এবার মায়ের দুধে মাইক্রোপ্লাস্টিক। সম্প্রতি ইতালির একটি গবেষণা সংস্থার পক্ষ থেকে মাতৃদুগ্ধ নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়। আর সেই গবেষণায় প্রথমবার এমন তথ্য সামনে আসতেই বিশ্বজুড়ে পড়ে গেছে শোরগোল। এই রিপোর্ট সামনে আসতেই শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বহু চিকিৎসক।
মাতৃদুগ্ধে মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে বলে ওই গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়। পশ্চিমের সংবাদমাধ্যমের সূত্রে খবর, ৩৪ জন মহিলার কাছ থেকে মাতৃদুগ্ধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ওই নমুনাগুলোর উপরেই পরীক্ষা চালানো হয়। আর তাতেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব মিলেছে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।
আর এই গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশি হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে ইতালির সরকার। অন্যদিকে কিছুদিনের মধ্যেই আরও বেশি মহিলার কাছ থেকে মাতৃদুগ্ধের নমুনা সংগ্রহ করে তার উপর পরীক্ষা চালানো হবে বলে জানিয়েছে ওই গবেষণা সংস্থা।
কী ভাবে মাতৃদুগ্ধে মিলল মাইক্রোপ্লাস্টিক? : ইতালির গবেষণা সংস্থার দাবি, অত্যাধিক প্লাস্টিকের ব্যবহারের জেরেই এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে মহিলাদের শরীরে। ওই গবেষণা পত্র অনুযায়ী, অধিকাংশ সময়ই মহিলারা প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার খেয়ে থাকেন। এমনকি পানীয়র ক্ষেত্রেও যথেচ্ছভাবে প্লাস্টিকের গ্লাস ব্যবহার করা হয়। আর এর থেকেই প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্রকণা শরীরে ঢুকছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে শিশুদের ক্ষেত্রেও নানা অসুস্থতা দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
মাইক্রোপ্লাস্টিক কী? : প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র টুকরাকেই বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় মাইক্রোপ্লাস্টিক বলা হয়। মূলত, পাঁচ মিলিমিটারের থেকেও ছোট প্লাস্টিকের কণা এর মধ্যে পড়ে। গবেষকদের দাবি, মানব দেহের কোষে গিয়ে আঘাত হানতে পারে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক। এর ফলে দেখা দিতে পারে ক্যান্সার থেকে শুরু করে একাধিক জটিল রোগ।
কী বলছেন ইতালির গবেষকরা? : মাতৃদুগ্ধে মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইতালির গবেষক-চিকিৎসক ভ্যালেন্টিনা নোটারসটেফানো বলেছেন, ‘এটা বিরাট উদ্বেগের বিষয়। মনে রাখতে হবে মাতৃদুগ্ধ পান করেই শিশুরা বড় হয়। মাতৃদুগ্ধের মতো সুষম খাবারের বিকল্প শিশুদের জন্যে আর কিছু নেই। সেই আবহে মাতৃদুগ্ধে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া সত্যিই চিন্তার বিষয়।’
মহিলাদের শরীরে এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বাড়লে ভবিষ্যতে গর্ভবতী হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা আসবে বলেও দাবি করেছেন ওই ইতালীয় গবেষক। ২০২০ সালে মাতৃদুগ্ধ নিয়ে এই গবেষণা চালিয়েছিল ইতালির সংস্থা। গবেষণাপত্রে খুব স্পষ্ট করে সব কথা বলা না থাকলেও, কী ধরনের প্লাস্টিক মিলেছে তার আভাস দেওয়া হয়েছে। তবে এই নিয়ে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে ওই গবেষক সংস্থা। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য গার্ডি য়ান, সিএনবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন