শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

যাত্রা শুরু লাল সবুজ একতার

রেলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার রেলমন্ত্রীর

| প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : সবুজ পতাকা উড়িয়ে লাল-সবুজ কোচের একতা এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করলেন রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক। উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি রেলকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। রেলমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী মেয়াদে শেখ হাসিনা যদি আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনার সুযোগ পান তাহলে বিশ্বের বহু উন্নত রাষ্ট্রের নাগরিকগণ বাংলাদেশের নাগরিক হতে চাইবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রেল স্টেশনে  নতুন কোচে আন্তঃনগর ট্রেন একতা এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রেলমন্ত্রী। একই সঙ্গে লাল সবুজ কোচে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করা হয়। এ নিয়ে রেলওয়ের বহরে মোট ১১টি আন্তঃনগর ট্রেনে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা বিলাসবহুল লাল সবুজ কোচ যুক্ত হলো। এক সাথে দুটি ট্রেনে লাল সবুজ কোচ যুক্ত হওয়ায় উত্তরবঙ্গের লাখ লাখ মানুষের বহুদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হলো। উদ্বোধনী ট্রেনে উঠে যাত্রীদের সাথে কথা বলেন রেলমন্ত্রী। এসময় যাত্রীরা রেলমন্ত্রীর কাছে তাদের সেই উচ্ছ্বাস ও কৃতজ্ঞতার কথা জানান। তারা রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তাঁর মতো একজন সৎ, দক্ষ ও যোগ্য মানুষকে প্রধানমন্ত্রী রেলমন্ত্রী বানিয়েছিলেন বলেই আজ রেলের এতো উন্নতি হচ্ছে। দিনাজপুরের যাত্রী শওকত হোসেন বলেন, এক সময় একতা ও তিস্তা ছিল উত্তরবঙ্গের মানুষের ঢাকায় আসার ট্রেন। বিএনপি আমলে সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই একতা এক্সপ্রেস এভাবে বিলাসবহুল কোচ দিয়ে চলবে একথা আমরা ভাবতেও পারিনি।    
জানা গেছে, এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮৬ সালের ১৬ মার্চ চালু হয় আন্তঃনগর ট্রেন তিস্তা এক্সপ্রেস।  উত্তরবঙ্গের সাথে ঢাকার রেল যোগাযোগের এটিই ছিল প্রথম উদ্যোগ। দিনাজপুর থেকে পার্বতীপুর ও রংপুর হয়ে গাইবান্দার তিস্তামুখঘাট পর্যন্ত চলতো ট্রেনটি। এরপর যমুনায় ফেরি পারাপারের মাধ্যমে যাত্রীদের আনা হতো বাহাদুরাবাদ ঘাটে। সেখানে অপেক্ষা করতো তিস্তার আরেক অংশ। সেই তিস্তা সরাসরি আসতো ঢাকায়। তিস্তা এক্সপ্রেস চালু করার পর যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। যাত্রীর চাহিদা দেখে রেল কর্তৃপক্ষ একই রুটে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন একতা এক্সপ্রেস চালু করে। বিএনপি সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ২৫ জুলাই তিস্তামুখ ঘাট-বাহাদুরাবাদ ঘাট রেলওয়ে ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়। তিস্তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস। এই ট্রেনের যাত্রাপথ নির্ধারণ করা হয় দিনাজপুর থেকে রংপুর হয়ে প্রথমে বোনারপাড়া এবং পরে বগুড়া হয়ে সান্তাহার পর্যন্ত। একই সাথে একতা এক্সপ্রেসকে দিনাজপুর থেকে রংপুরের দিকে থেকে ঘুরিয়ে সান্তাহার-ঈশ্বরদী হয়ে ঢাকার দিকে যাত্রাপথ নির্ধারণ করা হয়। অবহেলিত এই দুটি ট্রেনই এখন চলছে বিলাসবহুল লাল-সবুজ কোচে। অনেকেই মনে করেন, বর্তমান রেলমন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্টার ফসল এটি।
রেল সূত্র জানায়, একতা ও দ্রুতযান একই লোডে চলাচল করবে। দুটো ট্রেনেই বগি থাকবে ১২ টি করে। যার মোট আসন সংখ্যা ৮৫২।  আছে খাবার গাড়ি, নামাজের স্থানসহ খাবার রাখার সুবিধা। শোভন চেয়ার ৬টিতে কোচে আসন ৯২টি করে ৫৫২টি। এসি স্লিপার একটি কোচ আসন থাকবে ৪৮টি। এসি চেয়ারের  আসন ৮০টি। ননএসি স্লিপার কোচের আসন সংখ্যা ৪৮টি। এছাড়া পাওয়ার কার একটি কোচের আসন সংখ্যা ১৬টি। সিডিউল অনুযায়ী, সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে একতা এক্সপ্রেস দিনাজপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। আর রাত ৮টায় ছাড়বে দ্রুতযান। অপরদিকে, দিনাজপুর থেকে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। আর একতা ছাড়বে রাত ১০টায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন, রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, রেল শ্রমিকলীগের সভাপতি এড. হুমায়ুন কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন