বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে নৌকা কোথাও জিতবে না- সাতক্ষীরায় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন

সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ২:৩৩ পিএম

বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই দুর্বল দল। তাই,বিএনপি'র ভয়ে সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায় না।শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে সাতক্ষীরায় নিরিবিলি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন একথা বলেন। সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলীর সভাপতিত্বে বিএনপি আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, দেশ ক্লান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে ভোটাধিকার নেই। গণতন্ত্র নেই।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীকে ব্যবহার করে বিএনপি'র অসংখ্য নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা সহ মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। কারাগারে প্রেরণ করা হচ্ছে। গুম খুন করে নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে সরকার। চলমান আন্দোলনে বিএনপির ১২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
এ সরকার মুখে বলে এক, কাজে করে আর এক। এরা মিথ্যাবাদী উল্লেখ করে প্রধান অতিথি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আরো বলেন, ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলো। জনগণ সেই ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। আর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যুদ্ধের ময়দানে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। অথচ একাত্তরের সেই আওয়ামী লীগ আর এখনকার আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন মিল নেই। আওয়ামী লীগ এখন দেশের জনগণকে ভয় পায়, তারা বিএনপিকে ভয় পায়। তাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চায় না।
তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপোসহীন নেত্রী। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার মইনুদ্দিন -ফখরুদ্দিনের সাথে আপোষ করেননি । বিদেশে পালিয়ে যাননি। তাই ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সাথে গোপন চুক্তি করে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। মইনুদ্দিন- ফখরুদ্দিন সরকারের আমলে শেখ হাসিনা, বেগম খালেদা জিয়াসহ অনেক নেতৃবৃন্দের নামে মামলা হয়েছিলো। অথচ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ তার দলীয় নেতা কর্মীদের নামের মামলা প্রত্যাহার হলেও বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অনেকের নামে মামলা চলমান রয়েছে। তৎকালীন সময়ের মামলায় বিচার করা হচ্ছে। মইনুদ্দিন ফখরুদ্দীনকে দায় মুক্তি দিয়েছে এই সরকার। তাদেরকে অবৈধ সরকার বলে গালি দেওয়া হলেও তাদের নামে একটি জিডি পর্যন্ত করেনি সরকার।

তিনি বলেন,এখন দেশের কোথাও নির্বাচন হয় না, এমনকি স্কুলেও ভোট হয় না। আধিপত্য বিস্তার করে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকার পায়তারা করছে। দেশের সকল সেক্টর দুর্নীতিতে ভরে গেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সুইস ব্যাংকে টাকা রাখা হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্কুর হয়ে পড়েছে। লুটপাট করা হচ্ছে ব্যাংক সেক্টরে। নিজেদের পরিবারের লোকজনদেরকে ব্যাংকের পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে সেখান থেকে হাজার হাজার কোটি ডলার ঋণের নামে লুটপাট করা হয়েছে।

সব জায়গায় সরকারের লোকজন লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদের ভাষা নেই, প্রতিবাদ করতে গেলেই তার নামে মিথ্যা মামলা, গায়েবী মামলা দেওয়া হচ্ছে। অথচ আন্দোলন- সংগ্রাম, প্রতিবাদ এগুলো সাংবিধানিক অধিকার। সরকার সেই সংবিধানিক অধিকার লংঘন করে জনগণের কথা বলার প্রতিবাদের কণ্ঠ রোধ করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, গুম খুন থেকে শুরু করে যত অন্যায় অত্যাচার চালাক না কেনো, আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের দাবি আদায় করা হবে। বিচার করা হবে সকল অপরাধের।

প্রধান অতিথি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ,জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলাম মিলে রাজপথে আন্দোলন করেছিলো। তাদের একটাই দাবি ছিলো, আমার ভোট আমি দেবো। জনগণের ভোটাধিকারের দাবিকে মেনে নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথা চালু করেছিলেন। বর্তমান সময়ে বিএনপির অনেকগুলো দাবি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চলছে। এখন ঐ সমস্ত দাবির সাথে এদেশের জনগণের দাবি,আমার ভোট আমি দেবো।

তিনি বলেন, সরকারকে এ দাবী মেনে নিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ইভিএম নয়, ব্যালটেই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন রদ করতে হবে। দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে।
তিনি সাতক্ষীরার নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একসাথে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে সকল দাবি আদায় করতে হবে। মুক্ত করতে হবে সকল রাজবন্দীকে। ফিরিয়ে আনতে হবে জনগণের ভোটাধিকার, দেশের গণতন্ত্র।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা চার আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দিন,সাবেক ড্যাব নেতা বিশিষ্ট হৃদরোগ চিকিৎসক শহিদুল আলম, সাতক্ষীরা এক আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব (কারাবন্দি) এর সহধর্মিনী অ্যাডভোকেট শাহানারা পারভীন বকুল, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম,যুগ্ম আহ্বায়ক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, মৃণাল কান্তি রায়, হাবিবুর রহমান হাবিব, পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি, শেখ তারিকুল হাসান প্রমূখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md. Jakir Hossain ৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:৫৩ পিএম says : 0
All are Ok Care Taker want
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন