মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি না সেটি জানার আগেই অনেকে আমাদেরকে মানবাধিকারের ছবক দিচ্ছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘৃণ্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলেও তারা মানবাধিকার রক্ষা দূরে থাক, একটি টু শব্দও করেন নি। এ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
গতকাল শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘মানবাধিকার দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আইন মন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের অনেক বড় বড় অর্জন সত্ত্বেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার হীন চেষ্টায় লিপ্ত। বাংলাদেশের সংবিধান ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র-এ দুটির কোথাও অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা নেই। এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদ ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ২০ অনুচ্ছেদে শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলা আছে। কিন্তু মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এ দুটি অনন্য দলিলের কোথাও বলা নেই রাস্তাঘাট বন্ধ করে, জনসাধারণের চলাচলের পথ রুদ্ধ করে সভা-সমাবেশ করা যাবে।
দুঃখ প্রকাশ করে আনিসুল হক বলেন, আজকাল মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি না তা জানার আগেই অনেকে আমাদেরকে মানবাধিকার সমন্ধে ছবক দিচ্ছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘৃণ্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলেও তারা মানবাধিকার রক্ষা দূরে থাক, এ বিষয়ে একটি টু শব্দও করেন নাই।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো: সেলিম রেজা, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মইনুল কবির প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
ইউক্রেনে মার্কিন রাডার সিস্টেম ও দুটি গ্র্যাড এমএলআরএস ধ্বংস
ইনকিলাব ডেস্ক
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ইগোর বলেছেন, গত দিনে ডোনেটস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) বিশেষ সামরিক অভিযানের সময় রাশিয়ান সেনারা মার্কিন তৈরি একটি অ্যাএন/টিপিকিউ-৩৬ মোবাইল রাডার সিস্টেম এবং দুটি গ্র্যাড একাধিক রকেট লঞ্চার ধ্বংস করেছে। কোনাশেনকভ গতকাল শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তার মতে, ইউএস-নির্মিত রাডার সিস্টেম টরস্কোয়ের কাছে ধ্বংস হয়ে গেছে, আর দুটি ইউক্রেনীয় গ্র্যাড একাধিক রকেট লঞ্চার সেভার্সকের কাছে আঘাত হেনেছে।
কোনাশেনকভ বলেছেন, রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী ক্র্যাসনি লিমানের কাছে তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে এবং সেখানে দুটি ইউক্রেনীয় পাল্টা আক্রমণ বন্ধ করেছে। তার মতে, সেখানে ৬০ জন ইউক্রেনীয় সৈনিক এবং ভাড়াটে সৈন্য নিহত হয়েছিল, একটি পদাতিক যুদ্ধের গাড়ি এবং দুটি সাঁজোয়া কর্মী বাহক ধ্বংস হয়েছিল।
রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে আক্রমণকারী ড্রোন ছিল মার্কিন জিপিএস সিস্টেমে পরিচালিত : ইউক্রেনের ড্রোন যেগুলো রিয়াজান এবং এঙ্গেলসের কাছে রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে আক্রমণ করেছিল সেগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত উপগ্রহ তথ্য দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া গত শুক্রবার ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের সময় একথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে, আমেরিকান স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করে রাশিয়ান কৌশলগত এয়ারস্ট্রিপ ডায়াগিলেভো এবং এঙ্গেলস আক্রমণ করা হয়েছিল। আপগ্রেড সোভিয়েত টিইউ-১৪১ স্ট্রিজ ড্রোনগুলো আমেরিকান জিপিএস গ্লোবাল স্যাটেলাইট সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল’।
মার্কিন বিবৃতিকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া যায় না রুশ কূটনীতিক : রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ গত শুক্রবার বলেছেন যে, রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যেতে পারে খুব বলে মার্কিন বিবৃতি অস্পষ্ট এবং গুরুত্বের সাথে নেওয়া যায় না।
তিনি ‘রাশিয়া-মার্কিন : সংঘর্ষের সীমাবদ্ধতাগুলো কী?’ শিরোনামের একটি প্যানেল আলোচনার সময় বলেন, ‘ইউক্রেনের ক্ষেত্রে এক বা অন্য সমাধান পাওয়া গেলে নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করার সম্ভাবনার জন্য, আমরা এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কয়েকটি উপবৃত্তাকার পাবলিক বিবৃতি শুনেছি, তবে একজনকে বুঝতে হবে যে, তারা ইউক্রেনীয় প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে কিছু অবাস্তব দাবির সাথে রাশিয়ার সম্মতির ওপর নিষেধাজ্ঞাগুলোকে সর্বদাই অপসারণ করতে হবে’। প্যানেল আলোচনাটি ভালদাই ডিসকাশন ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ‘এসব ঘোষণাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা যায় না’।
কূটনীতিক বলেন যে, রাশিয়া দীর্ঘকাল ধরে নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে, কার্যকরভাবে ১৯৪৯ সাল থেকে, যখন পশ্চিমা ব্লক বহুপাক্ষিক রফতানি নিয়ন্ত্রণের জন্য সমন্বয়কারী কমিটি গঠন করে, যা ককোম নামে পরিচিত, ইউএসএসআর এবং কৌশলগত পণ্য এবং প্রযুক্তির রফতানি সীমাবদ্ধ করতে এবং অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশ, যা ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত দ্রবীভূত হয়নি।
‘১৯৭৪ সালে, বৈষম্যমূলক জ্যাকসন-ভানিক সংশোধনী পাস হয়েছিল’ -তিনি অব্যাহত রাখেন। ‘এটি ২০১২ পর্যন্ত বাতিল করা হয়নি, তবে মার্কিন তথাকথিত ম্যাগনিটস্কি আইন অনুমোদনের পরপরই’।
রিয়াবকভ বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার রুশ-বিরোধী পক্ষপাতমূলক ঐক্যমতের সাথে নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করবে না, পরবর্তী কোনো অগ্রগতি নির্বিশেষে’। ‘সংক্ষেপে, বিশ্ব মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, নিষেধাজ্ঞাগুলো এখনও বহির্বিশ্বের ওপর কাজ করে এমন কয়েকটি চাপের হাতিয়ারগুলোর মধ্যে একটি যা আমাদের কিছু অসুবিধার কারণ হতে পারে, কিন্তু সামরিক অভিযানের অগ্রগতিসহ আমাদের নীতিকে প্রভাবিত করতে সক্ষম নয়। সূত্র : তাস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন