আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে আগামী ৩ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বহুল প্রতীক্ষিত ৩০তম সম্মেলন। সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উচ্ছ¦াস। ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। নতুন নেতৃত্বে আসার জন্য দলের হাইকমান্ডের সাথে লিংক লবিংয়ে তৎপর নেতারা। কে আসছে আগামীর নেতৃত্বে তারই প্রতীক্ষায় প্রহর গুণছেন সবাই। এতদিন ছাত্ররাজনীতির পাঠশালা খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন-কেন্দ্রীক রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়মিত কার্যক্রম। কিন্তু সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরপরই মধুর ক্যান্টিনের বাইরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ের দিকেও পদযাত্রা দেখা যাচ্ছে নেতাদের। ছাত্রলীগের বিগত কমিটিগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডে যেসব নেতারা রয়েছেন তাদের এলাকা থেকেই তাদের সুপারিশে নেতা নির্বাচিত হয়। তাই এলাকা ভিত্তিক এসব নেতাদের কাছে তদবিরের আশায় ছুটছেন পদপ্রত্যাশীরা। তবে পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে সাংগঠনিক দক্ষতা, চারিত্রিক মাধুর্যতা, শিক্ষার্থীবান্ধব আওয়ামী পরিবারের নেতাদেরকেই নেতৃত্বে আনার কথা জানান দলের হাই কমান্ড। এছাড়াও করোনা মহামারীতে মানবিক কাজে যারা আলোচনায় এসেছেন তাদেরকেও বিবেচনা করা হবে বলে জানা যায়।
বিগত কয়েক বছরে নির্দিষ্ট কয়েকটি অঞ্চল থেকেই ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। এরমধ্যে বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ, খুলনা, এবং ময়মনসিংহ উল্লেখযোগ্য। নেতৃত্বের দৌঁড়ে এসব অঞ্চলের যেসব নেতারা এগিয়ে আছেন তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে রয়েছেন বর্তমান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, উপ-সাহিত্য সম্পাদক জয়জিৎ দত্ত।
উত্তরবঙ্গ থেকে আলোচনায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, সহ-সভাপতি রাকিব হোসেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। বরিশাল বিভাগ থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ, সহ-সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান), গণশিক্ষা বিষয়ক উপ-সম্পাদক সোলাইমান ইসলাম মুন্না, উপ-বিজ্ঞান সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়।
খুলনা বিভাগ থেকে রয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাধন, মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, উপ-বিজ্ঞান সম্পাদক খন্দকার হাবিব আহসান। ময়মনসিংহ থেকে আলোচনায় আছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সোহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সহ-সম্পাদক এসএম রাকিব সিরাজী, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপ সম্পাদক রশিদ শাহরিয়ার উদয় ও সহ-সম্পাদক শাকের আহমেদ আল আমিন। ঢাকার পার্শ্ববর্তী ছাত্রলীগের সাংগঠনিক বিভাগ ফরিদপুর থেকে আলোচনায় আছেন কর্মসংস্থান সম্পাদক রনি মোহাম্মদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, ঢাবির মুহসীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি শহীদুল হক শিশির।
এই সম্মেলনকে ঘিরে উচ্ছ¡াস, উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্য বিরাজ করছে সংগঠনের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে। পদপ্রত্যাশীদের প্রত্যাশা, আগামীতে নেতৃত্বে রাজপথে পরীক্ষিত, ত্যাগী, যোগ্য, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়, আওয়ামী পরিবারের সন্তান- এমন ছাত্রনেতাদের মূল্যায়ণ করা হবে। কেমন নেতৃত্ব আসছে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ইনকিলাবকে বলেন, সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন, সৎচরিত্র, ছাত্রসমাজের মাঝে গ্রহণযোগ্য ও পারিবারিকভাবে আওয়ামী ব্যাকরাউন্ডের হবে এরকম নেতাই সম্মেলনের মাধ্যমে বাছাই করা হবে। বয়সের বিষয়টি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান বিএম মোজাম্মেল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন