hook up cables on past way patient.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন