শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় রাসূল (সা.)

মুফতী হাবীবুল্লাহ মিছবাহ্ | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২২, ১২:১৫ এএম

পূর্ব প্রকাশিতের পর
এ ব্যবস্থা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মদিনা জীবনে এবং পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদিনের শাসনামলে আশানুরুপ সুফল বয়ে আনে। অভাব দূরীকরণ ও দারিদ্র বিমোচনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উক্ত পদক্ষেপ ছিল যুগান্তকারী। স্বাচ্ছন্দ্য এমন অবস্থায় পৌঁছেছিল যে, জাকাত গ্রহণের জন্য কোনো দুঃস্থ পাওয়া যায়নি। জাষ্টিস সায়্যিদ আমীর আলী তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘দি স্পিরিট অব ইসলাম’-এ বলেন ‘ইসলামের পূর্বে পৃথিবীর কোনো ধর্মই ধর্মীয় ব্যবস্থার মধ্যে সরাসরি আইন প্রণয়ন করে জাকাত প্রদান, বিধবাদের রক্ষণাবেক্ষণ, ইয়াতীম ও নিঃসম্বলদের লালনকে পবিত্র করেনি। প্রাথমিক পর্যায়ে খ্রিস্টানদের মধ্যে দানোৎসব ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করত। (জাস্টিস সৈয়দ আমীর আলী, দি স্পিরিট অব ইসলাম, পৃ. ২৫৭) সামাজিক ন্যায়বিচার ও ইনসাফ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ অনুযায়ী ঘোষণা দেন যে, মূলত সম্পদের মালিকানা নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর, মানুষ ভোগ দখলের অধিকারী মাত্র। আবার ভোগ দখলের ক্ষেত্রে তার নিজের সাথে সমাজের অপরাপর দুঃস্থ ও বঞ্চিত সদস্যরাও শরীক। জাকাত ছাড়াও ধনীদের সম্পদে গরিবের অধিকার বা হক রয়েছে। হক বা অধিকার শব্দের দ্বারা সমাজের ধনী-দরিদ্রের পারস্পরিক সহমর্মিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পদ বিকেন্দ্রিকরণ ও সুষম বণ্টনের এক সুসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন যাতে সম্পদ শুধু সমাজের ধনাঢ্যদের মাঝে আবর্তিত হতে না পারে। ধনী আরো ধনী, গরিব আরো গরিব হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, যেসব দনকুবের অর্থ সম্পদ সঞ্চিত করে দুঃখী মানুষের কল্যাণে ব্যয় করে না, কিয়ামতের দিন এসব ধনরাশি তার শাস্তির উপকরণ হয়ে দাঁড়াবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে আর্দশ সমাজ গড়ে তোলেন। বংশ কৌলীন্য ও আভিজাত্যের গৌরবের পরিবর্তে মানবতার ভিত্তিতে সমাজ বন্ধন সুদৃঢ় করেন। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা দেন, আরবের ওপর অনারবের, অনারবের ওপর আরবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। সব মানুষ একে অপরের ভাই। সব মানুষ আদমের বংশধর আর আদম মাটি হতে তৈরি (আহমদ ইবন হাম্বল, মুসনাদ, ৫খ., পৃ. ৪১১; জাহি আল বয়ান ওয়াত তিবঈন, ২খ. ৩৩) তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি খোদাভীতি প্রবল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ ঘোষণা ছিল তৎকালীন সমাজের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ ও বিদ্রোহ। কারণ বংশ কৌলীন্য ও রক্তের মর্যাদা ছিল সামাজিক আভিজাত্যের ভিত্তি। তিনি ঈমানদারদের সুভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সুদৃড় করে এক অখÐ দেহ সত্তায় পরিণত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সকল মুমিন এক মানব দেহের মতো, যদি তার চোখ অসুস্থ হয় তখন তার সর্বাঙ্গ অসুস্থ হয়ে পড়ে, আর যদি তার মাথা ব্যাথা হয় তখন তার সমস্ত দেহই ব্যথিত হয়। (মিশকাত আল মাসাবীহ, ৯খ., পৃ. ১২৮ এই পৃথিবীতে সব মানুষই যে আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান, কৃষ্ণ-শ্বেত, ধনী-নির্ধন সকলই যে আল্লাহর সৃষ্ট মানুষ, সব মানুষই যে পরস্পর ভাই ভাই, ধর্মীয় ও কর্মীয় অধিকার যে সব মানুষেরই সমান-এ কথা বলিষ্ট কণ্ঠে ঘোষণা করেন এবং স্বীয় কর্মে ও আচরণে প্রমাণ করেন ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ কারণে ইসলামে সকলের জন্য স্বীকৃত হয়েছে ন্যায় বিচারের অধিকার। অবিচার ও নানা স্বার্থপরতার কঠিন নিগড়ে মানুষ ছিল অসহায় বন্দি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই সর্বপ্রথম ঘোষণা করেন মানুষের মুক্তিবাণী। সারা জীবনের সাধনায় তিনি প্রতিষ্ঠিত করেন এমন এক সমাজ, যে সমাজে মানুষের মধ্যে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পায়, ব্যক্তি ও জাতি-গোত্র পায় পূর্ণ স্বাধীনতার আস্বাদন। মানুষ সমাজের বুকে মানুষ রুপে শির উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ লাভ করে। মানব জাতির প্রতি ইসলামের বৈপ্লবিক অবদানের মধ্যে মানুষের প্রতি ন্যায়বিচারই হলো অন্যতম। (ব্যারিস্টার এস.এ সিদ্দিকী, ন্যায়বিচার, ব্যক্তি ও ধর্মীয় স্বাধীনতায় ইসলামের বৈপ্লবিক অবদান) সমাজ জীবনে মানুষ একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। তাই পারস্পরিক সহানুভুতি, ভ্রাতৃত্ব, সমঝোতা প্রভৃতি সদাচরণ সমাজে অন্যায় ও যুলুমের অবসান ঘটায় এবং ক্রমান্বয়ে মানব সভ্যতাকে গতিশীল করে তোলে। তাই দেখা যায় মানুষ যখন পারস্পরিক সমঝোতা ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে অখÐ ভ্রাতৃসমাজ গঠন করেছে তখন তারা অগ্রগতি ও শান্তির উচ্চমার্গে পৌঁছে গেছে। আর যখনই বিভেদ মাথাচাড়া দিয়া উঠেছে তখন পতন হয়েছে অনিবার্য পরিণতি। ইতিহাসের ঘটনা পরম্পরা এরুপ অসংখ্য দৃষ্টান্তে ভরা। সমাজের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে পারস্পরিক দয়া, সৌহার্দ ও সৌজন্য সুস্থ সমাজ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। সহমর্মিতাসুলভ গুণাবলি মানুষকে একে অপরের নিকটে নিয়ে আসে। হিংসা-বিদ্বেষ বিভেদের বীজ বপন করে। যার ফলশ্রæতিতে সামাজিক সংহতি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন এক সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন যার ভিত্তি ছিল পারস্পরিক সম্মানবোধ, ন্যায়বিচার ও মানবিকতাবোধ। (আল হায়সামী, কাশফুল আসতার, ২খ., পৃ. ৩৫) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শতাব্দীর এমন এক ক্রান্তিকালে নতুন সমাজ গড়ার প্রয়াসী হন যখন গোটা দুনিয়ার বিভিন্ন সমাজে বর্ণপ্রথা, বর্ণবৈষম্য, বংশ কৌলীন্য ও আভিজাত্যের দম্ভ মানুষকে গৃহপালিত জম্ভ অথবা বিশেষ বৃক্ষের চেয়ে হীন পর্যায়ে নিয়ে আসে। জন্তু বিশেষ ও বৃক্ষ বিশেষকে পবিত্র জ্ঞানে অর্চনা করা হতো তখন। সাধারণ মানুষের তুলনায় এসব জঙ-বস্তুর মর্যাদা ছিল অনেক বেশি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের মনন ও মানসিকতায় এ কথা চিত্রায়িত করতে সক্ষম হন যে, সৃষ্টিজগতে সবচেয়ে বেশি মূল্যবান, সম্মানের যোগ্য ও ভালোবাসার পাত্র হলো মানুষ। (সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী, নবীয়ে রহমত, ২খ., পৃ. ২২০) মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি। দুনিয়ার সবকিছু মানুষের কল্যাণের জন্য আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। মানুষ জগতের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। আল কুরআনের ভাষায় ‘নিশ্চয় আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে তাদের চলাচলের বাহন করে দিয়েছি এবং আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি এদের অনেকের ওপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি’ (সূরা বনী ইসরাঈল : ৭০) এর চেয়ে অধিকতর সম্মান ও মর্যাদা মানুষের জন্য আর কী হতে পারে? আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে এ বিরাট স্বীকৃতি মানুষকে পৃথিবীর অপরাপর বস্তুর ওপর সম্মানের উচ্চ মর্যাদায় আসীন করে। এ কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গুরুত্ব সহকারে বলেন ‘সমস্ত সৃষ্টিজগত (মাখলুক) আল্লাহ তা’আলার পরিবার। সুতরাং মাখলুকের মধ্যে আল্লাহ তা’আলার নিকট সে-ই সর্বাপেক্ষা প্রিয়, যে আল্লাহর পরিবারের সঙ্গে ন্যায় আচরণ করে।’ (মিশকাত আল মাসাবীহ, ৯খ., পৃ.১৪১) মানবতার উচ্চ মর্যাদা আল্লাহর নৈকট্য ও সৃষ্টিজগতের প্রতি ন্যায়পূর্ণ আচরণের গুরুত্ব প্রকাশের জন্য এর চেয়ে আর কী সুন্দর ভাষা হতে পারে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় ইনসাফপূর্ণ যে সমাজ কায়েম করেন তার ভিত্তি ছিল নৈতিকতা ও মানবজাতির সার্বজনীনতা। মানুষ যদি রিপুর তাড়নার নিকট পরাভ‚ত হয় তা হলে সুস্থ সমাজের বিকাশধারায় সে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারে না। মনুষ্যত্বের উজ্জীবন, চারিত্রিক উৎকর্ষ ও নৈতিক উপলদ্ধি সুস্থ সমাজ বিকাসে সহায়ক আর ইন্দ্রিয়জাত প্রবণতা, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ, অনিষ্টকর প্রথা সমাজের সুস্থতার ভিত্তিমূলকে একেবারে নড়বড়ে করে দেয়, জন্ম হয় যুলুম ও অন্যায়ের। এই উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুয়া খেলা, মদ্যপান, নেশাগ্রহণ, কুসীদপ্রথা, যিনা-সমকামিতাও অহেতুক রক্তপাত নিষিদ্ধ করে দেন। (জালালউদ্দীন সায়ুতী, দুর আল মানসুর, ১খ. পৃ. ৩৯১, ইবন কাসীর, সিরাতুন। নবুবিয়াহ, ৪খ, ১৯৭৮, পৃ.৩৯২) ফলে সমাজবিরোধী কার্যকলাপের ভয়াবহতার হাত হতে মানুষ রেহাই পায়। উল্লেখ্য যে, মদ্যপান, জুয়া যাবতীয় অমার্জিত, নীচ স্বভাবের অনিষ্ট কার্যকলাপ ও সব ধরনের আতিশয্য হলো খ্রিষ্ট-ইয়াহুদী ও পৌত্তলিক সমাজের অভিশাপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো সভ্যতার অভিশাপ হতে মানুষকে মুক্তি দিয়ে ধর্মনিয়ন্ত্রিত ও মানবিকতায় উজ্জীবিত নতুন সমাজের গোড়াপত্তন। বিশ্ব মানবতার প্রতি এটা মহান রাসুলের ইহসান। বর্তমান বিশ্বের খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ ও তুলনামূলক ধর্মতত্তে¡র গবেষক আল্লামা সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী র. এ প্রসঙ্গে বলেন এটা দিবালোকের মতো সত্য যে, মহান রাসুলের আবির্ভাবের পর পুরা দুনিয়ার অস্তিত্বের বিকাশ। সম্ভব হয়েছে তার দয়াপূর্ণ আচরণ ও কার্যকলাপের ফলে সর্বপ্রথম তিনি মানবতার মাথায় ঝুলন্ত। ডেমাক্লিজের তরবারী অপসারিত করে গভীর উচ্ছ¡াস ও আস্থার সাথে মানবতার ভিত্তিতে বসবাসের নতুন আদর্শ উপস্থাপন করেন। তার প্রচেষ্টার ফলে শিক্ষা, দীক্ষা, জাগতিক-আধ্যাতিœক উন্নতি হয়। নতুন সংস্কৃতি সভ্যতার উন্মেষ ঘটে এবং একটি নতুন সাহসী বিশ্ব অস্তিত্ব লাভ করে। সমাজের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তৎকালীন সমাজে প্রচলিত দাসপ্রথা উচ্ছেদে সাহসী ভ‚মিকা রাখেন। বিশ্ব ইতিহাসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই প্রথম যিনি দাসপ্রথার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। তখনকার যুগে। গোটা গ্রীস ও রোমান সাম্রাজ্য দাসপ্রথার ওপর গড়ে উঠেছিল। খ্রিষ্ট জগত ও আরব সমাজেও ছিল দাসপ্রথার অবাধ প্রচলন। প্রভুগণ নিজেদেরকে মালিক-মনিব মনে করে দাসদের শ্রমকে শোষণ করতেন, তাদের দ্বারা অমানুষিক পরিশ্রম করাতেন। অনেক সময় তাদের ওপর নেমে আসত নির্যাতনের খড়গ কৃপাণ। দাসগণের জীবন ছিল পশুর ন্যায়। পণ্যদ্রব্যের মতো হাটবাজারে তাদের বিক্রি করা হতো। মানুষ হিসাবে তাদের কোনো অধিকার ছিল না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শতাব্দী প্রাচীন দাসপ্রথার অবসান কল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং দাস মুক্তিকে সওয়াবের উপায় হিসেবে চিহ্নিত করেন। (চলবে)

লেখক : আরবি প্রভাষক, কড়িহাটি ফাজিল মাদরাসা, চাটখিল, নোয়াখালী।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন