বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম

| প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রশ্ন : দুই বছর হলো স্ত্রী কর্তৃক আমি তালাকপ্রাপ্ত হই। আমাদের ১১ বছরের সংসারে আট বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। এখন পর্যন্ত আমরা কেউই অন্যত্র বিয়ে করিনি। বর্তমানে সে আবার নতুন করে আমার সাথে সংসার করতে চায়। আমি তাকে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক কীভাবে নিতে পারি?
উত্তর : বাংলাদেশি আইনে আপনারা অনেক কিছুই করতে পারেন। তবে শরিয়া আইনে প্রথম দেখতে হবে, আপনার স্ত্রী আপনাকে কোন বিবেচনায় তালাক দিয়েছিলেন। তিনি মূলত আপনাকে তালাক দিতে পারেন না। যদি দিতে চান, তাহলে তার সামনে তিনটি পথ খোলা আছে। এক. তালাকে তাফবিজ, অর্থাৎ আপনি তাকে তার নিজের ওপর তালাক দেয়ার ক্ষমতা যদি দিয়ে থাকেন। আপনাকে তার তালাক দেয়ার ক্ষমতা তাফবিজেও থাকে না। দুই. বনিবনা না হলে পরস্পর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কোনো কিছুর বিনিময়ে স্বামীকে সম্মত করে বিয়ে বন্ধন শেষ করে দেয়া। শরিয়তে এর নাম খোলা তালাক। তিন. আদালতে গিয়ে স্বামীর অযোগ্যতা কিংবা অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে কোর্টের দ্বারা বিয়ে ভেঙে ফেলা। আপনার স্ত্রী এর কোনটি করেছিলেন? যদি এর মধ্যে বর্ণিত পন্থায় তালাক হয়ে থাকে, আর ইদ্দত পার হয়ে অনেক সময় চলে গিয়ে থাকে, তাহলে বড় মুফতি ও ফকিহ আলেমের পরামর্শ নিয়ে শরিয়তের শর্ত পূরণ করেই আপনারা নতুন করে বিয়ে করতে পারবেন। আর যদি এসব পদ্ধতি ছাড়া মনগড়া কোনো আইনে তালাক দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে এমনও হতে পারে, আপনাদের বিয়ে ভাঙেনি। মানে তালাকই পতিত হয়নি। তবে তো সব ঠিকই আছে। এখন অনুসন্ধান করে দেখুন, আপনারা কোন পর্যায়ে আছেন।
প্রশ্ন : আমাকে এক লোক প্রশ্ন করেছে। বিয়ের আগে প্রেম করে মিলিত হয়ে তারা সন্তান জন্ম দিয়েছে। এমতাবস্থায় মেয়ে সন্তানটি সমাজে মুখ দেখাতে পারে না। এখন ওরা দুই জন কী করতে পারে?
উত্তর : সমাজে মুখ দেখাতে না পারা উচিত ছিল, ওদের দু’জনের। প্রশ্নে মনে হয়, মুখ দেখাতে পারছে না অবৈধ সন্তানটি। শরিয়তে এ ধরনের সন্তানের কোনো পাপ বা দোষ থাকে না। তাদের দায় ওই বাবাকে নিতে হবে, যে তাকে অবৈধ উপায়ে জন্ম দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে শরিয়ত যদি ব্যাভিচারীদের সাজা দেয় আর তারা মৃত্যুদণ্ড পায়, তা হলে মেয়েটির দায়িত্ব সরকারের। যদি ব্যাভিচারীরা বিবাহিত হয়, তাহলেই সাজা মৃত্যুদণ্ড। অবিবাহিত হলে বেত্রাঘাত। একই অপরাধ পুনরায় সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে বিচারক তাদের দু’জনকেই দূরে দূরে থাকার নির্দেশ দেবেন এবং যাকে সম্ভব এলাকা ছাড়া করে দেবেন। যে সমাজে শরিয়তি আইন চালু নেই, সেখানে এ দুই নারী-পুরুষকে সামাজিকভাবে বিয়ে বন্ধনে বাধ্য করা হবে, যাতে বিয়ে পূর্ব সন্তানটি মা-বাবার আশ্রয়ে জীবন কাটাতে পারে। সমাজে তাকে লজ্জা দেয়ার বা অবৈধ বলার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, আমরা আগেই বলেছি, বাবা-মায়ের দায় সন্তানের ওপর আসে না। এসব ঘোর প্যাঁচওয়ালা প্রশ্নের জবাব লিখে শেষ করা যাবে না। বললে, বুঝিয়ে বলা যায়। সম্পূরক অনেক প্রশ্ন থাকে। সেসব না জানলে জবাবটি পূর্ণ হয় না। আশা করি আলোচনার ভেতর থেকে যাদের প্রশ্ন তারা তাদের সমাধানটি খুঁজে নেবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন