বুধবার , ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯ আশ্বিন ১৪৩০, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ফিরে দেখা বিজয়ের মাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

আজ ১ ডিসেম্বর। পূর্ণ হলো গৌরবময় বিজয়ের ৫১ বছর। ১৯৭১ সালে এ মাসে গোটা জাতি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তির স্বাদ লাভ করে। বাংলাদেশের বুকে স্বাধীনতার রক্তলাল সূর্যোদয়ের ভিত্তি সূচিত হয়েছিল বেশ আগেই। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্দীপ্ত বাঙালি জাতি দৃঢ় শপথ নিয়েছিল স্বাধীনতা অর্জনের। ২৫ মার্চের নির্মম নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তারা রুখে দাঁড়িয়েছিল শোষণের বিরুদ্ধে।

বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খন্ড। আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে। তবে এ মাসের প্রতিটি দিনই ছিল ঘটনাবহুল।

বাংলাদেশের এ সগৌরব অভ্যুদয় মানতে পারেনি অনেকেই। একাত্তরে যখন বাঙালি স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়ে লড়াই করছে, তখন কিছু মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে তাদের সহায়তা করেছে। এই স্বল্পসংখ্যক মানুষ নিয়ে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত হয়েছিল রাজাকার ও আলবদর বাহিনী। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই বাহিনীর সদস্যরা ত্রাসের সঞ্চার করেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল চিনত না। তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গেছে রাজাকার-আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। হত্যা করেছে দেশের সূর্যসন্তানদের। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে, বাঙালির বিজয় যখন নিশ্চিত প্রায় তখন বেছে বেছে দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। দেশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারলেও মেধাহীন করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে যে ষড়যন্ত্রের শুরু, তা স্বাধীনতার পরও থেমে থাকেনি। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও সপিরবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। যেমন দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। স্বাধীনতাকামী বাঙালির হৃদয়ে বিজয়ের বৈজয়ন্তী উড়িয়ে এসেছিল সেই সোনাঝরা গৌরবের দিনগুলো। বছর ঘুরে আজ আবার এসেছে সেই ডিসেম্বর। স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন হৃদয়ে লালন করেছে বাঙালি যুগে যুগে। ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তারই হাত ধরে পূরণ হয়েছিল সেই আজন্ম লালিত স্বপ্ন।

ত্রিশ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সাক্ষর বিজয়ের মাস বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হবে। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক,ও অর্থনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে।

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দেশের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনগুলো প্রতিবছর দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসাবে পালন করে থাকে। এবারও তারা দিনটি পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক রাজনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে।###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
zarin tasnim ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:১১ পিএম says : 0
বিজয়ের ৫১ বছরে নারী অর্জন ও ভবিষ্যৎ স্বপ্ন সম্পর্কে কিচছু জানাবেন আসা রাখি
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন