ইরাকের আইনপ্রণেতারা দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানিকে সরকার গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন কুর্দি রাজনীতিবিদ আব্দুল লতিফ রশিদ। এর মধ্যদিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটছে দেশটিতে। মনোযোগ এখন সরকার গঠনের দিকে।
৫২ বছরয় বয়সী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি, পূর্বে ইরাকের মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রীর পাশাপাশি শ্রম ও সামাজিকবিষয়ক মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এবার নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেবেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) পার্লামেন্টে ভোটাভোটির পর প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির সরকার জাতীয় পরিষদের আস্থা অর্জন করেছে’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমাদের মন্ত্রী পর্যায়ের দল এই সংকটময় সময়ে দায়িত্ব কাঁধে নেবে, যেখানে বিশ্ব ব্যাপক হারে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন এবং সংঘাত প্রত্যক্ষ করছে’। এই পরিবর্তনগুলো ‘আমাদের দেশে নতুন চ্যালেঞ্জ যোগ করবে। যেখানে এরইমধ্যে সংকট দেখা দিয়েছে’।
পার্লামেন্টে উপস্থিত ২৫৩ জন আইনপ্রণেতাদের অধিকাংশই ২১ জনকে দুটি পদে নিয়োগের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে নির্মাণ ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয় এখনও বাদ রয়েছে। এই দুটি অমীমাংসিত নিয়োগ সত্ত্বেও, অনুমোদিত মন্ত্রিসভা একটি কোরাম গঠন করেছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সরকার প্রধান হিসেবে মোহাম্মদ শিয়া আল–সুদানির নাম ঘোষণা করেন ইরাকের নতুন প্রেসিডেন্ট আব্দুল লতিফ রশিদ। বৃহস্পতিবার দুই দফা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ইরাকের পার্লামেন্টে। এতে তিনি ৯৯ ভোটে বারহাম সালিহকে হারিয়ে ১৬০ ভোট নিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর পরপরই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির নাম ঘোষণা করেন। ইরান সমর্থিত শিয়াদের বৃহত্তম রাজনৈতিক জোটের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী পদে আল-সুদানিকে মনোনীত করা হয়।
তবে ইরাকের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সদরের সমর্থকরা সরকারে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। পার্লামেন্টে অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছে স্পিকার মোহাম্মদ আল-হালবৌসির নেতৃত্বে একটি সুন্নি গোষ্ঠী এবং দুটি প্রধান কুর্দি দল।
১৯৭০ সালে ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে জন্মগ্রহণ করে আল-সুদানি। যখন তার ১০ বছর বয়স তখন ইরান-সমর্থিত ইসলামিক দাওয়া পার্টির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে তার বাবাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে সাদ্দাম হোসেনের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে ১৯৯১ সালে শিয়া বিদ্রোহে যোগ দেন আল-সুদানি। এসময় অনেকেই দেশ ছেড়ে গেলেও ইরাকে থেকে যান তিনি।
২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের আক্রমণের পর সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর থেকেই আল-সুদানি স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। সূত্র: আল-জাজিরা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন