বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বর্ষপূর্তি মঙ্গলবার। আর সেদিনই মথুরার ইদগাহ মসজিদে হনুমান চালিসা পাঠের ডাক দিল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। এই ঘোষণার পর থেকেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জেলা পুলিশের প্রধান জানিয়ে দিয়েছেন, এই ধরনের কোনও ধর্মীয় আচরণের অনুমতি দেয়া হবে না।
এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে পুলিশে। পুলিশ, সশস্ত্র কনস্টেবল ও আধা সেনাকর্মী মিলিয়ে প্রায় হাজার দেড়েক নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন রয়েছে মসদিজ চত্বরে। এলাকায় যান চলাচলেও কড়াকড়ি করা হয়েছে। কেবল মাত্র স্কুলের গাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্সকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এদিকে হিন্দু মহাসভার জাতীয় কোষাধ্যক্ষ দীনেশ কৌশিক দাবি করেছেন, তারা মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করবেন। বাধা দেয়া হলে সেখানেই বসে হনুমান চালিসা পাঠ করবেন তারা। উল্লেখ্য, গত বছরও তারা এমন দাবি করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের তৎপরতায় তা কার্যকর করা যায়নি।
‘বাবরি তো ঝাকি হ্যায়, মথুরা কাশী বাকি হ্যায়।’ নয়ের দশকে করসেবকদের এই হুঙ্কার ভোলার নয়। মথুরা ও কাশী নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের নানা দাবি এর আগেও শোনা গিয়েছে। ‘অল ইন্ডিয়া আখড়া পরিষদ’কে বলতে শোনা গিয়েছিল, রাম মন্দিরের নির্মাণ শেষ হলে মথুরা ও কাশীর মন্দিরগুলিকে ‘মুক্ত’ করা হবে। সেই বিতর্কের আবহ এখনও একই রকম রয়েছে।
আধ্যাত্মিক শহর মথুরাকে ঘিরে হিন্দুদের বিশ্বাস, ওই জায়গাটি শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান। সেই মন্দির চত্বরেই রয়েছে শাহি ঈদগাহ মসজিদ। ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, প্রাচীন কেশবনাথ মন্দির ভেঙেই মসজিদটি তৈরি করেন আওরঙ্গজেব। ১৯৩৫ সালে ওই মন্দির চত্বরের মালিকানা মথুরার রাজার হাতে সঁপে দেয় ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। পর্যায়ক্রমে সেই সত্ব বর্তায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ঘনিষ্ঠ শ্রী কৃষ্ণভূমি ট্রাস্টের হাতে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে তৈরি হয় সংঘাত। অবশেষে ১৯৬৮ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে জমির মালিকানা হিন্দুদের হাতে থাকলেও মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকার পায় মুসলিম পক্ষ। সূত্র: টাইমস নাউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন