শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সিরিয়ায় বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়া আবার শুরু

| প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ায় যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেয়ার কাজ তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবারো শুরু হয়েছে। হাড় কাঁপানো ঠা-া ও তুষারপাতে সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। বেসামরিক সিরীয়রা আলেপ্পো ছাড়াও অন্যান্য যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে বেরিয়ে আসছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বিদ্রোহী ও সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে বাস ছেড়ে যাওয়ার ছবি প্রচারিত হয়েছে। খবরে বলা হয়, প্রচ- তুষারপাতের কারণে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ইরাক সীমান্তবর্তী এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাসকারী হাজারো ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষ কষ্টের মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন। প্রসঙ্গত, যুদ্ধ, বোমাবর্ষণ, দখল আর পাল্টা দখলের খবরে সিরিয়া কিছুদিন ধরেই রয়েছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার দেশটিতে হঠাৎ তুষারপাত সিরিয়াকে নতুন করে খবরের শীর্ষে এনেছে। খবরে বলা হয়, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের দেইর এজ জরে হঠাৎ করেই শুরু হয় তুষারপাত। মরুময় এই প্রদেশে বৃষ্টিই যেখানে খুব কালেভদ্রে হয় সেখানে বরফ পড়ার ঘটনা স্থানীয়দের রীতিমতো বিস্মিত করেছে। পুরো সপ্তাহই যেখানে ছিল প্রচ- গরম সেখানে হঠাৎ করে তুষারপাত শুরু হলে তো অবাক হতেই হবে। পুরো ২৫ বছর পর সিরিয়ায় এই তুষারপাতের ঘটনা ঘটল। জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাগুলো আল হাওল শহরের বাসিন্দাদের উত্তরাঞ্চলে সরিয়ে নিতে কাজ করছে। আপাতত উদ্বাস্তুদের এই এলাকায় রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন এই তুষারপাতের কারণে বহু মানুষ উপযুক্ত কাপড় ও জ্বালানির অভাবে ঠা-ায় কষ্ট পাচ্ছে। সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিদ্রোহী নিয়ন্তিত ইদলিব প্রদেশের শিয়া অধ্যুষিত দুটি গ্রাম কেফরায়া ও ফুয়া থেকে তিন হাজার মানুষকে বের করে নিয়ে আসার জন্য রাতভর ৬০টি বাস দাঁড়িয়েছিল। খাবার-পানি ছাড়া তুষার আচ্ছাদিত ইদলিবে তাদের ওই ২৪ ঘণ্টা কেটেছে তীব্র কষ্টে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় বিনা খাদ্য ও ওষুধে চারটি শিশু মারা গেছে। একদিন অপেক্ষার পর বুধবার ওই তিন হাজার মানুষের মধ্যে কয়েকজনকে ওই দুটি গ্রাম থেকে বের হয়ে আসার অনুমতি দেয়া হয়। পাঁচটি বাস সরকারনিয়ন্ত্রিত রামোসেহ শহরে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস। সিরিয়ান অবজারভেটরি আরো জানিয়েছে, আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সব জেলা সরকারি বাহিনীর দখলে এসেছে। তবে তা জাতিসংঘ এবং মার্কিন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেনি। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রেড ক্রিসেন্ট ও রেডক্রসের নজরদারিতে আলেপ্পো থেকে বেসামরিক মানুষদের সিরিয়ার পশ্চিমে সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবের কেফরায়া ও ফুয়া থেকে চারটি বাস ও দুটি অ্যাম্বুলেন্সে বেসামরিকদের সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থাটি জানায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্রোহীদের দ্বারা আটক ২১ জন বাস চালককে বুধবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এটা এখনো নিশ্চিত নয় যে, ইদলিবের ওই দুটি গ্রামে কতজন বেসামরিক মানুষ রয়েছেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে তাদের বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ জানিয়েছিল আলেপ্পোতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আটকা পড়ে আছেন। মঙ্গলবার রেডক্রস জানিয়েছিল ২৫ হাজার মানুষকে তখনই সরিয়ে নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার বেসামরিক ও বিদ্রোহীদের সরিয়ে নেয়ার পর সেনাবাহিনী আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে প্রবেশ করবে। বিদ্রোহীদের একাংশ ফরাসি বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছে, তারা বেসামরিকদের জীবন নিশ্চিত করার পরই সেখান থেকে বেরিয়ে আসবেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর আগে আলেপ্পো ছিল একটি শিল্প নগরী। ২০১২ সালে বিদ্রোহী নগরীর একাংশ দখল করার পর থেকে নগরীটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে পড়ে।  বিবিসি, রয়টার্স, সানা, গার্ডিয়ান, দ্য ইনডিপেনডেন্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন