বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সম্পত্তি আদালত কর্তৃক ক্রোকের আদেশের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
আজ শুক্রবার ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘২০০৭ সালে ১/১১-এর জরুরি সরকারের সময় তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছিল, তা ছিল সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ তথাকথিত জরুরি সরকার ছিল বর্তমান আওয়ামী সরকারেরই আন্দোলনের ফসল। দীর্ঘদিন পর ওই মামলায় আদালত তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের সম্পত্তি ক্রোকের যে আদেশ দিয়েছেন, তা সরকারের ইঙ্গিতেই।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ২০০৭ সালের জরুরি সরকারের আমলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও কয়েকটি মামলা হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরই সেই মামলাগুলো উধাও হয়ে যায়। মূলত বিএনপি তথা জিয়া পরিবারকে দমনের লক্ষ্যেই সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুদক এই মামলা করেছিল। এর পেছনে ক্ষমতাসীনদের চক্রান্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জিয়া পরিবারকে হেয় করার জন্যই বানোয়াট, কাল্পনিক ও অসত্য মামলায় তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হলো।’
তারা বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে দেশের অর্থ পাচার করে কানাডায় বেগমপল্লি তৈরি হলেও এসব দুর্নীতি তদন্তে দুদকের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। কারণ সরকারপন্থিরা এসব লুণ্ঠনে জড়িত। তাই তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে থাকা মামলার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা ও আদেশ দেওয়ার মানে জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে নির্মূল করা। ভবিষ্যতে ডা. জোবাইদা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন, এমন আশঙ্কা ও ভীতি থেকেই সরকারের ইঙ্গিতে মামলাটির কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা হলো। এমন সময় এই আদেশ দেওয়া হলো, যখন ভোটবিহীন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। এ মুহূর্তে এ ধরনের আদেশ জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ফেরানোর অপচেষ্টা মাত্র।’
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, ‘তারেক রহমান বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণের রাজনৈতিক আইকন। দল পরিচালনায় তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত। তার দক্ষতা, যোগ্যতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা অনন্য। সম্প্রতি তিনি রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা দিয়ে নিজের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও যোগ্যতাকে বিশ্বদরবারে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তার বাবা ছিলেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম। তার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। যাকে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ ভোট দিয়ে তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই পরিবারের সন্তান এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আগামী দিনের কাণ্ডারি তারেক রহমান।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘অন্যদিকে ডা. জোবাইদা রহমান একদিকে যেমন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ; তিনিও দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী বর্ণাঢ্য পরিবারের সন্তান। মেধাবী চিকিৎসক জোবাইদা রহমান পড়ালেখা করেছেন সেরা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজে। তার পিতা মরহুম মাহবুব আলী খান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান এবং সাবেক মন্ত্রী। সুতরাং ডা. জোবাইদা রহমান আর দশজন সাধারণ মেয়ের মতো সহসায় বেড়ে ওঠেননি। তার বেড়ে ওঠার মধ্যে শৃঙ্খলা ও আভিজাত্য ছিল এবং এখনো আছে। সুতরাং তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা অবান্তর এবং ভিত্তিহীন। মূলত সরকার আদালতকে ব্যবহার করে অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই এই মামলাটি দীর্ঘ সময় ধরে টিকিয়ে রেখেছে, যার কোনো ভিত্তি নেই।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন