নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বান্দরবান, রাঙামাটি ও কাপ্তাইে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার র্যালি, মটর শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পার্বত্য এলাকার ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায় ও বাঙালিরা মিলে বর্ণিল পোশাক, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. লুৎফুর রহমান, পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এটি এম কাউছার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শান্তি চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তিতে বান্দরবানে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সেনাবাহিনীর উদ্যোগে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভার পাশাপাশি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ অসহায়দের জন্য দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া বান্দরবান সেনাবাহিনীর আওতাধীন ১৪টি জোনের উদ্যোগে ৫০০ অসহায়ের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি থেকে, রাঙামাটিতেও শান্তি চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি পালন করা হয়েছে। সকালে রাঙামাটি কলেজ মাঠে কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রাঙামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারলে ইমতাজ উদ্দিন ও রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী।
এ সময় রাঙামাটি বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তরিকুল ইসলাম, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল আশিকুর রহমান, রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা উপস্থিত ছিলেন।
খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতা : পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি : সরকারি তথ্য মতে, বর্তমান সরকার গত ২৫ বছরে শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন করেছে। চুক্তির অবশিষ্ট ১৫টি ধারা আংশিক এবং ৯টি ধারা বর্তমানে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পার্বত্য সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পরেও থামেনি সংঘাত। এই সংঘাতের পেছনে রয়েছে সন্তু লারমার অবৈধ অস্ত্রের মজুদ। শান্তি চুক্তির নামে সন্তু লারমা সরকারের চোখে ধুলো দিয়ে অস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আখড়া তৈরি করে রেখেছেন দুর্গম পাহাড়ে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলের যে উন্নয়নের মহোৎসব চলছে তার একটি উদাহরণ হলো, চলতি বছরে এক দিনেই পার্বত্য এলাকায় ৪২টি ব্রিজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিটি উপজেলায় সরকারি স্কুল-কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজসহ নানা ধরনের উন্নয়ন হচ্ছে। যা সম্ভব হয়েছে শান্তি চুক্তির কারণেই।
কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) উপজেলা সংবাদদাতা, গতকাল শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে কাপ্তাই সেনাজোন অটল ছাপ্পান্ন আয়োজনে শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এক র্যালি, মটর শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি কাপ্তাই জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল নূর উল্লাহ জুয়েল বলেন, কাপ্তাই জোন এলাকায় কেউ এক বিন্দু অশান্তি সৃষ্ঠি করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। পাহাড়ে বর্তমান সরকার উন্নয়ন করে চলছে। কেউ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সর্বদা শান্তিশৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছি। আসুন আমরা সকলে বিভেদ ভুলে গিয়ে পার্বত্য এলাকায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। এসময় বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, ৪ নম্বর ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ ও ভাইজ্যাতলী হেডম্যান থোয়াই অং মারমা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন