মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শত বাধা পেরিয়ে দু’দিন আগেই সমাবেশ মাঠে নেতাকর্মীদের ঢল

উৎসবের নগরীতে রূপ নিয়েছে গণসমাবেশস্থল

আনোয়ার জাহিদ/ আবুল হাসান সোহেল ফরিদপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ফরিদপুরে বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিভিন্ন স্থান থেকে আগত নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন সমাবেশ মাঠে। নেতাকর্মীরা মাঠে খাওয়া-দাওয়া শেষে শীতের রাতে খোলা আকাশের নিচে কেউ ঘুমিয়ে, কেউ গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। এছাড়া ফরিদপুরমুখী বিভিন্ন সড়কে পায়ে হেঁটে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আসতে দেখা গেছে। এদিকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির নেতা-কর্মীদের দুর্ভোগে ফেলতে যত প্রকার নাটক করা দরকার ছিল সব নাটকই তারা করেছেন। টেলিভিশন ও যাত্রা পালার অভিনেতাদেরও হার মানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। গতকাল বৃহস্পতিবার গণসমাবেশ সভাস্থল পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুইদিন আগে নগরকান্দা ও ফরিদপুরে পুলিশ ৯ জন নেতা-কর্মীকে আটক করছেন। বহু বাসা বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। আরো আটকের চেষ্টা ও চলছে। সাদা পোশাকে বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের বাসার সামনে গোয়েন্দাগিরি চলছে। তারপরও কোনো অপশক্তিই আমাদের গণসমাবেশ ঠেকাতে পারবে নাই ইন শা আল্লাহ। এই সমাবেশ দেড় লাখ লোকের সমাগম ঘটবে। এটা আমরা আশা করি।
এদিকে গণসমাবেশে অংশ নিতে মাদারীপুর জেলা থেকে কয়েক’শ নেতাকর্মী ফরিদপুরের কোমরপুরে জনসভাস্থল আব্দুল আজিজ ইন্সটিটিউট মাঠে এসে পৌঁছেছেন। গতকাল বিকেলে মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহŸায়ক অ্যাডভোকেট মো. জাফর আলী মিয়ার নেতৃত্বে তারা সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছান। অ্যাডভোকেট মো. জাফর আলী মিয়া জানান, ২৭ মাইক্রোবাস, ট্রাক বাস নিয়ে গণসমাবেশস্থলে এসে পৌঁছান তারা। প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী মাদারীপুর থেকে সমাবেশে যোগদান করবে বলে মাদারীপুরের বিভিন্নস্থান থেকে ফরিদপুরের দিকে আসছেন।
গণসমাবেশ এখন উৎসবে রূপ নিয়েছে। ফেস্টুন ব্যানারে সেজেছে শহরসহ সভা স্থল। ছেয়ে গেছে ফরিদপুর গণসমাবেশ অনুষ্ঠান দাওয়াতি পোস্টার ব্যানারে। ঈদের আনন্দ বিএনপির মধ্যে। আগামীকাল ১২ নভেম্বর ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই সমাবেশকে সামনে রেখে বৃহওর ফরিদপুর বাদেও পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরা, কুষ্টিয়া, নড়াইল, মুন্সিগঞ্জ জেলারও বহু নেতা-কর্মী ফরিদপুর শহর, উপশহর, প্রত্যন্ত অঞ্চল ও চরাঞ্চলে তাদের পুরানো আত্মীয়-স্বজন বন্ধু বান্ধবদের বাসা বাড়িতে উঠে পড়ছে। গণসমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগেই শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী সিংহভাগ নেতা-কর্মীরা সমাবেশ স্থল হাজির হয়েছেন। ফরিদপুর জেলা বিএনপি, মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের। জানা গেছে, ফরিদপুর জেলা ও উপজেলার ১০৮ ইউনিয়নের এমন কোনো বাসাবাড়ি নাই যে বাড়িতে সমাবেশ দেখতে শুনতে মেহমান অবস্থান করছেন না। মাঝে বাদ পড়ছে কিছু আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীর বাসা-বাড়ি।
ফরিদপুর জেলা বিএনপির গণসমাবেশের মিডিয়া সেল প্রধান এবি সিদ্দিকী মিতুল বলেন, ৯ উপজেলায় কমপক্ষে এখনই ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোক অবস্থান করছেন। গণসমাবেশের আর মাত্র একদিন। শহরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উঠছে সাজ সাজ রব। উৎসুক জনতার মধ্যে বিরাজ করছে উৎসাহ আনন্দ। গণসমাবেশকে সামনে রেখে হাজার হাজার কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছে।
জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করছেন, গণসমাবেশ শুরুর ২ থেকে ৩ দিন আগ থেকে যদি জেলা উপজেলা পর্যায়ের সকল যানবাহন বন্ধ করা হয় তাহলে, লোকের উপস্থিতিও কম হবে, নেতা-কর্মীরা ও আসতে পারবে না।
জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয়সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিমুজ্জামান সেলিম ভুঁইয়া বলেন, আসলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বুদ্ধি দাতারাই পাগল হয়ে গেছেন। আপনারা দেখেছেন পার্শ্ববর্তী বিভাগ বরিশাল ও খুলনার গণসমাবেশ বানচাল করতে বহু নাটক করছেন আওয়ামী লীগের কোনো কাজ হয়নি। কারণ আল্লাহ রহমতে এখন বিএনপির সহায়ক শক্তি হয়ে গেছেন।
জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান এ জে এম জাহিদ হোসেন বলেন, ফরিদপুরের গণসমাবেশ এখন ঈদের আনন্দের উৎসবে পরিণত হয়েছে। সমাবেশস্থলে ইতোমধ্যেই আশপাশের জেলা উপজেলা থেকে নেতা-কর্মী সমর্থক আসতে শুরু করছেন। কারণ শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার ৮ পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকবে। তাই গণসমাবেশ হাজির হতে ফরিদপুরে আসতে পিঁপড়া সারির মতো মানুষ ছুটে আসছেন। আমরা আশা করি ফরিদপুরে জনতার ঢল নামবে।
কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল বলেন, কোনো গায়েবি আওয়াজে পরিবহন বন্ধ হয়। আবার গায়েবি দাবি দাওয়া মানলেই ধর্মঘট খুলে দেওয়া হয়। এই সকল তামাশা আমরা বুঝি। এটা একটি অলিখিত ধর্মঘট। মুল কারণ হচ্ছে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশে স্থলে আসতে না পারে এটাই বাস-ট্রাক লঞ্চ বন্ধ রাখার একটি কথিত কৌশল। :
এসময় সমাবেশ স্থলে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহŸায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদারেস আলী ইছা, থানা বিএনপির সভাপতি রউফ উননবী, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহŸায়ক যথাক্রমে, আতাউর রশিদ বাচ্চ, আবজাল হোসেন খান পলাশ, সৈয়দ জুলফিকর হোসেন জুয়েল, মোস্তাক হোসেন বাবলুসহ, পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলার বিএনপির সকল অঙ্গদলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের তৎরপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা, জনগণের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক দায়িত্ব নির্বিঘœ রাখতে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে মাদারীপুর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজ হাওলাদার জানান, ফরিদপুর বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাস মালিক সমিতি ১১ নভেম্বর স্থানীয় বাস চলাচল বন্ধ রাখবে না তবে দুরপাল্লার বাস চলাচলের বিষয় সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Rajib Mazumder ১১ নভেম্বর, ২০২২, ৯:৪৫ এএম says : 0
শনিবার (১২ নভেম্বর) ফরিদপুরে বিএনপির গণসমাবেশকে সামনে রেখে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ রাখার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে শহর ও আশপাশের এলাকায় বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে অটোরিকশায় মাইকিং করতে শোনা গেছে।
Total Reply(0)
H B Harun ১১ নভেম্বর, ২০২২, ৯:৪৪ এএম says : 0
সমাবেশ মহাসমাবেশে রূপ নেবে ইনশাআল্লাহ
Total Reply(0)
শওকত আকবর ১১ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৭ এএম says : 0
আমাদের কে ইতিহাস থেকে শিখ্খা নিতে হবে।আমরা যেন ইতিহাস ভুলে না যাই।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন