সাড়ে চারশ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকায় এসেছেন। পাঁচ দিনের সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বক্তৃতাও দেবেন তিনি। মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু দেখার কথাও রয়েছে তার। এর আগে, ২০২২ সালের জুলাইয়ে ঋণ চাইলে সাড়ে তিন বছর ধরে সাত কিস্তিতে ৪৫০ কোটি ডলার অর্থ দেবে বলে আগেই জানিয়েছে আইএমএফ। আগামী মাসেই প্রথম ঋণের কিস্তি পাওয়ার কথা। আইএমএফের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি সহনশীল রাখতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতাকে সমর্থন করে আইএমএফ। এ জন্য ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ঢাকা সফর করছেন মনসিও সায়েহ।
সংস্থাটি বলছে, বিশ্ববাজার উত্তপ্ত। ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে মার্কিন ডলার, যা আঘাত করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে। আইএমএফ’র দিক থেকে সহায়তা দেয়ার পদক্ষেপ এ কারণেই নেয়া হয়েছে। তারা আরও বলেছে, বৈশ্বিক মহামারি ও মহামারি–পরবর্তী সময়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। এর আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিই ছিল।
বাণিজ্য ঘাটতি, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচ, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকুচিত হওয়ার কারণে সঙ্কটের সীমানায় রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এসব কারণে ব্যয়ের দিক থেকে ভোক্তাদের পরিবর্তন এসেছে অর্থাৎ কম খরচ করতে পারছেন ভোক্তারা। অর্থনৈতিক অগ্রগতিও ক্ষুন্ন হচ্ছে। আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ পাচ্ছে, তা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সহায়তা করবে বলে আশা করছে সংস্থাটি। আইএমএফ মনে করছে, রাষ্ট্রীয় তহবিল বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্ধিত মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় ঋণটি ঢাকার জন্য বহুলাংশে একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও।
আইএমএফের মতে, ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ স্বল্প মেয়াদে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিকে ঠান্ডা করবে। একই সঙ্গে তাদের পরামর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেবে। যেমন- জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মধ্য মেয়াদি স্থিতিশীলতা নির্ভর করে মূল্যস্ফীতি কমানো এবং পণ্য রফতানি বৃদ্ধি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন