দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের কারা কারা দুর্নীতি করে আমরা জানি। সময় আছে সংশোধন হয়ে যান। নইলে খবর আছে। তিনি আরো বলেন, নেত্রী বলেছেন বিলাসবহুল সম্মেলন করা যাবে না। সাশ্রয়ী হতে হবে। গরীবের পাশে দাড়াতে হবে। অপচয় করা যাবে না। অথচ বিলবোর্ড বানিয়ে সবাইকে নায়ক বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এতো আয়োজন অথচ হেলিকপ্টার থেকে নেমে দেখি আমার নামের বানান ভুল।
গতকাল ঝিনাইদহ শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগে আপনি বলতেন, এখন তুমি বলে। আগামী মিটিংয়ে হয়তো তুই বলবে। এ সব তিনি কেন বলেন? অর্ন্ত জ্বালায়। ওরে জ¦ালা শেখ হাসিনার উন্নয়নের অর্ন্ত জ্বালায় ভুগছেন তিনি।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ১৫ই আগস্টের মীরজাফর ও পলাশীর বিশ্বাসঘাতকের সঙ্গে তুলনা করে তিনি আরও বলেন, সেদিন ইতিহাসের মহানায়ক মহাবীর বঙ্গবন্ধুর নাম ওরা মুছে দিতে চেয়েছিল, শিশু রাসেলকে হত্যা করেছিল। মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ও জামালকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কে বলেছে বঙ্গবন্ধু নেই? তিনি আছেন কৃষকের লাঙ্গলের ফালে, ভাটিয়ালি গানে, পাখির কলরবে। যতদিন সমুদ্রের গর্জন থাকবে, তোমার স্মৃতি কেউ মুছে দিতে পারবে না। তোমার নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই। লালনের স্মৃতি বিজড়িত এই ঝিনাইদহের বিশাল সমাবেশ সে কথাই প্রমাণ করে। তিনি বলেন, এতো ফ্লাই ওভার, মেট্্েরারেল, পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল। দেশবাসি আর কি চাই? এ সব উন্নয়ন মীর্জা ফখরুলদের সহ্য হয়না। তাই ওদের মন খারাপ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভোট চুরি ও ভুয়া ভোটারের বিরুদ্ধে খেলা হবে। লুটপাট দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। আপনারা প্রস্তুত হয়ে যান। এই খেলায় বিএনপির আন্দোলন ও নির্বাচনের পতন হবে। বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, দুবাই থেকে আনা টাকার বস্তা নিয়ে আপনি মাঠে নেমেছেন। আকাশে বাতাসে এখন টাকা ওড়ে। বরিশাল ও ফরিদপুর সমাবেশে টাকা ওড়ে। এখন থেকেই মনোনয়ন বাণিজ্য ও এমপি মন্ত্রী কেনাবেচা শুরু করেছেন বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ এসব হতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামা বাড়ির আবদার। তত্ত্বাবধায়ক ভুলে যান। সন্ত্রাস করে, আগুন দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।
তিনি তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে বলেন, আর রাজনীতি করবো না এমন মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়েছেন। অর্থ পাচার মামলায় দণ্ড নিয়ে একজন পলাতক আসামিকে যদি নেতা বানানো হয়, তবে খেলা হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।
সম্মেলন শেষে ওবায়দুল কাদের জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে পুনরায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন