উঃ একজন মুসলমান কোরআনকে সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করতে হবে। তবে মুসলমানদের এ বিশ্বাসকে একেবারে অন্ধবিশ্বাস বলা যায় না। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনেক সময় বহু বছর পর হলে ও ভুল প্রমাণিত হয় বা বিপরীত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। বহু বছর থেকে বিজ্ঞানীরা বলে এসেছে বড় ধরণের একটি বিষ্ফোরণের মাধ্যমে সুরে্যর কিছু টুকরো মহাশুন্যে ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবী সে টুকরোগুলোর একটি টুকরো। বহু বছর ধরে ঠান্ডা হতে হতে উপরি ভাগ ঠান্ডা হয়ে যায়। ভিতরটা এখনো উত্তপ্ত, এ জন্য আগ্নেয়গিরিতে উত্তপ্ত লাভা বের হয়। উপরিভাগ ঠান্ডা হয়, পানি সৃষ্টি হয়, ক্ষুদ্র কিট সৃষ্টি হয় ,সে কিট বহু বছর ধরে বিবর্তন হতে হতে ব্যাংঙ জাতীয় প্রাণী সৃষ্টি হয়, সেটা বিবর্তন হতে হতে বানর জাতীয় প্রাণী সৃষ্টি হয়, সেটা বিবর্তন হতে হতে মানুষ সৃষ্টি হয়। অতি সংক্ষেপে ও সহজে বুঝার জন্য মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে এটাই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। ধর্মে বিশ্বাসীদের ঘায়েল করতে নাস্তিকরা এ বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে আসছে। এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা বাদ দিলে ও কিছু প্রশ্ন করলে তার যথাযথ জবাব পাওয়া যাবে না যেমন পৃথিবী ঠান্ডা হয়ে গেল কিন্তু সুর্য ঠান্ডা হলো না কেন? ঠান্ডা হয়ে পৃথিবীতে প্রাণী সৃষ্টি হলে ও অন্য গ্রহে প্রাণী সৃষ্টি হলো না কেন? বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ হলো কিন্তু মানুষ থেকে বিবর্তন হয়ে অন্য কোন আকৃতির কিছু হচ্ছে না কেন? এখন যে বানর আছে বিবর্তন হয়ে তাদের গায়ের পশম ঝরে পড়ে মানুষের মত লোমহীন দেহ কোন বানরের হয়নি কেন? ইত্যাদি। সম্প্রতি আমেরিকার প্রখ্যাত ইকোলজিস্ট ড. এলিস সিলভার তার ্র হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ এ সাইন্টিফিক ইভ্যালুয়েশান অব দ্যা এভিডেন্সগ্ধ । ৬৫০ পৃষ্ঠার এ বইতে প্রমান করেছেন মানুষ এ গ্রহের প্রাণী নয়, মানুষ পৃথিবীর সাথে সরাসরি খাপ খায় না আবার পৃথিবীর অন্য প্রাণীদের সাথে মানুষের মিল নেই। অন্য কোন গ্রহ থেকে মানুষ পৃথিবীতে এসেছে। এ বিষয়ে উনি অনেক প্রমাণ দিয়েছেন যেমন অন্য প্রাণী যে ভাবে রোদে পুড়ে মানুষ এরুপ পুড়লে হিট ষ্টোক হতো। অন্য প্রাণী যে ভাবে ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে মানুষ সর্দিতে ভুগতো। শীতে অন্য প্রাণী মোটা কাপড় গায়ে দেয় না এরুপ হলে মানুষের নিউমোনিয়া হতো। অন্য প্রাণী সরাসরি পৃথিবীর বস্তূ খায়, গরু ঘাস লতাপাতা, বাঘ সিংহ কাঁচা গোশত, কাক পচা বস্ত , মানুষ এ রকম খেলে বদ হজম অপুষ্টি পেটের পীড়ায় মরতো, মানুষকে প্রক্রীয়া করে রান্না করে খেতে হয়। অন্য প্রাণীর প্রসবে এত সহযোগিতা লাগে না মানুষের যত নার্স সিজার ও প্রসুতির সেবা লাগে। অন্য প্রাণীর প্রসবের কিছুক্ষণ পর বাচ্চা হাঁটতে দৌড়াতে পালাতে আত্মরক্ষা করতে পারে, মায়ের সাথে চলে যেতে পারে, মানুষের বাচ্চা তা পারে না।যৌন মিলনের ক্ষেত্রে অন্য অনেক প্রাণী বছরের নির্দিষ্ট কিছু ঋতুতে বা স্ত্রী সংঙ্গী উত্তেজিত হওয়া ছাড়া যৌন মিলনে অক্ষম, মানুষ তেমন নয়। অন্য প্রাণীর যৌনাঙ্গ দেহের চামড়ার ভিতরে লুকায়িত থাকে মানুষকে পোশাক পরে যৌনাঙ্গ লুকাতে হয়। অন্য প্রাণীর যৌনাঙ্গ হাড় দ্বারা গঠিত মানুষের তদ্রæপ নয়। মানুষ দু,পায়ে হাটে, তার মেরুদন্ডে ব্যাথা হয়, অন্য প্রাণী চার পায়ে হাটে মেরুদন্ডে ব্যাথা হয় না। দাঁত ব্রাশ না করলে মানুষের দাঁত নষ্ট হয়ে যায়, মুখে দুর্গন্ধ হয় অন্য প্রাণীর তা হয়না। মানুষকে শৌচ কর্ম করতে হয় অন্য প্রাণীর করতে হয় না। চল্লিশের পর সাধারণত মানুষের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে, তাকে চশমা পরতে হয়, অন্য প্রাণীর চশমা পরতে হয় না। মানুষের নখ বড় হতে থাকে না কাটলে হাতের অবস্থা এমন হবে সে খাবার ধরতে ও মুখে তুলতে পারবে না, অন্য প্রাণীর এরূপ হয়না। মানুষের দেহে অতিরিক্ত ২২৩টি জিন আছে যা পৃথিবীর অন্য কোন প্রাণীতে নেই। ইত্যাদি কারণে তিনি বলেছেন মানুষ এ পৃথিবীর প্রাণী নয়, যা এতদিনের বিবর্তনবাদের সম্পুর্ন বিপরীত মত। সুতরাং সহজেই বলা যায় মানুষের গবেষণা পরিবর্তনশীল, কোরআন অপরিবর্তনীয়, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পরিবর্তনীয়। বহু বছর ধরে শ্রীলংকায় অবস্থিত রয়েছে আদম পর্বত নামে একটি পর্বত। অনেক উঁচু, যাতে আরোহন করলে আকাশের মেঘ আপনার গায়ে লাগবে, দুর্গম হওয়ায় মানুষ আরোহন করতে পারেনি। যখন আরোহন করলো দেখতে পেল পর্বতের একেবারে চুড়ায় একটি বিশাল পাথর। কাদা নরম মাটিতে যেমনি পায়ের চাপ পড়ে সে শক্ত পাথরের উপর তেমনি পায়ের চাপ রয়েছে। পায়ের চাপের পরিমাপ নয় ফিট লম্বা। যে পাথরে আরোহন করে আদম আঃ বেহেশত থেকে পৃথিবীতে এসেছিলেন বলে মনে করা হয়, হাদিসে আদম আঃ এর যে উচ্চতা বর্ণনা করা হয়েছে তার সাথে পায়ের চাপের দৈর্ঘ্যের অনেকটা মিল আছে। সর্বশেষ থিউরী অনুযায়ী মানুষ এ গ্রহের প্রাণী নয় তা কোরআনের সাথে অনেকটা মিলে যায় কারণ মানুষের আদি পিতা আদম আঃ এ পৃথিবীতে সৃষ্টি হননি তিনি জান্নাত থেকে পৃথিবীতে এসেছিলেন।
উত্তর দিচ্ছেন- মাওলানা মোঃ ইয়াছিন মজুমদার, অধ্যক্ষ, ফুলগাঁও ফাযিল ডিগ্রি মাদ্রাসা, লাকসাম, কুমিল্লা।
মোবাইল নং-০১৯৭১-৮৬৪৫৮৯
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন