একটি নাটক ও টেলিভিশনে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’ ধারণা এবং শব্দ ব্যবহারের অভিযোগে অভিনেতা আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে হাজির হওয়ার সমন (নোটিশ) জারি করা হয়েছে। বুধবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান রিভিশন মামলা গ্রহণ করে আগামী ২৫ এপ্রিল আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন—চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, নাটকের চিত্রনাট্যকার মঈনুল সানু ও পরিচালক রুবেল হাসান।
এর আগে চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমান সিদ্দিকীর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এরপর গত ৩১ অক্টোবর বাদী নারাজি দিলে আদালত তা নামঞ্জুর করে মামলার দায় থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেন। এরপর এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত রিভিশন মামলা করেন। চাইল্ড ফাউন্ডেশনের পক্ষে নাবিলা আক্তার এই মামলা করেন। আদালত শুনানি শেষে মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘ঘটনা সত্য’ নাটকে দেখানো সংলাপে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তার বাবা-মা ও পরিবারকে ‘ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’
দ্বিতীয় মামলাটি করা হয় চ্যানেল আইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠানে গত ১১ জুলাইয়ের ‘টু দ্য পয়েন্ট’-এর পর্ব নিয়ে, যেখানে একজন আলোচকের কথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে ‘নেতিবাচক ধারণা’র প্রকাশ ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, অনুষ্ঠান পরিকল্পনাকারী জাহিদ নেওয়াজ খান, প্রযোজক রাজু আলিম, উপস্থাপক সোমা ইসলাম ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে।
মামলায় বাদীর অভিযোগ ‘টু দ্য পয়েন্ট’ অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলের খেলা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের একটি মন্তব্য নিয়ে। অভিযোগ করা হয়, ওই টকশোতে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমার নিজের ছেলেটারে প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা আমি এখন আর্জেন্টিনার ছেলে এবং ব্রাজিলের ছেলে নিয়া লাফাচ্ছি। লাফানো ঠিক আছে। আমরা অনেক ছোটবেলা থেকে ম্যারাডোনার ভক্ত, কিন্তু নিজের ছেলেটারে এভাবে প্রতিবন্ধী বানাবো? দেশের ফুটবল খেলার মানের অবনতি, দুর্বল ব্যবস্থাপনা, ব্যর্থতা ও অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে ‘প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা’ এবং ‘এভাবে প্রতিবন্ধী বানাবো’ শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’ ধারণা দেওয়া হয়েছে বলে বাদীর অভিযোগ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন