ইনকিলাব ডেস্ক : আধুনিক মার্কিন ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নজিরবিহীন ব্যক্তিত্ব, তাকে তার নীতি তুলে ধরার জন্য একটা সুযোগ দেয়া উচিত। বিশ^ রাজনীতিকে রূপ দিতে ভাবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্ভাবনা এবং বিশ^ শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন ঐতিহ্য বজায় রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করে হেনরি কিসিঞ্জার এ কথা বলেন। খবর রাশিয়া টুডে।
অসলোতে নোবেল শান্তি পুরস্কার ফোরামে ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিশ^ শান্তি’ বিষয়ে বক্তৃতাকালে ৯৩ বছর বয়স্ক সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ও নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি সম্পর্কে সৃষ্ট শংকা বাতিল করে দেন। কিসিঞ্জার বলেন, এক অনিবার্য সংকট মেনে নেয়ার আগে নতুন প্রশাসনকে তার আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার রূপকল্প তুলে ধরার একটি সুযোগ দিতে হবে।
১৯৭৩ সালে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কিসিঞ্জার জোর দিয়ে বলেন, বিশ^ সম্পর্কে মার্কিন ভূমিকা বিষয়ে বিতর্কে নির্বাচনী প্রচারণার সময় রিপাবলিকানরা যে বাগাড়ম্বর করেছিল সে সবের পরিবর্তে ট্রাম্পের সম্ভাবনা ও নীতির উপর গুরুত্ব আরোপ করা উচিত। এ সব বাগাড়ম্বর ওয়াশিংটনের সাথে ভবিষ্যত সম্পর্ক বিষয়ে ইউরোপ থেকে এশিয়ার দেশগুলোকে শংকিত করে তুলেছে।
সাবেক কূটনীতিক বলেন, আন্তর্জাতিক বিতর্ক হওয়া উচিত পরিবর্তিত আমেরিকান নীতি নিয়ে, নির্বাচনী বাগাড়ম্বর নিয়ে নয়। তবে আমি দেখেছি ও জেনেছি যে প্রতিটি আমেরিকান প্রেসিডেন্ট প্রশাসনে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অতিরিক্ত আগ্রহ প্রাধান্য বিস্তার করেছে।
কিসিঞ্জার বলেন, কোনো সন্দেহ নেই যে ভাবি প্রেসিডেন্ট সেই ব্যক্তিত্ব আধুনিক আমেরিকার ইতিহাসে যার কোনো নজির নেই।
তিনি তার বক্তৃতায় ৪টি প্রবণতার কথা উল্লেখ করেন যা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির জন্য বৃহত্তর বিরোধ ও বৃহত্তর চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করতে পারে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি এবং রাশিয়া ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সম্পর্কের ভাঙ্গনকে বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও আছে ইউরোপের কৌশলগত গুরুত্ব দুর্বল হওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের বিস্তৃতি যা বিশ^ শান্তির প্রতি বৃহত্তম হুমকি বলে চিহ্নিত।
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কিসিঞ্জার উপস্থিত প্রতিনিধিদের মনে করিয়ে দেন যে বিশ^ শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে মার্কিন নেতৃত্ব সবসময়ই প্রভাবশালী এবং ট্রাম্পও তার ব্যতিক্রম নন।
কিসিঞ্জার বলেন, সমকালীন বহু শান্তি কাঠামোতেই হয় আমেরিকার সমর্থন রয়েছে অথবা আমেরিকার উদ্যোগেই তা হয়েছে। আমার আশা ও বিশ^াস যে আগামী দশকগুলোতেও যুক্তরাষ্ট্র বিশ^ শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষা অব্যাহত রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আগামী ৪৫ তম প্রেসিডেন্টের সমর্থনে কিসিঞ্জারের কথা বলা এটাই প্রথম নয়। এ বছর তাদের মধ্যে কমপক্ষে দু’বার সাক্ষাত হয়। একবার সাক্ষাত হয় মে মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকালে, দ্বিতীয়বার ট্রাম্পের বিজয়ের পর নভেম্বরে।
নভেম্বরে সিএনএন-র সাথে এক সাক্ষাতকারে কিসিঞ্জার ট্রাম্পকে তার জীবনে দেখা অত্যন্ত অনন্য এক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে একটি সুযোগ দেয়ার জন্য আমেরিকানদের প্রতি আহবান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন