পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) সোমবার তোশাখানা মামলায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীর রায়ের আলোকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান পদ থেকে ইমরান খানকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
ইসিপির একজন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যম ডনকে বলেছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে এবং মামলাটি ১৩ ডিসেম্বর শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে। পিটিআই-এর সূত্রগুলো এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তবে জোর দিয়ে বলেছে যে, এ আইনে দোষী সাব্যস্ত হলেও তা কাউকে একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষপদে থাকতে বাধা দেয় না।
বর্তমানে বিলুপ্ত রাজনৈতিক দল আদেশ (পিপিও) ২০০২ এর ধারা ৫(১) অনুসারে, ‘প্রত্যেক নাগরিকের... একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার বা সদস্য হওয়ার বা অন্যভাবে একটি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হওয়ার বা রাজনীতিতে অংশ নেয়ার অধিকার থাকবে। একটি রাজনৈতিক দলের একজন পদাধিকারী হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য শর্ত থাকে যে একজন ব্যক্তি রাজনৈতিক দলের একজন পদাধিকারী হিসেবে নিযুক্ত বা দায়িত্ব পালন করবেন না যদি তিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের সংবিধানের ৬৩ অনুচ্ছেদের অধীনে বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীনে মজলিস-ই-শূরা (সংসদ) এর সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হন।
নির্বাচন আইন ২০১৭ যদিও বিধানটি ধরে রাখে নি। কিন্তু, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ, নির্বাচন আইনের বিরুদ্ধে পিটিশনের শুনানির সময় রায় দেয় যে, সংবিধানের ৬২ এবং ৬৩ অনুচ্ছেদের অধীনে অযোগ্য ব্যক্তি রাজনৈতিক দলের প্রধান হতে পারবেন না। ৬২(১)(এফ) ধারার অধীনে সর্বোচ্চ আদালত তাকে অযোগ্য ঘোষণা করার পর এই রায়টি পিএমএল-এন-এর প্রধান হিসেবে নওয়াজ শরীফকে অপসারণের পথ প্রশস্ত করেছে।
শুনানি চলাকালে বিচারপতি ইজাজুল আহসান মন্তব্য করেন, দলের প্রধান কলুষিত হলে পুরো স্রোতই দূষিত হবে। তিনি বলেছিলেন যে, একজন অযোগ্য ব্যক্তির পক্ষে দলের নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার থাকা উচিত নয় কারণ যোগ্য ব্যক্তিদের অযোগ্য ব্যক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত নয়।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণার পর পিটিআই চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের জন্য একটি পিটিশন ইতিমধ্যেই লাহোর হাইকোর্টে বিচারাধীন। পিটিশনে বলা হয়েছে যে, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৭৬ এবং পলিটিক্যাল পার্টিস অর্ডার (পিপিও) ২০০২ অনুযায়ী, সংবিধানের ৬২ এবং ৬৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে, পার্টি প্রধানের যোগ্য হওয়া একটি আইনি ও সাংবিধানিক প্রয়োজন। সূত্র: ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন