২০২০ সালের পর আনন্দ অনুষ্ঠানে থাবা বসিয়েছিল কোভিড মহামারী। বিপুল জনরোষের মুখে পড়ে অবশেষে দেশ থেকে কোভিড বিধি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে চীনের সরকার। বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিধিনিষেধও শিথিল করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চীন প্রশাসনের অনুমান, আগামী ৪০ দিনে অন্তত ২০০ কোটি মানুষ চিনে যাতায়াত করবেন।
চীনা নববর্ষ উদযাপন করতে প্রতি বছরই প্রচুর সংখ্যক মানুষ সেদেশে উপস্থিত হন। চীনের ‘গ্রেট মাইগ্রেশন’ নামে অভিহিত করা হয় এই বিষয়টিকে। মহামারী পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষের উৎসাহ আরও অনেক বেশি থাকবে বলেই অনুমান। প্রসঙ্গত, শনিবার থেকেই ৪০ দিন ব্যাপী চীনা নববর্ষের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছে। মহামারীর আগে এই সময়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ চীনে ফিরে আসতেন। বিশ্বের নানা প্রান্তে বসবাসকারী চীনা নাগরিকরা দেশে ফিরে নতুন বছর উদযাপন করেন।
গত শুক্রবার চীনের পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, চীনে আসা বিদেশি পর্যটক ও দেশের অন্দরে থাকা নাগরিক- সব মিলিয়ে ২০০ কোটি মানুষ নববর্ষ উদযাপনে মেতে উঠবেন। আগামী চল্লিশ দিনের এই পরিসংখ্যান ছাপিয়ে যেতে পারে ২০১৯ সালের হিসাবকেও। গত দুই বছরের তুলনায় প্রায় একশো শতাংশ বাড়বে চীনের পর্যটক সংখ্যা। তার ফলে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নতি হবে বলেই ধারনা বিশেষজ্ঞদের।
৮ জানুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে সমস্ত রকম বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে চিনের সরকার। হংকংয়ের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দেয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য। তবে চীন সরকারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন বিশ্বের একাধিক দেশ। এমনকি, বিদেশে বসবাসকারী চীনাদের অনেকেই উৎসবের মরশুমে দেশে আসার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। কারণ সেদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এই সময়ে শহর থেকে গ্রামে ফিরে যাবেন বিশাল সংখ্যক মানুষ। ফলে একাধিক গ্রামে ব্যাপক করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।
ইতিমধ্যেই চীনের করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। জানা গিয়েছে, চীনে কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই বয়স্ক। তাদের যথাযথ চিকিৎসার আশায় হাসপাতালে নিয়ে আসছেন পরিবারের সদস্যরা। তার জেরেই হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে কোভিড রোগীদের ভিড়। কাজের চাপ বাড়ছে হাসপাতালের কর্মীদের উপরে। একই অবস্থা চীনের একাধিক গোরস্তানেও। সময়ের অভাবে সৎকার করা যাচ্ছে না কোভিড রোগীদের মৃতদেহ। সূত্র: রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন