বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সড়ক উন্নয়নে সেঞ্চুরি

২১ ডিসেম্বর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনা কমে যাবে, যাত্রীদের জীবন নিরাপদ হবে, অর্থনীতির চাকায় গতি বাড়বে নিরাপদ সড়ক করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর : এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০৫ এএম

ক্রিকেটে একদিনে একজন ক্রিকেটার একশ রান করলে বলা হয় সেঞ্চুরি। একদিনে একশ সড়ক মহাসড়ক উদ্বোধন করলে তাকেও সেঞ্চুরিই বলা যায়। সেই রেকর্ড করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের উন্নয়নের এই রূপকার আগামী ২১ ডিসেম্বর ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। ৫১টি জেলায় জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের এসব সড়কের দৈর্ঘ ২ হাজার ২১ কিলোমিটার।

পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশে সড়ক যোগাযোগ বিপ্লব ঘটেছে কয়েক মাস আগে। এখন সড়ক পথেই দেশের উত্তর প্রান্ত থেকে দক্ষিণ প্রান্ত যাওয়া যায়। সড়ক যোগাযোগের এই বিপ্লবের মধ্যেই নতুন করে যুক্ত হচ্ছে যানবাহনের চাকার গতিধারা। এখন একই সড়কে সব ধরনের যানবাহন নিজস্ব গতিতে চলতে পারবে। এসব সড়কের মধ্যে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল হয়ে রংপুর পর্যন্ত সড়কে যানবাহন চলাচলে নতুন বিন্যাস সংযোজন করা হয়েছে। এ সড়কে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের দেশগুলোর মতো ধীর গতি, মধ্যম গতি ও দ্রুত গতির যানবাহন চলাচলের পৃথক পৃথক লেন রয়েছে। যানবাহনের পৃথক লেন করে এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো সড়ক করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি) গত কয়েক বছরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এসব সড়কের নির্মাণ, উন্নয়ন ও সংস্কারের কাজ করেছে। এই প্রথম একসঙ্গে ১০০টি রাস্তা উদ্বোধন করতে যাচ্ছে সরকার। এর আগে গত মাসে এক দিনে ১০০টি নতুন সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

জানতে চাইলে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী ইনকিলাবকে বলেন, গত মাসে একদিনে ১০০টি নতুন সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখন একদিনে ১০০টি রাস্তা উদ্বোধন করা হবে। নিরাপদ সড়ক করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এ জন্য রাজধানী ঢাকার সাথে সারাদেশের যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে অনেক প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এসব সড়ক চালু হলে এক দিকে সড়কে দুঘর্টনা কমে আসবে অন্য দিকে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করবে। তিনি আরো জানান, সারাদেশে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার সড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে। তার মধ্যে ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৪ হাজার ৮৯৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ১৩ হাজার ৫৮৮ কিলোমিটার জেলা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ২১ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার সড়কের কাজ বিদেশি ঋণে করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় দুই পাশে সার্ভিস লেন দিয়ে সড়কটি চার লেন করা হয়েছে।

সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ সুত্র জানায়, রাজধানীর ঢাকার সাথে সারাদেশের আঞ্চলিক বা জাতীয় মহাসড়কও রয়েছে। যোগযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করতে, নিরাপদ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা, গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা সচল করা এবং নিরাপদ সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থার লক্ষ্যে উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে টেকসই মহাসড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং পরিবহণ সেবা ও ব্যবস্থাপনার মান উন্নয়নের মাধ্যমে সমন্বিত নগর গণপরিবহণসহ নিরাপদ সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এবং পরিবহণ খাতে সুশাসনমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন জোরদারকরণ। এই প্রথম ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মহাসড়ক মডেল সড়ক হিসেবে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ ডিসেম্বর ৫১টি জেলায় ২ হাজার ২১ কিলোমিটার রাস্তা উদ্বোধন করবেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি) গত কয়েক বছরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এসব সড়কের কাজ করা হয়েছে। গত মাসে এক দিনে ১০০টি নতুন সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার পর, এবার একই সাথে ১০০টি রাস্তা উদ্বোধন করতে যাচ্ছে সরকার। যার বেশিরভাগই সম্প্রতি প্রশস্ত বা সংস্কার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়ে সড়কগুলো চালু করার জন্য ২১ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে টাঙ্গাইল, খুলনা ও রংপুরের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিবেন বলে জানা গেছে।

অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং জেলা সড়ক আছে। প্রতি বছর সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করতে কত টাকা প্রয়োজন হতে পারে তা জানতে সওজের হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স সার্কেল এই জরিপ করে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় কোনো রাস্তাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে সেই তথ্যও উঠে আসে এ জরিপে। গত ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এ জরিপ কাজ পরিচালনা করা হয়। সওজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রক্ষণাবেক্ষণ বা পুনর্নিমাণের অধীনে থাকা রাস্তাগুলো বাদ দিয়ে এ বছর ২০ হাজার ৭২ কিলোমিটার (৮৯ দশমিক ৫০ শতাংশ) রাস্তার জরিপ করা হয়েছে। এ জরিপে ১ হাজার ১২৮ কিলোমিটার (৫ দশমিক ৬২ শতাংশ) রাস্তার খারাপ অবস্থা, ৪৯৩ কিলোমিটার (২ দশমিক ৪৬ শতাংশ) বেশি খারাপ অবস্থায় এবং ৪৫৭ কিলোমিটার (২ দশমিক ২৮ শতাংশ) অতি খারাপ অবস্থায় রয়েছে। বাকি ৮৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ রাস্তা ‹ভালো› অবস্থায় পাওয়া গেছে। রাস্তার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে রাস্তাগুলোকে ৫টি ভাগে শ্রেণিবদ্ধ করেছে সওজ। জাতীয় মহাসড়ক রাজধানীকে বিভাগীয় শহর, সমুদ্র বন্দর, স্থলবন্দর এবং আন্তর্জাতিক মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত করে। আঞ্চলিক মহাসড়কগুলি জেলা শহরগুলোকে নদীবন্দর এবং স্থলবন্দরের সাথে সংযুক্ত করে। জেলা সড়কগুলো জেলা শহরকে উপজেলা বা এক উপজেলার সাথে অন্য উপজেলাকে সংযুক্ত করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ নভেম্বর নতুন ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করেন। ওই সেতুগুলো আঞ্চলিক মহাসড়ক ও জেলা সড়কে রয়েছে। এর মধ্যে কিছু পুরনো, ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ৯০৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুগুলো সফলভাবে উদ্বোধনের পর কর্তৃপক্ষ সড়কের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। ৫১টি জেলায় ২,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি সম্মিলিত দৈর্ঘ্যের সড়ক চালু হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি) গত কয়েক বছরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে এসব সড়কের কাজ শেষ করছে।

একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে সেই রাস্তাগেুালর বেশিরভাগই ৫.৫ মিটার বা তার বেশি প্রশস্ত করা হয়েছে। উন্নয়ন কাজের ফলে এসব সড়কের স্থায়িত্ব ও মজবুত হবে বলে তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান। -এর একটি ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার সড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে যার মধ্যে ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৪ হাজার ৮৯৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ১৩ হাজার ৫৮৮ কিলোমিটার জেলা সড়ক রয়েছে।

গত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাওয়া বিভাগগুলোর মধ্যে এ গুলো হচ্ছে অন্যতম। এডিবির অধীনে ২০১১-১২ অর্থবছরে বিভাগটি ২,৪৩০.৯০ কোটি টাকা পেয়েছে। ২০২১-২২ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, গত অর্থবছরে এই পরিমাণ বেড়েছে ২৩,৪৪০.৮৬ কোটি টাকা। উদ্বোধন করা হচ্ছে যেসব সড়ক সেসড়কগুলোর মধ্যে শুধু গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার সড়কের কাজ বিদেশি ঋণে করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় দুই পাশে সার্ভিস লেন দিয়ে সড়কটি চার লেন করা হয়েছে। বাকি কাজ সরকারি তহবিল থেকে হয়েছে। এ সড়কটি বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে দেখানো হচ্ছে। যার এক দিকে ছোট যানবাহন, মাঝে বড় গাড়ী এবং মাঝারি যানবাহন চলবে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী একে এম মনির হোসেন পাঠান ইনকিলাবকে বলেন, ১০০টি রাস্তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হলে রাজধানী থেকে জেলার যোগাযোগ আরো উন্নত হবে। নতুন সড়কগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক বা জাতীয় মহাসড়কও রয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ ডিসেম্বর ৫১টি জেলায় ২ হাজার ২১ কিলোমিটার রাস্তা উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, গত তিন বছরে এসব সড়কের বেশিরভাগ ভৌত কাজ করা হয়েছে। উন্নয়ন কাজের আগে, অনেক রাস্তা মাত্র ৩.৫ মিটার চওড়া ছিল, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়েছিল। এখন দুর্ঘটনা কমে আসবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Mahabub Alam ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৫ এএম says : 0
Congratulations.wellcome to of our best honorable real current Primeminister with Sheikh Hasina daughter of democratic leader government people’s Republic of digital Bangladesh! joy Bangla!
Total Reply(0)
Salaahmad Salaahmad ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৫ এএম says : 0
Congratulations
Total Reply(0)
Noora Ihsas ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৬ এএম says : 0
১০০ টি কেন ১০০০ টি ব্রিজ উদ্বোধন করলেও কোন লাভ হবে না, জনগণ চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন
Total Reply(0)
Muhammad Saidur Rahman ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৬ এএম says : 0
উন্নয়ন দিয়ে দুর্ভিক্ষ ঢাকার অপচেষ্টা।
Total Reply(0)
Jony Chowdhury ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৬ এএম says : 0
দেশে আারকোন নির্বাচনের দরকার নেই, দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা টিকিয়ে রাখতে, শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
Total Reply(0)
মোঃ সিপন ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৭ এএম says : 0
অবৈধ সরকার উন্নয়নের নামে চুরি করার সুযোগ আবার পাইলো
Total Reply(0)
MD Àyan Ahammed ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৭ এএম says : 0
খুব ভালো।।কিন্তু জনগণের মন কিছুইতেই আর জয় করতে পারবে না।।।মানুষ এখন বুঝতে শিখেছে
Total Reply(0)
Kapel Deb Roy ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৮ এএম says : 0
সারা দেশের উন্নয়ন হলেও আমাদের শরীয়তপুর বাসি এখনো রয়েছে আমাবোস্সার অন্ধকারে। কারন ফোর লেনের রাস্তা তো দূরে থাক ঠিক ঠাক মতো দুই লেনের রাস্তাটাও নেই শরিয়তপুরে। আমাদের শরিয়তপুরের কোটাপাড়া ব্রিজের কি হাল সেটা বলার আর কিছু নেই। দৃস্টি আকরসন করছি পারলে শরিয়তপুরের সার্বিক চিত্র নিয়ে একটা রিপোর্ট করবেন প্লিজ.....
Total Reply(0)
Abu Baker Siddiqui ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৮ এএম says : 0
Congratulation to the PM
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন