সঠিক দেখভাল ও সংস্কারের অভাবে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পটির অধিকাংশ স্থানে বড় ধরনের মেরামতের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে নীলফামারী অঞ্চলে এক সময় প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া হলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ২৫ ভাগেরও নিচে। তবে এবার বোরো মৌসুম সামনে রেখে তিস্তা সেচ প্রকল্পের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বোরো মৌসুম সামনে রেখে চলছে তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের কাজ।
নীলফামারী কৃষিপ্রধান এলাকা। এখানকার প্রধান ফসলই হচ্ছে ধান। ধানের আবাদকে গুরুত্ব দিয়েই নব্বইয়ের দশক থেকে তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অল্প খরচে সেচ সুবিধা দেয়া শুরু হয়। ফলে এই তিস্তা ব্যারেজকে কেন্দ্র করে কৃষকরা স্বপ্ন বোনে কম খরচে ধান আবাদ করার। প্রধান সেচ খালসহ নীলফামারী অঞ্চলে সেকেন্ডারি-টারশিয়ারিসহ মোট খালের পরিমাণ ২৭০ কিলোমিটার।
তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সংস্কার না হওয়ায় অধিকাংশ ক্যানেলেরই এখন বেহাল দশা। অধিকাংশ টারশিয়ারি খালের জীর্ণ দশার কারণে সেগুলো দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় না। গত আমন মৌসুমে নীলফামারীতে অতিরিক্ত খরা থাকলেও সেচ দেয়া হয়েছে মাত্র ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে। প্রধান ক্যানেলগুলোতে পানি থাকলেও সেকেন্ডারি এবং টারশিয়ারি খালের বেশির ভাগ অংশেই থাকে না পানি। ফলে সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নীলফামারী অঞ্চলের কৃষকরা। তবে বোরো মৌসুম সামনে রেখে জোরেশোরে শুরু হয়েছে সেচ প্রকল্পের কাজ।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে ১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকার তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের উন্নয়নের কাজ চলছে। উন্নয়ন প্রকল্প চলমান থাকায় সেচ কাজে কিছুটা বাধা হলেও বোরো মৌসুম ঘিরে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, এবার কিছুটা হলেও পানি বেশি দিতে পারব।’
নীলফামারীতে এ কাজের অংশ হিসেবে ২০০ কিলোমিটার ক্যানেল সংস্কারসহ সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। মোট প্রকল্প খরচের মধ্যে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা নীলফামারী অঞ্চলে ব্যয় হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন