সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটারে সাম্প্রতিক গণছাঁটাইয়ের জেরে কোম্পানির নতুন মালিক ও বিশ্বের সাবেক শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ককে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে ইউরোপ মহাদেশভুক্ত দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
ইইউ কমিশনার ভেরা জৌরোভা জানিয়েছেন, মাস্ক যদি টুইটারে তার যথেচ্ছাচার অব্যাহত রাখেন, তাহলে ইইউয়ের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইনের আওতায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বাধ্য হবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
যদি একবার এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়, সেক্ষেত্রে ইইউ জোটের সব সদস্যরাষ্ট্রে নিজের পুরো বাজার হারাবে টুইটার।
শুক্রবার এক টুইটবার্তায় ভেরা জৌরোভা বলেন, ‘টুইটারে সাম্প্রতিক গণছাঁটাইয়ের সংবাদে আমরা উদ্বেগ বোধ করছি। ইইউর ডিজিটাল সার্ভিস আইনে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সংবাদকর্মীদের মৌলিক অধিকারকে সম্মান জানানো হয়েছে। পরে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আইনেও এ দুটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
‘ইলন মাস্ক ইতোমধ্যে যাবতীয় রেড লাইন পার করে ফেলেছেন, এখন সামনে অপেক্ষা করছে কেবল নিষেধাজ্ঞা। ইইউ মনে করে, এখন থেকেই এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত হবে মাস্কের।’
প্রায় ছয় মাস নানা নাটকীয়তার পর গত ২৮ অক্টোবর টুইটারের মালিকানা গ্রহণ বিশ্বের সাবেক শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। সে সময় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরমটির কর্মীসংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৫০০ জন।
মালিকানা নেওয়ার পরপরই টুইটারের সিইও পরাগ আগারওয়ালকে চাকরি থেকে অব্যহতি দেন মাস্ক। তারপর শুরু করেন গণছাঁটাই। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে টুইটারের ৫০ শতাংশ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেন তিনি।
সম্প্রতি ইলন মাস্কের সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে স্বনামধন্য কয়েকজন সাংবাদিকের টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএন, দ্য ইন্টারসেপ্ট এবং ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিকরা রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ইলন মাস্ক সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে তার পরিবারকে বিপন্ন করার অভিযোগ এনে কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা ছাড়াই এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
সাংবাদিকদের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার বিষয়ে মাস্ক বলেন, ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের ব্যাপারটা সাংবাদিকদের জন্যও প্রযোজ্য।
এর আগে বুধবার মাস্কের ব্যক্তিগত জেট বিমান ট্র্যাক করে এমন একটি প্রফাইল বন্ধ করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার এক টুইটে মাস্ক বলেছেন, ‘দিনভর আমার সমালোচনা ঠিক আছে, কিন্তু আমার চলাফেরার রিয়াল টাইম তথ্য প্রকাশ করে আমার পরিবারকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়াকে মানতে পারি না। ’
অ্যাকাউন্টগুলো স্থগিত করাকে ‘সন্দেহজনক ও দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করেছেন নিউ ইয়র্ক টাইমসের একজন মুখপাত্র।
সিএনএন টুইটারের কাছে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চেয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, টুইটারের জবাব দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক হবে তা ঠিক করা হবে।
এদিকে জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর শুক্রবার সাংবাদিকদের স্থগিত করা অ্যাকাউন্টগুলোর স্ক্রিনশট টুইট করেছে এবং এ ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছে। সূত্র : ডয়চে ভেলে
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন