বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে জনগণের আস্থা নেই: ড. মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আশ্বাস দিয়েছেন, তাতে জনগণের কোনো আস্থা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার বলেছেন- ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে’, উনি আশ্বাস দিতে চান। আমরা বলতে চাই, আমরা তো একটা নয়, দুইটা নির্বাচন দেখেছি। এই প্রধানমন্ত্রী যিনি একটা বয়কট ভোটের প্রধানমন্ত্রী, আরেকটা হল রাতের ভোট ডাকাতির প্রধানমন্ত্রী। উনি কী বললেন আগামী নির্বাচন সম্বন্ধে, এটা আমরা কেন, এদেশের কোনো জনসাধারণ কেউ এটা বিশ্বাস করে না। গতকাল শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মোশাররফ বলেন, আমরা তো একটা নয়, দুইটা নির্বাচন দেখেছি। উনার (প্রধানমন্ত্রী) দেওয়া দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আমরা আগে দেখেছি। ২০১৪ সালে নির্বাচন এদেশের মানুষ বয়কট করেছিল। ১৫৩টা আসন যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগে সরকার গঠন করার জন্য, সেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৫৩টা আসন বয়কট হয়েছিল। জনগণ ভোট দেয়নি, প্রার্থীও কেউ দাঁড়ায়নি আওয়ামী লীগ ছাড়া। সেখানে বয়কট জয়লাভ করেছিল। সেটাতে গায়ের জোরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকেছে। তারপরে ২০১৮ সালেরটা। শুধু আমরা না। আজ আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত যে দিনের ভোট রাতে ডাকাতি হয়েছে। জাপানের রাষ্ট্রদূত নিজে বলেছেন, দেখেছেন।
দুদকের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিনী জোবাইদা রহমানের সম্পত্তি ক্রোকে আদালতের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দুদকের ওই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিচারিক আদালতের ওই আদেশও সরকারের ফরমায়েশে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিহিংসাপরায়ণ এই সরকার তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক অভিযোগে মামলা ও রায় দিয়ে গোয়েবলসের মতো মিথ্যাচার করছে। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মী-জনসাধারণের মনোবল বিনষ্ট করতে সরকারের ইঙ্গিতে এই আদেশ দেয়া হয়েছে। তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, তা অবান্তর, ভিত্তিহীন, অমূলক। যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তা প্রতিহিংসামূলক ফরমায়েশী।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন যেন আজ বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকার আবারও নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে। আর এই চক্রান্তের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক। বিএনপি এই সরকারের হীন এই কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে এবং অবিলম্বে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা, ফরমায়েশি আদেশ ও রায় বাতিল করার দাবী জানাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, যে সকল সম্পত্তির মালিক তারেক রহমান নন, কোন দলিলে বা চুক্তিতে যেখানে তারেক রহমানের নাম, স্বাক্ষর বা সংশ্লিষ্টতা নেই- তাঁকে সেসব সম্পত্তির গায়েবী মালিক বানিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি তারেক রহমান এবং ডা. জোবাইদা রহমানের কর পরিশোধকৃত সম্পদ নিয়েও কাল্পনিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএনপির আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে এমন মামলা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন মোশাররফ। তার নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, জনগণের স্রোত দেখে ভয়ের কারণেই কিন্তু তারা (সরকার) তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা চালু করে ক্রোক করার এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য চলমান আন্দোলনকে স্তব্ধ করা বা দুর্বল করা। তবে এই কর্মকাণ্ডে কোনো কাজ হবে না। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, এসব মামলা, আদেশ, রায় দিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ, বিতর্কিত বা ডা. জোবাইদা রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করতে পারবে না এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চলমান আন্দোলন বিভ্রান্ত বা নস্যাৎ করতে পারবে না।
চলমান দুর্নীতি দুদকের চোখে পড়ে না অভিযোগ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকারের নির্মম প্রতিহিংসায় দেশ আজ পুড়ে ছাড়খার হয়ে যাচ্ছে। দেশে বিরাজমান সীমাহীন দুর্নীতির মহাতাণ্ডব দুদকের চোখে পড়ে না। ২০০০ সালে স্বাধীন বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবার কলঙ্কের তিলক তৎকালীন আওয়ামী সরকার লাগিয়েছিল। বর্তমানে তাদের সরকারের ছত্রছায়ায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের অনুগত ব্যবসায়ী এবং নেতাকর্মীরা দুর্নীতির মহাতাণ্ডব চালালেও দুদকের চোখে সেগুলো পড়ে না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, এ জে মোহাম্মদ আলী, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, কায়সার কামাল, মীর সরাফত আলী সপু উপস্থিত ছিলেন।####

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন