শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

থাকছে নাগরিকের উন্নততর জীবন নিশ্চিতের বিধান

রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

পরিকল্পিত ও আধুনিক নগর স্থাপন, নগরের ভূপ্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ রোধ করা, তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং উন্নতর নাগরিক জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২২’-এর খসড়া প্রণয়ন করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন পর এ সংক্রান্ত আইনের খসড়াটি সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আগামীতে যে কোনোদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো কার্যপত্রে বলা হয়, গত ২০১৪ সালে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে রংপুরসহ তিন সিটির জন্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। খসড়া আইনের অধীনে রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন এবং তার কার্যাবলি উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ আরোপ এবং আইন লঙ্ঘনে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

আইনের খসড়ায় বলা হয়, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকা এবং সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সংলগ্ন এলাকায় প্রযোজ্য হবে। আইন কার্যকর হওয়ার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করবে। সরকার নির্ধারিত তারিখ থেকে তা কার্যকর হবে। কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় সিটি কর্পোরেশন এলাকায় হবে।

কর্তৃপক্ষে কারা থাকছে, একজন চেয়ারম্যানর নেতৃত্বে সরকার প্রেষণে নিয়োগকৃত চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য, সরকার মনোনীত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক প্রতিনিধি। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় মনোনীত উপসচিব পদমর্যাদার একজন করে প্রতিনিধি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় মনোনীত গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি। পুলিশ কমিশনার মনোনীত উপপুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থাপত্য অধিদফতর মনোনীত নির্বাহী স্থপতি পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় বসবাসরত সরকার মনোনীত ৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক (একজন মহিলা), রংপুর শিল্প ও বণিক সমমিতির একজন প্রতিনিধি, রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রদান নির্বাহী কর্মকর্তা। তাদের মেয়াদ ৩ বছর।

কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা আইনে বলা হয়, ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, ভূমি সংক্রান্ত জরিপ, তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা ও গবেষণা, ভূমির উপর যে কোনো প্রকৃতির অপরিকল্পিত উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় পর্যটন মহাপরিকল্পনায় প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যাবলি গ্রহণ, সড়ক, মহাসড়ক, নৌপথ, রেলপথ নির্মাণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমন্বয় সাধন, কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে বিধিবহির্ভূত স্থাপনা অপসারণ অপরিকল্পিত, অপ্রশস্ত ও ঘনবসতি অপসারণক্রমে নূতন আবাসন প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং এলাকার বাসিন্দাগণের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, নিম্নবিত্ত, বস্তিবাসী এবং গৃহহীনদের আবাসন সমস্যার অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও উহার বাস্তবায়ন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এরূপ কোনো এলাকার জন্য উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি এবং উক্ত এলাকার ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন বা কোনো ইমারত বা স্থাপনার পরিবর্তনের উপর অনধিক এক বৎসর পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ, প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে পর্যাপ্তসংখ্যক বনায়ন ও সবুজ বেষ্টনী তৈরি ও সংরক্ষণ,কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ বা বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থ ব্যয়ে দেশি-বিদেশি বা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে পরামর্শ বা সহযোগিতা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, দেশি অথবা বিদেশি ব্যক্তি, সরকারি বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিনিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।

মহাপরিকল্পনা পরিপন্থি ভূমি ব্যবহারের দণ্ড : যদি কোনো ব্যক্তি মহাপরিকল্পনা অধীন অনুমতি ছাড়া অন্য কেনো উদ্দেশ্যে ভূমি ব্যবহার করেন তাহলে অপরাধস্বরূপ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ইমারত নির্মাণ, পানিধার খনন, চালা অথবা উঁচু ভূমি ইত্যাদি বিষয়ে বিধিনিষেধ: কর্তৃপক্ষের অওতাধীন এলাকার মধ্যে অনুমতি ছাড়া কোনো ইমারত নির্মাণ বা পুননির্মাণ, পুকুর বা কৃত্রিম নালা খনন বা পুনঃখনন কিংবা চালা বা উঁচু ভূমি কাটা যাবে না। যদি কোনো ব্যক্তি এই ধারার কোনো বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তার ২ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

কৃত্রিম পানিধার খনন, টিলাকাটা স্থগিতকরণ : কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে কোনো কৃত্রিম পানিধারের খননকাজ বা টিলা কাটার কাজ স্থগিত বা বন্ধ করতে মালিককে নির্দেশ দিতে পারবেন। কোনো ব্যক্তি তা লঙ্ঘন করলে অনধিক দুই বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তীতে একই অপরাধের জন্য কমপক্ষে ২ বছর এবং অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড বা কমপক্ষে ২ লাখ এবং অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
নিচু ভূমি ভরাট বা প্রাকৃতিক পানিধারের পানিপ্রবাহে বাধাদানে বিধিনিষেধ: কর্তৃপক্ষের অনুমনতি ছাড়া কোনো এলাকার নিচু ভূমি ভরাট বা প্রাকৃতিক পানিধারের পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত বা কোনো নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর, ডোবা, প্রাকৃতিক নালাধারের পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি তা লঙ্ঘন করলে প্রথমবার অনধিক ২ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে এবং প্রতিবার অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ বছর, অনধিক ১০ বছর বা কমপক্ষে ২ লাখ টাকা এবং অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন