ইমরান খান : তারকরা সাধারণত আপনার কার্ডের পরিচয় বা তথ্যের ভিত্তিতে চুরি করে থাকে। এটা বিভিন্নভাবে হতে পারে। এক্সপেরিয়ান ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহন জয়রাম বলেন, আপনি যখন কার্ড রিডার স্লটে কার্ড ঢোকান তখন ডাটা স্কিমিং ডিভাইস দিয়ে আপনার কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ থেকে তথ্য চুরি করে প্রতারকরা। পাশাপাশি কাছাকাছি কোথাও তারা ক্যামেরা বসায় আপনার পিন চুরি করার জন্য। এরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে যখন আপনি কার্ড ঢোকালেন কিন্তু বের হতে সময় নিল, বা আঁটকে গেল। বুথে ঢুকে কোন সমস্যায় পড়লেন, হতে পারে আপনার কার্ড আঁটকে গেল, বুথের ভিতরে বা বাইরের কেউ স্বত:স্ফুর্তভাবে এসে আপনার ঘাড়ের উপর দিয়ে উঁকি দিল, আপনাকে সাহায্য করবে বলে। সতর্ক হোন, তিনি আপনার পিন চুরি করতে পারে।
আপনি যদি কার্ডের উপর পিন নাম্বার লিখে রাখেন, আর যদি সেটা বুথে আঁটকে যায়, বা হারিয়ে যায়, আপনি কিন্তু চোরকে আমন্ত্রণ দিলেন। ই-শপিং বা অনলাইনে বিল পেমেন্টের মাধ্যমে প্রতারণা হতে পারে। মুম্বাইয়ের গিরিস পেসওয়ানি বলেন, আমি আমার অফিসে ছিলাম। এসময় আমার ফোনে অ্যালার্ট আসে যে আমার কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে লেনদেন হয়েছে।এই প্রক্রিয়ায় প্রতারকরা নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে যা দেখতে হুবহু আসলের মতোই। আপনি সেখানে কেনাকাটা বা লেনদেন করলেই আপনার কার্ডের তথ্য প্রতারকরা নিয়ে নিবে। অনেক সময় নিজের অজান্তেই কোনো সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ফেলেন। এতে প্রতারকরা আপনার কার্ডের তথ্য, পাসওয়ার্ড এবং ব্যাংকিং তথ্য পেয়ে যেতে পারে। যদি আপনি আপনার স্মার্টফোন ব্যবহার করে পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লেনদেন করেন, হ্যাকারদের জন্য চুরি করার এটা একটা দারুণ সুযোগ। ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে হ্যাকার বা প্রতারকরা এটিএম বা ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমকে অকেজো করে দিতে পারে, যা তাদেরকে কার্ডের গোপন তথ্য সরবরাহে সুযোগ করে দেয়। প্রতারণার এটা সবচেয়ে কার্যকরী উপায় যখন আপনি আপনার কার্ডটি সেলসপার্সনকে দিলেন সোয়্যাপ করার জন্য। কার্ডের তথ্য কপি করে পরবর্তীতে খারাপ উদ্দেশে ব্যবহার করা হতে পারে। আপনার ইমেইলের স্প্যাম মেইলের মাধ্যমে আপনার কার্ডের পাসওয়ার্ড বা অ্যাকাউন্ট নাম্বার চুরি হতে পারে। প্রতারকরা আপনার মোবাইল অপারেটরের কাছে ফোন করে ভুয়া পরিচয়ে ডুপ্লিকেট সিম তুলতে পারে। অপারেটররা আপনার অরিজিনাল সিম নিস্ক্রিয় করে দেয়। চোরেরা ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) তৈরি করে আপনার অনলাইন লেনদেন চালাতে পারে। প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ কোম্পানির বাইরে অনেক কোম্পানি আছে যেগুলো থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করলে আপনার ফোনে তারা ঢুকে তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। চুরি যাওয়া কার্ড দিয়েও প্রতারণা হতে পারে। আবেদনপত্র বা বাতিল নথি থেকে তথ্য চুরি করে প্রতারকরা নতুন কার্ড তৈরি করেও প্রতারণা করে।
মাত্র ৬ সেকেন্ডে ক্রেডিট কার্ড হ্যাক করা সম্ভব !মাত্র ৬ সেকেন্ডেই অপরাধীরা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের নম্বর, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ এবং পাসওয়ার্ড জেনে নিতে পারেন বলে দাবি করেছেন আইটি বিশেষজ্ঞরা।
নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটির আইটি গবেষকদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ একটি প্রতিবেদনে বলেছে, যেকোন একটি ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে কাজটি করে ফেলা ভয়াবহ রকমের সোজা। সম্প্রতি টেসকো ব্যাংক হ্যাকেও এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, সাইবার অপরাধীরা যখন ওয়েবসাইটে কার্ডের কোনো তথ্যের সন্ধান চালিয়ে যান সেটা সিস্টেমে ধরাও পড়ে না। এ গবেষণার বিষয়ে ভিসার বক্তব্য হলো- জালিয়াতি রোধে পেমেন্ট সিস্টেমে যে ব্যবস্থাগুলো রয়েছে গবেষণায় তার সবগুলোর উল্লেখ করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন