শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

রেমিট্যান্স কমার প্রধান কারণ হুন্ডি : বিআইডিএস

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৫৩ পিএম

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে হুন্ডিকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা। এমনকি ডলারের দাম যাই ধরা হোক হুন্ডিতে তার চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ ও রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করা হচ্ছে।

মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমেও এখন রেমিট্যান্স পাঠানো যাবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা চিন্তা করলে হবে না। আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে প্রবৃদ্ধি স্যাক্রিফাইস করে হলেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে গিয়ে ৬ শতাংশ হলেও খারাপ কিছু হবে না।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে এমন তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথমদিন ৯টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই’র ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ। দ্বিতীয় অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। এসময় সভাপতিত্ব করেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান।

মূল প্রবন্ধে সাদিক আহমেদ বলেন, করোনা মহামারি পরবর্তী অবস্থায় বাংলাদেশ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেগুলো অব্যাহত রাখা ঠিক হবে না। কেননা এখন প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়ার সময় নয়। এখন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে। এজন্য সুদের হারের ঊধ্র্বসীমা তুলে দেওয়া, মুদ্রা বিনিয়ম হার বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া, আমদানি নিয়ন্ত্রণ না করা এবং এলসি খোলা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। চাহিদার ওপর ছেড়ে দিতে হবে। এছাড়া রাজস্ব আদায় বাড়ানোসহ কাঠামোগত সংস্কার দরকার। বিশেষ করে একটি কর কমিশন গঠন করা যেতে যাতে। কেননা বাংলাদেশের কর আদায় হার বিশ্বের প্রায় সব দেশের চেয়ে কম। এসব উদ্যোগ নিলে চলতি অর্থবছর হয়তো প্রবৃদ্ধি কমে ৬ শতাংশ হতে পারে। তিনি বলেন, রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার প্রধান কারণই হচ্ছে হুন্ডি। ডলারের দাম যাই ধরা হোক হুন্ডিতে সবসময় ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দেবে। এজন্য হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ ও রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করা হচ্ছে।

অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কিছু বড় বড় শিল্প গ্রুপের মুনাফা অর্জনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকলেও তারা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করে খেলাপি হয়ে যায়। এর একটা কারণ হলো অবৈধভাবে বিদেশে মুনাফা পাচার। এক্ষেত্রে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে বাববার ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ, সুদ মওকুফ ইত্যাদি সুবিধা দিতে হয়। কিন্তু এর পরিবর্তে সরকার আর্থিক সহায়তার অংশ হিসেবে মুনাফা অর্জনকারী কোম্পানিগুলোর কিছু শেয়ার সমমূল্যে অর্থাৎ শেয়ারপত্রে উল্লেখিত দামে কিনে নিতে পারে। এছাড়া ভালো কোম্পানি বাজারে শেয়ার ছাড়লেও সরকার আইন করে তার কিছু অংশও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উল্লেখিত দামে কিনে নিতে পারে।

তিনি বলেন, কর নীতির কিছু বড় পরিবর্তনও বিবেচনা করা যায়। আমাদের দেশে সম্পত্তির উত্তরাধিকারে কর নেই, অথচ শিল্পোন্নত দেশগুলোতে উচ্চ হারে এ ধরনের কর আরোপ করা হয়। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করা দরকার। বিনিয়োগের বাধা হিসেবে ব্যবসার পরিবেশের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি, বিশেষ করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন