শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

টানা বিক্ষোভের জেরে নীতি পুলিশ বিলুপ্ত করছে ইরান

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:১৯ এএম | আপডেট : ১১:৪৭ এএম, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২

ইরানে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের পর নীতি পুলিশ ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার কথা জানিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মোনতেজারি। খবর রয়টার্সের। তিনি বলেন, ‘ইরানের বিচার বিভাগের সঙ্গে নীতি পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।’

রোববার এক ধর্মীয় সমাবেশে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নীতি পুলিশ বন্ধ করা হচ্ছে কিনা? জবাবে তিনি ওই মন্তব্য করেন। তবে মোনতাজেরির এই মন্তব্য এখনও অন্য কোনও সংস্থা নিশ্চিত করেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইরানের কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের আমলে দেশটিতে নীতি পুলিশি ব্যবস্থা চালু হয়। তখন বলা হয়েছিল, তারা ‘শালীনতা ও হিজাবের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে’ এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

দেশটিতে ২০০৬ সালে নীতি পুলিশ ইউনিট যাত্রা শুরু করেছিল। এ বছর ১৬ সেপ্টেম্বর মাশা আমিনি নামে ২২ বছরের এক কুর্দি নারী তেহরানে নীতি পুলিশের হেফাজতে মারা যান।

মারা যাওয়ার তিনদিন আগে ভাইয়ের সঙ্গে তেহরান গিয়ে নীতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাশা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি হিজাব ঠিকমত পরেননি।

মাশার পরিবারের দাবি, গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ মাশার মাথায় তাদের লাঠি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করে এবং তাদের গাড়িতে মাশার মাথা জোরে ঠুকে দেয়। আর তাতেই অজ্ঞান হয়ে কোমায় চলে যান মাশা।

হাসপাতালে তিনদিন কোমায় থাকার পর মারা যান ওই তরুণী। পুলিশের দাবি তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

১৭ সেপ্টেম্বর নিজ শহরে দাফন মাশার হয় এবং তার দাফনের পর মাশার মৃত্যুর বিচার চেয়ে সেখানে বিক্ষোভ হয়।

যে বিক্ষোভ একে একে পুরো ইরান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ইরান সরকার কঠোর হাতে ওই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে। সরকার যত কঠোর হয়েছে বিক্ষোভে আগুন তত উসকে উঠেছে। এই বিক্ষোভে নারীদের অংশগ্রহণ উল্লেখ করার মত।

বিক্ষোভে অনেক মানুষ প্রাণ হারান। মাশা আমিনি হত্যার বিচার চেয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ নারীদের স্বাধীনতার অধিকারের দাবি এবং ইরানের বর্তমান সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়।

প্রথমে স্বীকার না করলেও ইরানের নিরাপত্তা ‍বাহিনী পরে স্বীকার করেছে, বিক্ষোভে তাদের সদস্যসহ মোট ২০০ জন নিহত হয়েছেন।


যদিও জাতিসংঘ ও একাধিক মানবাধিকার সংস্থা বলছে, তৃতীয় মাসে পড়া এ বিক্ষোভ এরই মধ্যে তিনশর বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

দেশের বাইরেও ইরানের চলমান বিক্ষোভের পক্ষে জনমত গড়ে উঠেছে। অনেকেই প্রকাশ্যে বিক্ষোভের পক্ষে তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন