আজ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রধান ইমরান আহমদ খান নিয়াজির ৭০তম জন্মদিন। বর্তমানে পাকিস্তানে তাকে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তার পাসপোর্টে ২৫ নভেম্বর জন্মদিন উল্লেখ করেছিল। পরে অবশ্য এটি ভুলে হয়েছে বলে জানানো হয়। ইমরান খানের জন্মদিন উপলক্ষে ব্যাপক আয়োজন করেছে তার দল পিটিআই। -ডন, উইকিপিডিয়া
পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড় এবং অধিনায়ক। খেলোয়াড় জীবন শেষে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। তার অধিনায়কত্বে পাকিস্তান ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয় করে। ২০১৮ সালে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল অনাস্থা ভোটে হেরে তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে অপসারিত হন। ইমরান খানের পিতা ও মাতা উভয় দিকেই ছিল উচ্চ বংশ। তার পিতা ইকরামুল্লাহ খান নিয়াজির পরিবার পশতুন জাতিগত এবং নিয়াজি উপজাতির অন্তর্গত। তার পূর্বপুরুষদের মধ্যে একজন হাইবত খান নিয়াজি ১৬ শতকে শের শাহ সুরির একজন নেতৃস্থানীয় জেনারেল ও পাঞ্জাবের গভর্নর ছিলেন।
তার মা শওকত খানমের বংশধররা ছিলেন জাতিগত পশতুন, যিনি বুরকি উপজাতির অন্তর্গত। তাদের পূর্বপুরুষরা বহু শতাব্দী ধরে পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলায় বাস করেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর তিনি আত্মীয়দের সঙ্গে লাহোরে চলে যান। শিশু ও যৌবনকালে শান্ত ও লাজুক স্বভাবের ছিলেন ইমরান খান। তাদের পরিবার ছিলো সচ্ছল ও উচ্চ মধ্যবিত্ত। চার বোনের সঙ্গেই পরিবারে বেড়ে ওঠেন ইমরান খান। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লাহোরের আইচিসন কলেজ এবং ক্যাথেড্রাল স্কুলে পড়ালেখা করেন। এরপর ইংল্যান্ডের রয়্যাল গ্রামার স্কুল ওরচেস্টারে ভর্তি হন। এখানেই তিনি ক্রিকেটার হওয়ার দক্ষতা তৈরি করেন। এপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবলে কলেজে দর্শন, রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে অধ্যয়ন। ১৯৭৫ সালে স্নাতক হন।
১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর ১৯৯৬ সালে রাজনীতির ময়দানে আসেন ইমরান খান। দুর্নীতি বিরোধী স্লোগানে ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠা করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। পরের বছর ১৯৯৭ সালে তিনি নির্বাচনে দুটি কেন্দ্র থেকে দাঁড়ালেও দুটিতেই হেরে যান। তবুও থেমে যাননি। ২০০২ সালে নির্বাচনে জয়ী হন ইমরান খান। ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট হয়ে মোশাররফ তৎকালীন সেনা প্রধানের পদে থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছিলেন। ইমরান খান ওই নির্বাচনের বিরোধিতা করে ওই বছরের ২ অক্টোবর ৮৫ জন পার্লামেন্ট সদস্যদের সঙ্গে পদত্যাগ করেন। সেবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হয়ে মোশাররফ পাকিস্তানে জরুরি অবস্থা জারি করেন। ইমরান খানকে গৃহবন্দী করা হয়। ওইসময় তিনি কিছুদিন হাজতবাসও করার পর মুক্তি পান।
২০১৩ সালে পাকিস্তানের ১০তম নির্বাচনে তার দল দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আসন জেতে। আর ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই পাকিস্তানের ১১ তম জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তার দল আসন সংখ্যার বিচারে সর্ববৃহৎ দলে পরিণত হয়। তিনি ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল জাতীয় পরিষদে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধিরা। যেখানে ১৭৪ ভোটে পরাজিত হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হন। বর্তমানে পাকিস্তানে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক হিসেবে দেখা হচ্ছে ইমরান খানকে। বিশাল সমাবেশ করে ক্ষমতাসীনদের ভয় ধরাচ্ছেন। বিভিন্ন কারণে সংবাদে থাকা ইমরান খানের ব্যক্তিগত জীবনও রাজনীতির মাঠের মতো বৈচিত্রময়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন