বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদী থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলনের কারনে বিলীনের পথে চরাঞ্চলের ফসলি জমি।
একই সাথে কোটিকোটি টাকায় নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও স্পারও পড়েছে ভাঙনের হুমকির মুখে।
এর প্রতিবাদে স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।
একারনে যমুনার ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষজন যেমন তাদের ভিটেমাটি হারাচ্ছেন, তেমনিভাবে সরকারি কোটি কোটি টাকার সম্পদ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৈশাখী চরের রহিমা বেগম বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর সামান্য কয়েক শতক জমিতে ছোট-ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছি। কিন্তু যমুনায় বড় বড় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে চরাঞ্চলের জমি থেকে বালু উত্তোলন করায় চরাঞ্চলের জমি-জমা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আগের দিনে চরাঞ্চলে ফসল ফলিয়ে জীবন জীবিকা চললেও বালু উত্তোলনে তা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বিপদে পড়েছে চাষীরা।
এবিষয়ে ভুক্তভোগি ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের বানিয়াজান গ্রামের বাঁধে আশ্রিত কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, বেলাল ও মাহমুদুলসহ কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তি চরাঞ্চলে ১০ থেকে ১২টি বড় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে শহড়াবাড়ী ঘাটে জমা রেখে বিক্রির পাশাপাশি নদী পথেও বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছেন। ড্রেজার মেশিন মেশিনে এভাবে বালু উত্তোলনের কারনে চরাঞ্চল যেমন বিলীনের পথে, তেমনি সরকারি হাজারো কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ও স্পার এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
তবে এবিষয়ে বালু উত্তোলনের নেতৃত্বপ্রদানকারী ধুনট উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন বলেন, বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মাধ্যমে ২৮ কোটি টাকা এবং অতিরিক্ত আরো প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ করে বালু মহাল হিসাবে নিয়েছি। তবে যেখানে বালু পয়েন্ট দেখানো হয়েছিল, সেখানে চর জেগে ওঠায় পার্শ্ববর্ত্তী স্থান থেকে বালু উত্তালন করছি।
তবে নিয়ম বর্হিভূতভাবে অন্য মৌজা থেকে কিভাবে বালু উত্তোলন করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বেলাল হোসেন বলেন, কত কিছুই তো নিয়মের মধ্যে পড়ে না ! তারপরও তো সব কিছুই চলে আসছে !
আর এসব কথা বলতে বলতেই বেলাল হোসেন আরো জানান, নিয়ম মানলে তো কোন কিছুই চলবে না। তাই তো ধুনট থানা, ইউএনও অফিস, সাংবাদিক ও এমনকি নৌ পুলিশসহ অনেক রাজনৈতিক নেতাদেরকেই ম্যানেজ করতে হয়েছে।
তবে বালু উত্তোলনকারী ও এলাকাবাসীদের এসব বক্তব্য ও প্রশ্নের উত্তর জানতে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ভারতে অবস্থান করায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে ধুনট থানার অফিসার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, আমি কয়েক মাস আগে যোগদান করেছি। তাই এসব বিষয়ে কিছুই জানা নেই। তবে এলাকাবাসীর ক্ষতির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন