বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কর্তৃত্ববাদী এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়

রাজধানীর উত্তরখানে জি এম কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

কর্তৃত্ববাদী এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের। তিনি বলেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনই প্রমাণ করে, কর্তৃত্ববাদী কোনো সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরখান কলেজিয়েট স্কুল মাঠে থানা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সরকার ও সরকারি দলকে খুশি করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন অনিয়মকেই নিয়মে পরিণত করে। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ব্যাপক জাল-জালিয়াতির জন্য আমরা ইসিকে নির্বাচন বাতিল করতে বলেছিলাম। তারা নির্বাচনটি বন্ধ ঘোষণা করেছে। কোনো জালিয়াতির নির্বাচন আমরা মেনে নেব না।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে জাপার চেয়ারম্যান বলেন, ভয়াবহ লোড শেডিংয়ে নাকাল দেশ। ডলারের অভাবে জ্বালানি তেল কিনতে পারে না সরকার। তাই চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না তারা। কলকারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে রফতানি শিল্প। বৈদেশিক মুদ্রা আয় হুমকির মুখে পড়েছে। কর্মহীন হয়ে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে অনেক। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে, সরকার ঘরে ঘরে বেকার সৃষ্টি করেছে। মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। এতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না বাবা-মায়েরা। এভাবে চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম পুষ্টিহীন জাতিতে পরিণত হবে। মানুষ বাজার করতে পারছে না, বাজারে যেন আগুন লেগেছে। বাজারের আগুনে পুড়ছে কোটি কোটি পরিবার। টাকার অভাবে মানুষ চিকিৎসা করতে পারছে না, ওষুধ কিনতে পারছে না। তিনি আরো বলেন, যারা সরকারি দল করেন শুধু তারাই যেন বেহেস্তে আছেন। দেশের মানুষ যেন দোজখের আগুনে জ্বলছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষ টাকার অভাবে বাজার করতে পারছে না, আর একটি অংশ দেশে টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। তারা হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা নেই, মৌলিক অধিকার নেই। কিন্তু হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়নের নামে লুটপাট চলছে।

জি এম কাদের বলেন, শুরু থেকেই আমরা ইভিএমে নির্বাচনের বিরোধিতা করছি। কারণ, ইভিএমে ঘোষিত ফলাফল চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব হয় না। কোনো প্রার্থী সংক্ষুব্ধ হলে, কোনো প্রমাণ নিয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন না। আবার, যারা নির্বাচন পরিচালনা করেন, সেই মাঠ প্রশাসন সরকারের অনুকূল্য পেতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। ইভিএমের দোষ না থাকলেও, যারা যারা এটা পরিচালনা করেন তারা তো নিরপেক্ষ নয়। তাই কর্তৃত্ববাদী কোনো সরকারে অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবার সুযোগ নেই। নির্বাচনে সরকার সমর্থকরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা সহ্য করতে পারেন না। প্রতিটি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চায় সরকার। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে হামলা ও হয়রানিমূলক মামলার শিকার হতে হয়।

উত্তরখান থানা জাপার আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান আলালের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তৃতা করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদের এমপি, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান লিপটন, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিন্টু, হাজী নাসির উদ্দিন সরকার, মো. হেলাল উদ্দিন, কাজী আবুল খায়ের, এনাম জয়নাল আবেদিন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন